প্রধানমন্ত্রীত্ব টিকিয়ে রাখতে পারবেন ইমরান খান?

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২২, ১৬:০১

সাহস ডেস্ক
ছবি: রয়টার্স

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ইমরান খানকে অপসারণের প্রচেষ্টা করছে দেশটির বেশ কিছু বিরোধী দল।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) পাকিস্তানের আইনপ্রণেতারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনায় বসবেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খানের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে পারে। খবর-বিবিসির।

গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকটা ঝড় বয়ে গেছে, যার ধারাবাহিকতায় ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই)'র বেশ কয়েকজন সদস্য দল ত্যাগ করেন। এর ফলে অনাস্থা ভোটের ফল বিরোধী দলের পক্ষে আসার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।

পাকিস্তানের সংসদে ৩৪২ আসনের মধ্যে ১৭২ ভোট নিয়ে বিরোধী দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্ব বাতিল হবে।

ইমরান খানের জোটের প্রধান শরিক এমকিউএম বুধবার বিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার পরই বিরোধী দল সংসদে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।

কাগজে কলমে পার্লামেন্টে বিরোধী দলের ভোট এখন ১৭৫, আর সরকারি দলের ১৬৪।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগে দুইবার দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়েছে। তবে সেই দুইবারই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীরা - ১৯৮৯ সালে বেনজীর ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে শওকত আজিজ - দায়িত্বে থেকে যেতে সক্ষম হন।

কিন্তু পাকিস্তানের বর্তমান সংসদীয় সমীকরণ বলছে এই দফায় ইমরান খান বড় ধরণের পরাজয়ের সম্মুখীন হবেন - এমনকি তার নিজের দলের ভেতরের ভিন্ন মতাবলম্বীরা ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ না করলেও।

সরকার সুপ্রিম কোর্টের একটি রুলের জন্য আবেদন করেছে, যেটি বিদ্রোহ বিরোধী আইনের অধীনে ভিন্ন মতাবলম্বীদের শুধু ভোট দেওয়া থেকেই বিরত রাখবে না, তাদের সংসদ থেকেও আজীবন নিষিদ্ধ করবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা মিত্রদের সাথে বৈঠক করছেন, আর প্রচার করছেন যে তারা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আর দুর্নীতি রোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান খান। অবশ্য সহজেই নিজের অবস্থান ছাড়ছেন না। এখনও কতটা জনপ্রিয় সাবেক এই ক্রিকেটার, তার প্রমাণ হিসেবে রবিবার ইসলামাবাদে বিশাল এক র‍্যালি আয়োজন করেন তিনি।

ইমরান খানের সমর্থকদের র‌্যালি। ছবি: রয়টার্স

ওই র‍্যালিতে ইমরান খান তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের - তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ জারদারি - দিকে ইঙ্গিত করে সমবেত মানুষের প্রতি একটি চিঠি প্রদর্শন করেন, যেটিতে 'দুর্নীতিগ্রস্ত চোর'দের সহায়তায় 'বিদেশি চক্রান্তের' মাধ্যমে তার সরকার উৎখাতের চেষ্টার প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তবে ওই চিঠিতে ঠিক কী রয়েছে, সেটি খোলাসা করেননি তিনি।

এই নাটকীয়তার মধ্যেই বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার কথা থাকলেও কোন কারণ দর্শানো ছাড়াই তা বাতিল করেন ইমরান খান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত