বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: হানিফ

বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রায়পুর মার্চেন্ট একাডেমি মাঠে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি ক্ষমতা নয়, জনগণ। আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই দেশে পরিবর্তন এসেছে। দরিদ্র থেকে দেশ এখন উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। দেশের সব উন্নয়নে আওয়ামী লীগ জড়িত। কিন্তু বিএনপির এটি সহ্য হচ্ছে না। তারা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। উন্নয়নবিরোধী বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এসব নিয়ে বিএনপিকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু এ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে একাত্তরের প্রেতাত্মারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ প্রেতাত্মাদের প্রতিহত করতে হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য শাহজাহান কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, আওয়ামী লীগ নেতা এম আলাউদ্দিন, সফিকুল ইসলাম, এম এ মমিন পাটওয়ারী, শামছুল ইসলাম পাটওয়ারী, রাসেল মাহমুদ মান্না ও নজরুল ইসলাম ভুলু প্রমূখ।

২০ বছর পর মঙ্গলবার (৩১ মে) রায়পুর শহরের সরকারি মাচ্চেন্টস একাডেমির মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সম্মেলন ঘিরে উজ্জীবিত রায়পুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিন বছরের জন্য নির্বাচনের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য উপজেলা কমিটি গঠন হয়েছিল। ওই কমিটিতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হোসেন (দুলাল) চৌধুরী সভাপতি এবং রায়পুর পৌরসভার সাবেক মেয়র হাজি ইসমাইল খোকন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৬৭ সদস্যের ওই কমিটির সভাপতিসহ ইতিমধ্যে ২১ নেতাই মারা গেছেন। দীর্ঘ এসময় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছিলো দলের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম। পরে উপজেলা সভাপতির দায়িত্ব প্রাপ্ত অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাজি ইসমাইল খোকন তাদের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বৈঠক ও সভা- সমাবেশ মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। ২০১৩ সালে চার বার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও দলীয় কোন্দলের কারণে শেষ পর্যন্ত সম্মেলন করা যায়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ওই সভায় জেলা কমিটির কয়েকজন সদস্য ক্ষুব্ধ হয়ে রায়পুরে আজীবন সম্মেলন না করার দাবি জানিয়েছিলেন।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর (৩১ মে) মঙ্গলবার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। দ্বিতীয় অধিবেশনে রায়পুর থানা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি পদে অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানের নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। রায়পুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ প্রার্থী ছিলেন - বর্তমান সভাপতি এবং রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ও লক্ষ্মীপুর জেলা বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুন্সি এবং সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী ছিলেন- রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হাজি ইসমাইল খোকন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজি নাজমুল কাদের গুলজার, রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট ও রায়পুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মারুফ বিন জাকারিয়া।