বিজিবির মেজরের বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধরের অভিযোগ

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৩

সাহস ডেস্ক

পোশাক খাতের শ্রমিক অসন্তোষ দমনে সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে, এবং তাদের সাথে একই দায়িত্বে ছিলেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল ইসলাম। তবে আজ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিজিবির মেজর মারধর করেছেন বলে এমন অভিযোগ উঠেছে।

১৩ জানুয়ারি (রবিবার) সকালে আল মুসলিম পোশাক কারখানার ভেতরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল ইসলামকে বিজিবির মেজর মারধর করেছেন বলে এমন অভিযোগ ওঠে।

বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। কয়েকটি জেলায় আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদের খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও পানি সম্পদ সচিব কবীর বিন আনোয়ার বলেছেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। রহমত নামে একজন মেজরের বিরুদ্ধে রাজিবুলকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে খোলাসা হওয়া যাবে। অপরাধী যেই হোক তাঁর শাস্তি হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

মারধরে আহত ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার রাজিবুল ইসলামকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। যেই মেজরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে তাঁর নাম রহমত। তিনি বিজিবির ঢাকা সেক্টর সদর দপ্তরে কর্মরত। তবে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসিন রেজা বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।

সাভারের ইউএনও শেখ রাসেল হাসান বলেন, ‘বিজিবির একজন কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটের মধ্যে বিধিবহির্ভূত ঘটনা ঘটেছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। তাঁরা আইন সম্মত সমাধানের চেষ্টা করছেন।’

সাভারে কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানান, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাভারে আইন-শৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। আজ সকালে বিজিবির একটি দলের সঙ্গে সাভারের উলাইল এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিবুল ইসলাম। সেখানে বিজিবির দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মেজর রহমত। রাজিবুল সেখানে যাওয়ার পরে মেজর রহমত তাঁকে ‘আল মুসলিম’ পোশাক কারখানার ভেতরে একটি কক্ষে নিয়ে বসান।

রাজিবুল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে এ বিষয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছেন সেখানে তিনি লিখেছেন, আল মুসলিম কারখানার ভেতরে ওই কক্ষে মেজর রহমত তাঁর অধীনস্ত বিজিবির দুই সদস্যকে ডেকে বলেন পরিস্থিতি খারাপ হলে সরাসরি গুলি করতে হবে, পরে ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাবেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করে রাজিবুল বলেন, নিয়মানুযায়ী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়েই গুলি করতে হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মেজর রহমত চড়াও হন রাজিবুলের ওপর। তাঁকে কিল-ঘুষি লাথি মেরে আহত করেন। রাজিবুল কোনো রকমে ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে রাখা গাড়ির কাছে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত