আ.লীগের চিন্তা হলো স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলা: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২১, ১৪:৫৫

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে আমাদের অত্যন্ত আনন্দের দিন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে নিজেদের অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারলাম। রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের ছোঁয়া সারাদেশে পড়বে।

সোমবার (১৫ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের উদ্বোধন এবং তহবিল থেকে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং শীর্ষক স্কিমে অর্থায়নের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন তখনই হবে, দেশকে যখন চিনতে পারবে, ভালোবাসতে পারবে। চিন্তা চেতনায় বিষয়টি আসবে। দেশটি সবসময় গণতান্ত্রিক ধারায় থাকেনি। তারপরও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে নানান পদক্ষেপ নিয়েছি। আওয়ামী লীগ ছাড়া যারাই ক্ষমতায় আসছে, তাদের মাথায় ছিল অন্যের কাছে হাত পাতা। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। এটা তাদের চিন্তায় ছিল না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চিন্তা হলো স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলা। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। তবে এখানে অনেককে আমরা হারিয়েছি। সাথে সাথে এই কারোনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে। এই রিজার্ভের টাকা কিভাবে উন্নয়নে ব্যয় করতে পারি, সেটাই চিন্তা করছি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বার বার অন্যের কাছে হাত পাতা, আর ধার না করে নিজেদের অর্থ দিয়ে নিজেদের অব্কাঠোমো উন্নয়ন করা এবং যারা বিনিয়োগ করতে আসবে তাদের ঋণ নেবার বিষয়টি আমরা নিজেদের অর্থ থেকে ব্যয় করতে পারি। তাতে দেশেরও লাভ, আমাদেরও আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। আমরা যে পারি, বিশ্বের কাছে দেখাতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের ৬ মাসের আমদানির টাকাটা রাখতে হবে। দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ। যেকোনো সঙ্কটে খাদ্য ক্রয় যেন করতে পারি। ছয় মাসের টাকা রিজার্ভে রেখে বাকি টাকা বিনিয়োগ করতে পারি। এজন্য আমরা নিজস্ব তহবিল গঠন করার চিন্তা করেছি। এ থেকে বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিতে পারবে। আর অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করবো।

শেখ হাসিনা বলেন, পায়রা বন্দর আমি নিজেই করছি। মংলা বন্দর চালু করেছি। মহেশখালীর মাতারবাড়ি বন্দর তৈরি হয়ে গেছে। সেটা আরও উন্নত হবে। আমাদের একটা গভীর সমুদ্র বন্দরও করতে হবে। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের কতগুলো সুবিধা রয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটানকে বন্দরগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি। আরও অনেক দেশও ব্যবহার করতে পারবে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (বিআইডিএ) উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পাশাপাশি এই তহবিল থেকে প্রথম ঋণচুক্তিও অবলোকন করেন। বিআইডিএফ থেকে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং শীর্ষক স্কিমে অর্থায়নের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে অর্থবিভাগ, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সোনালী ব্যাংক।

এসময় বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এর আগে পায়রা বন্দরের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়। পাশাপাশি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের নানা পদক্ষেপ ও উদ্যোগ তুলে ধরেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত