মিয়ানমারে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত আরো ২ জন

প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২১, ১৪:০৯

সাহস ডেস্ক

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে আরো দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১২ মার্চ) রাতে ইয়াঙ্গুনের থারকেটা জেলায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

শনিবার (১৩ মার্চ) দেশটির বিভিন্ন স্থানীয় গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

১৯৮৮ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুবার্ষিকীতে এ বিক্ষোভ বের করেন জনতা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডিভিবি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা থারকেটা পুলিশ কেন্দ্রের সামনে জমায়েত হয়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানান। সে সময় পুলিশ গুলি চালালে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হন।

ডিভিবি নিউজ জানিয়েছে, পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া লোকজনের মুক্তির দাবিতে থারকেতা পুলিশ স্টেশনে লোকজন জড়ো হলে পুলিশ বিক্ষোভের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে।

থাকেতা পৌরসভায় শনিবার ভোর হওয়ার আগেই পুলিশের অভিযানে দু'জন নিহত হয়েছে। অপরদিকে হ্লেইং পৌরসভায় একজনের মাথায় গুলি লাগে। গুলিতে আহত হওয়ার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হছে। এছাড়া আরও তিনজন আহত হয়েছে।

শুক্রবার রাতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বেশ কয়েকজন আটক হয়েছেন বা তাদের মারধর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে গুরুতর আহত এক ব্যক্তিকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী। তিনি শনিবার সকালে গুলিবিদ্ধ হন।

এদিকে, দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে এবার নতুন অভিযোগ এনেছে দেশটির সামরিক সরকার। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অবৈধভাবে ছয় লাখ ডলার এবং স্বর্ণ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। কিন্তু ভোটের ফলাফল সামনে আসার পর থেকেই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ আনে সেনাবাহিনী। এই অভিযোগ এনেই বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং সু চিসহ তার দলের কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে যে, তারা নির্বাচনে কোনো অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পায়নি। এছাড়া দেশটির নির্বাচন কমিশনও জানিয়েছে যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।

প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে সু চি বন্দি রয়েছেন। তাকে কোথায় রাখা হয়েছে সেটাও পরিষ্কার নয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক নতুন অভিযোগ আনা হচ্ছে।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মিয়ানমার। সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিক্ষোভ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিলেও পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে, এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৬০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত