আফগানদের জয়-বঞ্চিত করল বাংলাদেশ

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২১, ০৪:২২

ক্রীড়া ডেস্ক

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই এগিয়ে যায় আফগানিস্তান। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে আমির শরিফির গোলে হতাশ করে প্রথমার্ধে রক্ষণ সামলানো বাংলাদেশকে। তবে হতাশা হয়নি টাইগাররা। তপু বর্মন যেন ত্রাদা হয়ে এসেছেন। তার গোলেই জয়-বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের থেকে যেকোনো বিচারে শক্তিমত্তায় এগিয়ে থাকা আফগানিস্তান।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দোহার জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের দ্বিতীয় লেগে আফগনিস্তানের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে জামাল ভূঁইয়া-তপু বর্মনরা।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানের দুশানবেতে বাছাইপর্বের প্রথম পর্বের মতো এ ম্যাচেও ৪-২-৩-১ ফরমেশনে দল সাজিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। রাইট ব্যাক হিসেবে এ ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে ফিনল্যান্ড প্রবাসী ২০ বছর বয়সী তারিক কাজীর। তার সঙ্গে রহমত মিয়া, তপু বর্মন ও রিয়াদুল হাসান রাফিকে দিয়ে রক্ষণভাগ সাজান কোচ। জামাল ভূঁইয়ার সঙ্গে ‘ডাবল পিভট’ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন সোহেল রানা।

এদিন শুরুতেই এলোমেলো খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ দল। কিছুক্ষণের মধ্যে নিজেদের ঘুচিয়ে নিয়ে আফগানদের উপর আক্রমণ চালায় মতিন-জামালর-মাসুক মিয়ারা। আর এতে ৬ মিনিটের মধ্যেই গোলের সুযোগ পেয়েছিল টাইগাররা। জামালের থ্রু থেকে মাসুক মিয়া বক্সে ঢুকে কাট ব্যাক করলে তা আফগান ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে। এর পরে দুইবার বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন গোলকিপার আনিসুর রহমান। ১৯ মিনিটে আমির শাহিরির শট বাংলাদেশ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে পোস্টে ঢোকার মুখে দলকে রক্ষা করেন আনিসুর। ৩৩ মিনিটে বাংলাদেশ গোলকিপারের বড় পরীক্ষা নিয়েছেন আফগান অধিনায়ক ফারশাদ নূর। এ মিডফিল্ডারের বাঁ পায়ের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণভাবে রক্ষা করেন তিনি। এরপর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ভালোভাবেই রক্ষণ সামলেছেন তপু বর্মনরা। গোলশূন্য ড্রতে বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতি থেকে ফিরে এসে আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলা শুরু করে আফগানরা। এতে এগিয়েও যায় তারাতারি। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে আহমেদ নাজিমের কাট ব্যাকে বক্সের মধ্যে বাম পায়ের শটে গোলটি করেন আনমার্কড থাকা ফরোয়ার্ড আমির শরিফি।

গোল হজমের পরে পাঁচজনকে বদল করেন কোচ জেমি ডে। মাঠে নামান মানিক হোসেন, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ জুয়েল, মেহেদি হাসান ও রিমন হোসেনদের। তরুণ ফুটবলাররা আফগানদের ওপর চেপে বসে। ৫৮ মিনিটেই দুই বদলি মানিক ও আবদুল্লাহর রসায়নে এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ।

ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি মিস করেছেন আবদুল্লাহ। মানিকের লম্বা পাসে আফগান গোলকিপারকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি এই মিডফিল্ডার। বল গোলে ঠেললেও সেটি দুর্ভাগ্যবশত লেগে যায় গোলকিপারের পায়ে। তবে ৮৪ মিনিটে অবশ্য সুযোগ হাতছাড়া করেনি বাংলাদেশ।

এসময় বাংলাদেশের ত্রাদা হয়ে আসেন সেন্টারব্যাক তপু বর্মন। মানিকের লম্বা পাস হেড করে বক্সের মধ্যে রিয়াদুল হাসান নামিয়ে দিলে চকিতে ঘুরে ডান পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত শটে গোলটি করেন এ রক্ষণ-সেনা।

এ নিয়ে ৩২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে তিনটি গোল করেছেন তপু বর্মন। এমন আহামরি কিছু নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ডিফেন্ডার হিসেবে কারও তিন গোল করাটাকে ভালো বলতেই হবে। আজকের গোলটিকে তো বাংলাদেশের ফুটবলকে মনে রাখতে হবে অনেক দিন।

তপুর এই গোলে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। তপু এমন সময়ে গোল করে দলকে উদ্ধার করলেন, যখন ম্যাচের সময় বাকি ছিল মাত্র কয়েক মিনিট। গোলের মাহাত্ম্য তাতে আরও বেড়ে যায়। পরে ম্যাচের বাকি সময়ে খেলার ধার আরো বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ দল। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে এই ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত