পুষ্টিচাহিদায় লিচুর ভূমিকা অনেক বেশি

প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩, ১১:১১

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা

লিচুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। লিচুতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হজমে সহায়তা করে।  লিচু ফাইবারের ভালো উৎস হওয়ায় এই ফল হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। গ্রীষ্মের এই রসালো ফল খুব কম সময়ের জন্য আসে। স্বাদ ও গন্ধের জন্য লিচু অনেকের কাছেই প্রিয়। 

হার্ট ভালো রাখাতে সহায়ক লিচু। এতে অলিগোনল থাকে; যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরিতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে এই নাইট্রিক অক্সাইড। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে। ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সহজ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত লিচু খেলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ।

বছরের এই নির্দিষ্ট সময়ে খুব অল্প সময়ের জন্যে পাওয়া যায় এই ফল। লিচুতে ভিটামিস-সি, ক্যালসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। 

এছাড়া অন্যান্য খনিজ উপাদানগুলো হচ্ছে- আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদানগুলো যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। 

এ কারণে দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদা মেটাতে লিচু অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। তাই মৌসুমি ফলগুলো যতটা সম্ভব আমাদের জন্য খাওয়াটা খুবই উপকারি। 

লিচুর হরেকরকম উপকারিতার মধ্যে প্রধান কিছু নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- ওজন কমায়: লিচুর প্রধান উপাদান হল পানি এবং কার্বোহাইড্রেট।  এটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালোরিযুক্ত হওয়ায় এই ফলটিকে ওজন কমানোর ডায়েটে নিখুঁতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

- কোষ্টকাঠিন্য কমায়: লিচুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা মসৃণ অন্ত্রের চলাচল বজায় রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

- ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে: লিচু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হলে আমাদের প্রতিদিনের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।  

ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা অনেক দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করে এবং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: পুষ্টিবিদদেরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের পরামর্শ দেন।  যেহেতু লিচুতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে, তাই আপনার রক্তচাপ বজায় রাখার জন্য এটি আপনার তালিকায় থাকা আবশ্যক।  

- হাড় সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে: এটি আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ, যা হাড় এর সুস্বাস্থ্য রক্ষা করে।

- অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়: লিচুতে এপিকেটেচিন এবং রুটিন সহ অসংখ্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-উদ্ভিদের যৌগগুলির একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।

- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: হার্টের জন্য খুবই উপকারী লিচু। এতে রয়েছে অলিগোনল, যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করতে সাহায্য করে। এই নাইট্রিক অক্সাইড আবার রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। এতে ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে যা ভাসকুলার ফাংশন উন্নত করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

- চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি করে: লিচুতে উপস্থিত কপার চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

- ত্বকের সমস্যা দূর করে: লিচুতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বকের জন্য উপকারী এবং দাগ দূর করতে সাহায্য করে।

- কিডনির জন্য উপকারী: কিডনি ভালো রাখতে খাবারের দিকে নজর রাখা জরুরি। লিচুতে পর্যাপ্ত পানি এবং পটাসিয়াম থাকার কারণে তা কিডনিতে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এই ফল ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্বও কমায়। যে কারণে কমে কিডনির ক্ষতির ঝুঁকি।

পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা
চেম্বার: জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা, মোবাইল : 01956148383
ম্যানেজিং ডাইরেক্টর
ইজি ডায়েট বিডি, চেম্বারঃ হাউজ ৩৩৭, রোড ৫, এভিনিউ ৩
মিরপুর ডিওএইচএস, ঢাকা, মোবাইল : 01796434758

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত