আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা জাতিসংঘ মহাসচিবের
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:৪৬
![](https://mail.sahos24.com/templates/sahos-v2/images/sahosh.png)
![](/assets/news_photos/2021/02/26/image-68649.jpg)
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। এছাড়াও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করে মহাসচিব বলেন, আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন, আর তা হলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। সমস্যাটির সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘ সদা প্রস্তুত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে মোমেনের সাথে এক ভাচুয়াল বৈঠকে এ প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের অতীত রেকর্ডের উদাহরণ টেনে মহাসচিব গুতেরেজ বলেন, কোনো ঝুঁকি নিরসণের বৈশ্বিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ সর্বদাই শীর্ষস্থানীয়, তাই কোভিড মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের এ ধরণের সাফল্য দেখে আমি মোটেও অবাক হইনি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তার সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।
এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই সম্মত হন যে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচিত করা উচিত।
ভাষানচরে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহাসচিবকে অবহিত করেন এবং সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক সহায়তার অনুরোধ জানান। জলবায়ু কর্মসূচিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের যে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রয়েছে তার প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু-অর্থায়নকে সচল করতে মহাসচিবের আহ্বানকে স্বাগত জানান।
ক্লাইমেট ভারনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনে এবং এবছর গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ-২৬ সফল করতে জাতিসংঘের সাথে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবে মর্মে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা জীবনের যুদ্ধ বলে অভিহিত করে মহাসচিব বলেন, অভিযোজন কৌশল বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত জলবায়ু তহবিলের ৫০ ভাগ বরাদ্দ পেতে দাতাদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন তিনি। উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক অভিযোজন কর্মসূচি এবং নদী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপসমূহকে অসাধারণ হিসেবে উল্লেখ করেন গুতেরেজ।
বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরিত হতে যাচ্ছে মর্মে সন্তুষ্টির কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এক্ষেত্রে উন্নয়ন অংশীদার ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ উত্তরণ পরবর্তী সময়েও যেন নতুন সহায়তা ব্যবস্থার আওতায় সদ্য উত্তরিত দেশগুলোকে বিবেচনা করে সেজন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে মহাসচিবের দপ্তরের পূর্ণ সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উত্তরণ কেবল জিডিপির পরিমাপকৃত কোনো কারিগরি বিষয় নয়, এটি বিবেচনার ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক নাজুক সূচকসমূহেরও ব্যবহার করা যেতে পারে মর্মে মত প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
তিনি বলেন, উত্তরণ কোনো শাস্তি হতে পারেনা এটি হতে পারে পুরস্কার।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবে অংশগ্রহণ করতে মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভার্চুয়াল এ বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।