জেরুজালেমের মুসলিম এলাকায় ইহুদিদের মিছিলের অনুমতি, সহিংসতার আশঙ্কা

প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২১, ২৩:১৫

সাহস ডেস্ক

জেরুজালেমের পুরনো শহরে আগামী সপ্তাহে কট্টর ইহুদিবাদী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রমের সমর্থকদের মিছিলের অনুমতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার। ইতিমধ্যে হামাস এই কর্মসূচিকে ঘিরে নতুন করে সহিংসতা শুরুর আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে। আশঙ্কার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশও। খবর রয়টার্সের।

এই মিছিল হবার কথা ছিল আগামীকাল বৃহস্পতিবার। কিন্তু শহরের মুসলিম এলাকা দিয়ে এই মিছিল নেয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে ইসরায়েলি পুলিশ মিছিলের প্রস্তাবিত রুট প্রত্যাখ্যান করায় উদ্যোক্তারা মিছিলের আয়োজন বাতিল করে দেয়। খবর বিবিসির।

ফিলিস্তিনিরা এই মিছিলকে উস্কানিমূলক বলে মনে করছে। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে এই মিছিলের অনুমতি দেয়া হলে গাযায় আবার নতুন দফা সংঘাত শুরু হতে পারে।

গত মাসে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে এগারো দিনের রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে গাযায় প্রাণ হারিয়েছিল অন্তত ২৫৬জন মানুষ এবং ইসরায়েলে মারা যায় ১৩জন।

ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা উত্তেজনার পটভূমিতে পূর্ব জেরুজেলেমে পুরনো শহরের যে স্থানটি মুসলিম ও ইহুদী দুই সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য পবিত্র - সেখানে এই উত্তেজনা চরম সহিংসতায় রূপ নেয় ১০ই মে তারিখেই। সেদিনই ওই মিছিল যাবার কথা ছিল পুরোন শহরের মুসলিম পাড়া দিয়ে। শেষ মুহূর্তে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মিছিলের পথ ঘুরিয়ে দেয় এবং তা শেষ পর্যন্ত বাতিল করা হয়।

হামাস পবিত্র স্থান থেকে ইসরায়েলকে সরে যাবার হুঁশিয়ারি দেবার পর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ শুরু করে। ইসরায়েল প্রত্যুত্তরে গাযা লক্ষ্য করে পাল্টা বিমান হামলা চালায়।

গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ১৫ জুন এই পতাকা মিছিল করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তবে "এই মিছিল কীভাবে হবে সেটা মিছিলের উদ্যোক্তারা পুলিশের সাথে কথা বলে ঠিক করবেন"।

ইসরায়েলি সংসদ ক্নেসেট রবিবার দেশটির নতুন সরকার নির্বাচনে ভোট দেবে। নতুন জোট সংসদের অনুমোদন পেলে ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর মি. নেতানিয়াহুকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। মি. নেতানিয়াহু ইসরায়েলে সবচেয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী।

ইসরায়েলে রবিবার যদি দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী নাফতালি বেনেট ও মধ্যপন্থী ইয়াইর লাপিডের নেতৃত্বাধীন জোট যদি নতুন সরকার গঠন করার অনুমোদন পায়, তাহলে এই পতাকা মিছিল হবে কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারাই নেবে। গত দুই বছর এই মিছিল হয়নি।

বার্ষিক জেরুজেলেম দিবসের পতাকা মিছিল সাধারণত অনুষ্ঠিত হয় ১০ই মে তারিখে এবং ১৯৬৭ সালে মধ্য প্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েলের পূর্ব জেরুজেলেম দখলের বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই দিবসটি পালিত হয়।

পূর্ব জেরুজেলেম পুরোন শহরের অংশ এবং স্থানটি মুসলিম এবং ইহুদি দুই ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র। এখানেই রয়েছে মুসলিমদের কাছে পবিত্র হারাম আল-শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট হিসাবে পরিচিত পবিত্র স্থান।

দশই মে তারিখে শত শত ইসরায়েলি জাতীয়তাবাদী তরুণ পতাকা হাতে নিয়ে শহরের দামেস্ক গেইটের মধ্যে দিয়ে শহরের মুসলিম পাড়ার মধ্যে মিছিল নিয়ে যায়। তারা এই মিছিল থেকে দেশাত্মবোধক গান করে ও স্লোগান দেয়। খবর বিবিসির।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত