সিরাজগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লুট ও ভাঙচুরের মামলা

প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২১, ১৯:২১

সাহস ডেস্ক

নির্বাচনী প্রচারণায় কথা কাটাকাটির জের ধরে বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা হয়েছে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রফিকুল ইসলাম জানান, গত বুধবার (২৮ জুলাই) রাতে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন সয়দাবাদ ইউনিয়নের হাটসারটিয়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মান্নানের ছেলে বাবু।

সয়দাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম ও তার ভাই ইউপি সদস্য আব্দুল মোমিনসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে মমালার আসামি করা হয়েছে।

নথি থেকে জানা যায়, চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম গত ২৫ জুলাই রাতে দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হাটসারটিয়া গ্রামে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগাম প্রচারণা চালাতে যান।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অস্ত্রের মহড়ায় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ অবস্থায় অন্তত ১০টি বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে মারধর করা হয় চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম ও তার ভাই ইউপি সদস্য আব্দুল মোমিনের নেতৃত্বে।

এজহারে বলা হয়, বসতঘরে ঢুকে টিভি-ফ্রিজ, আলমারিসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং নগদ টাকা ও সোনার গহনা লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। যাওয়ার পথে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে যায় এবং একটি মোটসাইকেল ভাংচুর করে তারা।

ঘটনার সময় ওই দিন রাতেই ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটকরা হলেন, সয়দাবাদ ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ডিগ্রির চরের মজিবর প্রমানিক, তার ভাতিজা হাট সারটিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও মেয়ের জামাই সয়দাবাদ গ্রামের আব্দুল করিম ও ডিগ্রির চরের মাসুদ রানা।

উপজেলার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ইউনুস আলী জানান, দীর্ঘদিন যাবত হাটসারটিয়া গ্রামে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে সয়দাবাদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মোমিন। পাশাপাশি সম্প্রতি লকডাউনের মধ্যে বিকট শব্দে বক্স বাঁজিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলামের পক্ষে হাটসারটিয়া গ্রামের মোড়ে মোড়ে লোকজন জমায়েত করে প্রচারণা চালাতে থাকে তার ভাই ইউপি সদস্য মোমিন। এ সব কাজে বাধা প্রদান এবং প্রতিবাদ করলেই তার সাথে শুরু হয় শক্রতা।

ইউনুস আরও জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় হাটসারটিয়া ইউসুফ আলীর কারীর দোকানের সামনে বিকট শব্দে বক্স বাঁজাতে থাকে মোমিন। স্থানীয় লোকজন নিষেধে ক্ষিপ্ত হয়ে বক্স বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এরই জেরধরে দলবল নিয়ে গত রবিবার সকালে পুনরায় ওই এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি-ধামকি দেয় মোমিন। ওই দিন বিকেলে আবারও ওই এলাকায় অর্তকিত হামলা চালিয়ে হাটসারটিয়া গ্রামের সাদ্দাম, জহুরুল, আলী আকবর, আব্দুর রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজনকে মারপিট করে। এতে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মোমিন মেম্বর কেউ মারপিট করেছে। এরই জেরধরে রাতে ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম ও সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর প্রমানিকের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন গিয়ে অন্তত: ১০টি বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল মোমিন জানান, দীর্ঘদিন যাবত হাটসারটিয়া গ্রামে মাদক ব্যবসা করে আসছে একটি চক্র। তাতে বাধা দেয়ার কারনে বেশ কয়েকজন মিলে তাকে মারপিট করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান তিনি।

হামলা ও ভাংচুর বিষয়ে তিনি বলেন, মারপিটের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য রাতের আধারে নিজেরাই নিজেদের বসতবাড়ি ভাংচুর করে তাদের (মোমিন) উপরে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে চক্রটি।

থানা সূত্রে জানা যায়, এসময় ঘটনাস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা না হওয়ায় আটকদের ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঠানো হয় আদালতে।

তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ উঠেছে ঘটনার সময় মারপিটে আহত হয়েছেন ইউপি সদস্য আব্দুল মোমিনও। এই ঘটনায় বাদী হয়ে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে একই দিন আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী শিল্পী খাতুন।

আরও বলেন, তদন্ত চলছে উভয় মামলার। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আসামিদের বিরুদ্ধে।

সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত