পেঁয়াজ রসুন সংরক্ষণে মডেল ঘর
প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৩, ১৩:১৭
পেঁয়াজ পচনশীল হওয়ার কারণে এর সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ৩০-৩৫% নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য আমদানি করতে হয়। এমতাবস্থায় পেঁয়াজ সংরক্ষণে নতুন আশার পথ দেখাতে পারে দেশীয় মডেল ঘর।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মাণ করেছে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের ঘর। যেখানে সহজেই কৃষকেরা ৩-৪ মাস পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারবেন।
কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ পদ্ধতি আধুনিকায়ন এবং বিপণন কার্যক্রম উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ জুলাই ২১ হতে জুন ২০২৬, মোট বাজেট ২৫ কোটি টাকা।
প্রতিটি মডেল ঘরে বাতাস চলাচলের জন্য ৬টি বায়ু নিষ্কাশন পাখা (Exhaustion Fan) সংযুক্ত রয়েছে। মূলত ভ্যান্টিলেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকার কারণেই সংরক্ষিত পেয়াজ-রসুন পঁচবে না। তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পরিমাপের জন্য প্রতিটি ঘরে হাইগ্রোমিটার রয়েছে।
প্রতিটি ঘরের আয়তন প্রায় ৩৭৫ বর্গফুট। প্রতিটি ঘরে ২৫০-৩০০ মণ (১০-১২ মেট্রিক টন) পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে। ৩টি স্তরের এই সংরক্ষণ ঘরের স্থায়িত্ব কমপক্ষে ১৫-২০ বছর।
ঢাকা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী,মাগুরা,ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়া,রাজশাহী,পাবনা ০৭ টি জেলার ১২টি উপজেলায় ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হবে। এবছর ২০২২-২৩ সালে মোট ৮০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ২৫০-৩০০ মণ পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ করা যাবে।
পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূরণতা অর্জন ও বাস্তবায়নে রোডম্যাপ করেছে সরকার। এতে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে, দাবী কৃষি মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২ বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১০ লাখ টন।
দুবছরে আগে যেখানে উৎপাদন হতো ২৫ লাখ টনের মতো, এখন উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ লাখ টনের মতো। বিপরীতে দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮-৩০ লাখ টন। এর ফলে দেশে পেঁয়াজ উদ্বৃত্ত থাকার কথা, আমদানির প্রয়োজন না থাকার কথা।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ৩৫ লাখ মে.টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। চলতি বছর ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। পেঁয়াজের সংগ্রহ থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌছাতে বিভিন্ন ধাপে অপচয় ২৫-৩০% বাদে গত বছর নীট উৎপাদন হয়েছে ২৪.৫৩ লাখ মে.টন।
বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় ২৮-৩০ লাখ মে.টন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে পেঁয়াজ আমদানি হয় ৬.৬৫ লাখ মে.টন।
