গফরগাঁওয়ের ঐতিহ্য ৪০০ বছরের কালুশাহর দিঘি

প্রকাশ : ২৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০৯

রিপন গোয়ালা অভি, ময়মনসিংহ
৪০০ বছরের পুরনো কালুশাহর দিঘি। ছবি: দৈনিক সাহস

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার লংঘাইর ইউনিয়নের মাইজবাড়ী গ্রামে ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ ৪০০ বছরের বেশি পুরোনো  কালুশাহ বা কালশার দিঘি।

জানা যায়, ষোড়শ শতকে সেকান্দর শাহের ছেলে ফরিদ শাহের ছোট ভাই কালুশাহ মাইজবাড়ীতে তার বাড়ীর সামনে প্রায় চৌদ্দ একর জমি জুড়ে একটি দিঘি খনন করেন। কালুশাহের বাকি ভাই ছিলেন, ফরিদ শাহ ও মানিক শাহ। বহু অনুসারী নিয়ে তারা গফরগাঁও উপজেলার লংগাইর ইউনিয়নের মাইজ বাড়ী গ্রামে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন।

তৎকালীন সময়ে মানুষের সুপেয় পানির অভাব মেটাতে তিনি এই সুবিশাল দিঘিটি খনন করা হয়। যা কালুশাহ বা কালশা দিঘি নামে পরিচিত।
 
কালুশাহ গফরগাঁও উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের বড়বাড়ীতে ২টি দূর্গ স্থাপন করেন এবং দিল্লির সুলতানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এতে দিল্লির সুলতানের সৈন্যদের সাথে  যুদ্ধ সংগঠিত  হয়। যুদ্ধে কালুশাহ পরাস্ত হন ও তার মাথা কেটে সুলতানের সৈন্যগণ দিল্লী নিয়ে যায়। মাথাহীন দেহ পুকুরের পূর্ব পাড়ে সমাহিত করা হয়।

দিঘিটি  এখনও পূর্বাবস্থায় বহাল রয়েছে। এই দিঘীর চারপাশে রয়েছে আরো ১০ একর জমি। দিঘিটিতে রয়েছে শত বছরের কাছিম, গুইসাপসহ নানা প্রজাতির পাখি। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষকে মুগ্ধ করে। প্রতিদিন ভ্রমণ পিপাসুদের উপস্থিতি বাড়ছে।
৪০০ বছর পরেও দিঘিটি এলাকার মানুষের পানির অভাব পূরণ করে।

স্থানীয় লোকজন সরকারের কাছ থেকে  দিঘিটিকে লিজ নিয়ে মাছ চাষ তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। জেলা পরিষদের অর্থায়নে দিঘিটিতে ঘাট বাঁধানো হয়েছে।

লোক মুখে প্রচলিত এবং শতবর্ষী মুরুব্বিরা বলেন এই দিঘীতে কখনও কেউ  ডুবে মারা যায় নাই। স্থানীয় মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আবিদ হাসান বলেন, এই দিঘিটি  ইতিহাসের অংশ। অনেক ভ্রমন পিপাসু মানুষ দিঘি দেখতে আসেন । 
 
গফরগাঁও আদর্শ শিশু নিকতনের প্রধান শিক্ষক এইচ কবির টিটো বলেন, এই দিঘিটা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ এটাকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত