মাদ্রাসা সভাপতির বাড়িতে মৃতদেহ রেখে প্রতিবাদ

পঞ্চগড়ে ছেলেকে মাদ্রাসায় পিয়নের চাকরি নিয়ে দিতে মাদ্রাসার সাবেক সভাপতিকে ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন দবিরুল ইসলাম (৬০)। কিন্তু ছেলের চাকরি না হওয়ায় এবং অভাব অনটনের স্ট্রোক করে মারা যান তিনি, এমন অভিযোগ তার পরিবার ও স্থানীয়দের। মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ নিয়ে অভিযুক্ত জুলফিকার আলী বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন তারা। 

ঘটনার পর থেকে জুলফিকার আলী ও তার বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা লাপাত্তা হয়েছেন। চাকরির জন্য দেওয়া টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত সভাপতির বাড়ি থেকে মৃতদেহ সরানো হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের প্রধানপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত দবিরুল ইসলাম (৬০) ওই গ্রামের শনিবুল্লাহর ছেলে।

পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা জানান, গত ২ বছর আগে জুলফিকার প্রধানপাড়া দারুলফালা দাখিল মাদ্রাসায় সভাপতি থাকা অবস্থায় মৃত দবিরুলের ছেলে আব্দুস সবুরকে মাদ্রাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১২ লক্ষ টাকা চায়। দবিরুল জমি, গরু-ছাগল বিক্রি করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অংকের টাকা মিলিয়ে তাকে ১২ লক্ষ টাকা দেয় চাকরির জন্য। কিন্তু এর মাঝে তার সভাপতির মেয়াদ অতিক্রম হয়ে যায়। অন্যদিকে সব কিছু বিক্রির পরেও ছেলের চাকরি না হওয়ায় শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন দবিরুল। অসুস্থতার মাঝে পরিবারের চাহিদা মেটাতে না পেরে এবং চাকরির জন্য দেওয়া ১২ লক্ষ টাকা ফেরত না পেয়ে গত মঙ্গলবার স্ট্রোক করে। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে রংপুরে হাসপাতালে নিলে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে মৃত্যুবরণ করে দবিরুল। পরে মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে আসলে চাকরির জন্য দেওয়া ১২ লক্ষ টাকা ফেরতের দাবী তুলে স্থানীয়দের সহায়তায় সাবেক সভাপতির বাড়িতে মৃতদেহ রেখে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত মৃতদেহ ওই বাড়ি থেকে সরানো হবে না বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।

সাতমেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ঘটনাটির ব্যাপারে স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.