মূল্যস্ফীতি চ্যালেঞ্জ: মুদ্রানীতি ঘোষণা ৩০ জুন
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২২, ১৭:১০
![](https://mail.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2022/06/22/image-77207.jpg)
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ডলারের বিনিময় হার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রস্তুতি চলছে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিরও। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বন্যার নতুন ক্ষত। এমন পরিস্থিতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বড় চ্যালেঞ্জ নিতে চলেছে বিশ্বব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য আগামী ৩০ জুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে তারা। বর্তমান গভর্নর ফজলে কবিরের মেয়াদের এটা শেষ মুদ্রানীতি ঘোষণা। অনলাইনের পরিবর্তে এবারের মুদ্রানীতি সরাসরি ঘোষণা করবেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে মেয়াদ আগামী ৩ জুলাই শেষ হবে ফজলে কবিরের। ইতোমধ্যে নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অর্থসচিব আব্দুর রউফ চৌধুরী। আগামী ৪ জুলাই নতুন গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দাপ্তরিক প্রয়োজনে তিনি ১২ জুলাই গভর্নর হিসেবে যোগ দেবেন। ৪ তারিখের পর থেকে গভর্নরের রুটিন কাজগুলো করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। এ বিষয়ে শিগগিরই এক সিদ্ধান্ত আসবে বলে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয় এর মধ্য দিয়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে দিয়ে রেখেছে সরকার। ব্যাংকগুলোর কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ডলারের দামও। প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। ফলে মুদ্রানীতিতে বৈচিত্র্য দেখানোর তেমন কিছুই থাকবে না।
তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ জুন পর্যন্ত ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে নিট ৪১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার। গত মে পর্যন্ত যা ছিল ৩২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এর মানে শেষ সময়ে এসে ঋণ দ্রুত হারে বাড়ছে। চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি-বেসরকারি মিলে জুন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ১৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ, এপ্রিল পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। কোভিড পরবর্তী দেশে এখন মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিভিন্ন প্রোগ্রামে বলছেন গভর্নর ফজলে কবির।
এদিকে দিন দিন বাড়ছে মার্কিন ডলারের দাম। ফলে ডলারের বিপরীতে পতন হচ্ছে টাকার মান। মঙ্গলবারও বাড়ানো হয়েছে ৫ পয়সা। আগের দিন সোমবার বাড়ানো হয়েছিল ১০ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে সবশেষ মঙ্গলবার ডলার বিক্রি করেছে ৯২ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা মেটাতে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে প্রায় ৭২২ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয় প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এতে করে ব্যাংকগুলোতে কিছুটা টাকার টানাটানি তৈরি হয়েছে।
আগামী (২০২২-২৩) অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি গিয়ে ঠেকেছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশে। যা গত ৮ বছরের মধ্যে রেকর্ড। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক ঋণে জোর দেবে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নেবে বলে লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার। এই অংক চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা আছে।
সাহস২৪.কম/এসটি/এসকে.