গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২২, ১২:২১

সাহস ডেস্ক

গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারকে বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া আলোচিত রায়ের একদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদকারীরা সমবেত হচ্ছেন। লস অ্যাঞ্জেলেস, আটলান্টা, ডেট্রয়েট, ওকলাহোমা সিটি, নিউইয়র্ক, জ্যাকসন, ক্যালিফোর্নিয়া ও মিসিসিপিসহ সারা দেশের বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভ হয়।

নিউইয়র্ক শহরে শত শত প্রতিবাদকারীরা মামলাটির রায়ের বিপক্ষে এবং গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে স্লোগান দেয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভকারী কয়েকশ’ নারী ‘আমার শরীর, আমার পছন্দ’ এবং ‘আদালত বাতিল করুন’ ইত্যাদি স্লোগান- দিতে দিতে সারা শহরে মিছিল করে।

একদিকে যেমন নারীরা গর্ভপাতের অধিকার আদায়ের দাবি জানাচ্ছেন, অন্যদিকে গর্ভপাত বিরোধীরা এই আইন নিষিদ্ধকরণকে বাস্তবায়ণে নানা পদক্ষেপের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করছে।

কঠোর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির কারণে শনিবার (২৫ জুন) অনেকগুলো গর্ভপাত ক্লিনিক তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। মিসিসিপির প্ল্যানড প্যারেন্টহুড সাউথইস্টের ডিরেক্টর টাইলার হার্ডেন বলেন, তিনি শুক্র ও শনিবার রাজ্যের একমাত্র গর্ভপাত ক্লিনিকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া লোকদের সঙ্গে কথা বলে স্বান্ত্বনা দিয়ে কাটিয়েছেন।

মিসিসিপিতে নারীর জীবন বিপন্নকারী গর্ভধারণ ও ধর্ষণের কারণে হওয়া গর্ভধারণ ছাড়া সব ধরনের গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হবে।

মিসিসিপি হাউসের রিপাবলিকান স্পিকার ফিলিপ গান শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি গর্ভপাতের বিরোধিতা করন। গান আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি গর্ভধারণের সময় থেকেই জীবন শুরু হয়।’ ইতোমধ্যে আলাবামা রাজ্যে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আটলান্টায় ন্যাশনাল রাইট টু লাইফ কনভেনশনে গর্ভপাত বিরোধী গোষ্ঠীর একজন নেতা শনিবার উপস্থিতদের সতর্ক করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত একইসঙ্গে ‘মহা সম্ভাবনার সময় ও বড় বিপদের সময়’-এর সূচনা করেছে।

ওকলাহোমা সিটিতে বিক্ষোভকারীদের উপস্থিতি কম ছিল। সেখানে প্রায় ১৫ জন বিক্ষোভকারী ক্যাপিটলের বাইরে সমাবেশ করে। ওকলাহোমা হল ১১টি রাজ্যের মধ্যে একটি, যেখানে গর্ভপাতের পক্ষে কোনো প্রস্তাবকারী নেই। গত মে মাসে এখানে দেশের কঠোরতম গর্ভপাত আইন পাস হয়।

অ্যাক্টোপিক গর্ভাবস্থার জন্য দুটি গর্ভপাত করা মেরি অ্যাডামস নামের ৪৫ বছর বয়সী এক নারী বলেন,‘আমি গত ২৪ ঘন্টায় যে মানসিক অবস্থার মধ্যে আছি, তা বোঝাতে পারব না, এটা বিরক্তিকর ও অসহ্য। আমি এই মুহূর্তে যা অনুভব করছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’ তিনি এই বিষয়টিকে ‘নারীর একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেছেন। অ্যাডামস বলেন,‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক জনসংখ্যা তাদের একটি মৌলিক অধিকার হারিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন,‘আমাদের কথা বলতে হবে এবং জোরে কথা বলতে হবে।’

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত