সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, শাহবাগের কর্মসূচি প্রত্যাহার
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৯
![](https://mail.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2021/10/18/image-73848.jpg)
শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ, মন্দিরসহ হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে পৌনে চার ঘণ্টা পর সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়ে এই অবরোধ কর্মসূচি তুলে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এতে শাহবাগে এখন যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকেরা এতে সংহতি জানান।
কয়েক শ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অবরোধ-বিক্ষোভের কারণে শাহবাগ থেকে পল্টন, সায়েন্স ল্যাব, বাংলামোটর ও টিএসসি অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা সোয়া দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়৷
অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে বেলা সোয়া দুইটার দিকে জগন্নাথ হলের ছাত্র ও হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়জিৎ দত্ত বক্তব্যে বলেন, ‘মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবিগুলোর বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানা হলে এবং এর মধ্যে দেশের কোথাও এ ধরনের হামলা-ভাঙচুর বা সহিংসতার ঘটনা ঘটলে আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবো। জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য আপাতত ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে আমরা আজকের কর্মসূচি এখানেই শেষ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমাদের সাত দফা দাবির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহল থেকে কোনো একটা আশ্বাস আসবে। কিন্তু সে রকম কোনো আশ্বাস আমরা পাইনি। ইসকন বাংলাদেশ আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে এবং তাদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা এ ব্যাপারে আশাবাদী।’
এই কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবিগুলো হলো:
১। হামলার শিকার মন্দিরগুলোর শিগগিরই প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।
২। বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৩। ধর্ষণ ও হত্যার শিকার পরিবারগুলোকে স্থায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
৪। জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বাসাবাড়িতে সাম্প্রদায়িক হামলার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
৫। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও কমিশন গঠন।
৬। হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে আধুনিকায়ন করে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করা এবং
৭। জাতীয় বাজেটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য জিডিপির ১৫ শতাংশ বরাদ্দ করা।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে এবারের দুর্গোৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে। সংঘর্ষে একাধিক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। গতকাল রবিবার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ধর্ম "অবমাননার" অভিযোগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বী ৬৫ জন হামলার শিকার হয়েছেন।
সাহস২৪.কম/এসকে.