ঢাকা থেকে দার্জিলিং, সিকিম নিয়ে যাবে মিতালি এক্সপ্রেস

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২২, ১৪:৫০

সাহস ডেস্ক

বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা ও ভারতের জলপাইগুড়ির মধ্যকার আন্তঃদেশীয় ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’।  বুধবার (১ জুন) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি (এনজিপি) স্টেশন অর্থাৎ শিলিগুড়ি থেকে  ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে ট্রেনটি। এই ট্রেনটির মাধ্যমে বাংলাদেশি পর্যটকেরা আরও সহজে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং এবং সিকিম ভ্রমণ করতে পারবেন বলে আশার আলো দেখছেন অনেকে। বুধবার (১ জুন) ভারতের দিল্লিতে মিতালী এক্সপ্রেসের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন হবে বলে মঙ্গলবার (৩১ মে) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর আগে গত দু’বছর বন্ধ থাকার পর ২৯মে থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। 

বুধবার সকালে দিল্লিতে মিতালি এক্সপ্রেসের ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে সকাল সাড়ে ৯টার পর মোট ১৮ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি এনজিপি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে ট্রেনটি। অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এবং ভারতীয় রেলমন্ত্রী আশ্বিনি বৈষ্ণব। এ সময় দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল ফ্ল্যাগ অফ করেন দুদেশের দুই মন্ত্রী। ওই ১৮ জন যাত্রীর মধ্যে অধিকাংশই শিলিগুড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। ১০ বগীর এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে আছে ৪টি এসি বার্থ কোচ, ৪টি এসি চেয়ার কোচ এবং ব্রেকভ্যানসহ পাওয়ারকার ২টি। মোট ৪টি স্টেশনে দাঁড়াবে মিতালী এক্সপ্রেস।  

ভারতের হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশের চিলাহাটি রুট দিয়ে চলাচল করবে মিতালি এক্সপ্রেস। এর যাত্রা সময় ধরা হয়েছে ৯ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট। প্রতি সপ্তাহে দুই দিন চলাচল করবে ট্রেনটি। বাংলাদেশ থেকে ট্রেনটি ছাড়বে সোমবার ও বৃহস্পতিবার এবং ভারত থেকে ছাড়বে রবিবার ও বুধবার। ট্রেনটি চালু হলে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং এবং সিকিমে যাওয়া বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য আরও সহজ হবে। আবার সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের মানুষদেরও বাংলাদেশে যেতে সুবিধা হবে। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ জলপাইগুড়ি হয়ে দার্জিলিং ভ্রমণ করে। ট্রেনটি চালুর পর দার্জিলিং ভ্রমণ আরও স্বাচ্ছন্দ্যের ও কম খরচের হবে বলে আশা করছেন অনেকেই। 

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে রাত ৯টা ৫৯ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়), নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে। অন্যদিকে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেনটি ছেড়ে আসবে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে (ভারতীয় সময়), ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়)।

যাত্রীদের সুবিধার্থে, মিতালি এক্সপ্রেসের টিকিট বুকিং করা যাবে কলকাতার ফেয়ারলি প্লেস এবং কলকাতা স্টেশন থেকে। এছাড়া, এনজিপি টার্মিনাল থেকে মিতালী এক্সপ্রেসের টিকিট দেওয়া হবে। তবে টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রয়োজন। অবশ্য এই নিয়ম তিন ট্রেনের ক্ষেত্রেই।

মিতালি এক্সপ্রেসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি বার্থে ৫ হাজার ২৫৫ টাকা, এসি সিটে ৩ হাজার ৪২০ টাকা এবং এসি চেয়ারে ২ হাজার ৭৮০ টাকা করে।

১৯৬৫ সালের পর এ রুটে বুধবার চালু হলো মিতালী এক্সপ্রেস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের দ্রুত যোগাযোগের স্বার্থে, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।  

যাত্রীবাহী ট্রেন হিসেবে গত বছর ২৬ মার্চ, মিতালী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এরপর করোনার কারণে দুই দেশের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। তবে ফের স্বাভাবিক হতেই সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে বিমান, বাসের, পর এইদিন থেকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃদেশীয় ট্রেন চলাচল পুরোপুরি শুরু হয়ে গেল। মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা-কলকাতার মধ্যে চলাচল করে। বন্ধন চলে খুলনা-কলকাতা পথে এবং মিতালী এক্সপ্রেস চলাচল করবে নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকার মধ্যে।

সাহস২৪.কম/এআর/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত