মৃত্যুই টেনে এনেছে ফায়ারকর্মী মনিরুজ্জামানকে

আট বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে কর্মজীবন শুরু করেন মো. মনিরুজ্জামান মনির (৩২)। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার সাতবাড়িয়া এলাকার শামসুল হকের ছেলে। মাত্র দুই মাস আগে তিনি চট্টগ্রামে বদলি হয়ে এসে সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে যোগদান করেন। শনিবার (৪ জুন) রাতে সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৪৩ জনের মধ্যে একজন তিনি। ভয়াবহে আগুন নির্বাপনের সময় স্টেশনের নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের মৃত্যু হয়।

রবিবার (৫ জুন) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিহত মনিরের বড় মামা মীর হোসেন ভাগিনার লাশ শনাক্ত করেন। এসময় তার কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মীর হোসেনের মুঠোফোনে কুমিল্লা থেকে ফোন আসে। ফোন ধরেই মীর হোসেন কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘মনির নেই, মনির আর নেই। সে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটে ওই ফোন বিচ্ছিন্ন করতেই মীর হোসেনকে আরও কয়েকটি ফোন ধরতে হয়। প্রতিটি ফোনে তার আহাজারি যেনো শেষ নেই। তাকে ঘিরে ধরেন সংবাদকর্মীরা। মীর হোসেন বলেন, দুদিন আগে কুমিরায় গিয়ে মনিরের সঙ্গে সারাদিন ঘুরে এক্সহেন তিনি। তার সাথে অনেক আড্ডা দিয়েছেন। সকালে ফোন করে পাচ্ছেন্ন না ভাগনেকে। তিনি বলেন, ‘মন সায় দিচ্ছে না। হাসপাতালে ছুটে এসেছি। আমি তাকে চিনতে পেরেছি। সে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। হয়তো এই মৃত্যুই তাকে চট্টগ্রামে টেনে এনেছে। আল্লাহ রে তার পরিবারের কি হবে? তার দুই মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।’ এসব কথা বলতেই তিনি আবারও কান্না শুরু করেন। সময় ঘনিয়ে আসতেই দগ্ধ রোগী আর স্বজনদের আহাজারি বাড়ছেই। হাসপাতালে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে কাজ করে যাচ্ছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যসেবীর সঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কর্মীরা।

সাহস২৪/এসটি/এসকে.