করোনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক বিউবোনিক প্লেগ

প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২০, ১৭:১৭

সাহস ডেস্ক

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখেরও বেশি মানুষ। এর প্রকোপ শেষ না হতেই গত সপ্তাহে শূকরের শরীরে ফ্লু ভাইরাস পাওয়ার কথা জানায় চীন। এটিও মানুষের মধ্যে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। এরই মধ্যে আবার নতুন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিচ্ছে বিউবোনিক প্লেগ।

চীনের স্বায়ত্তশাসিত মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে এই ‘বিউবোনিক প্লেগে’ আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরের (১৫) মৃত্যু হয়েছে। মারমোটের (ইঁদুরজাতীয় প্রাণী) মাংস খাওয়ার পর এতে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) দেশটির জাতীয় জুনোটিক ডিজিজ সেন্টার জানায়, ওই কিশোর পশ্চিম মঙ্গোলিয়া প্রদেশের গোভি-আলতাইয়ে বসবাস করতো। মৃত্যুর আগে তার সঙ্গে দেখা করেছে এমন প্রায় ১২ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বিউবোনিক প্লেগের সংক্রমণ রোধে মঙ্গোলিয়ার ৫টি জেলা লকডাউন করে রাখা হয়েছে।

মঙ্গোলিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, প্লেগ রোগের তিনটি ধরনের মধ্যে অন্যতম বিউবোনিক প্লেগ। ব্যাকটেরিয়াজনিত এই অসুখ ইঁদুরজাতীয় প্রাণীদের শরীরে থাকা পোকা বা আশপাশে বসবাসকারী মাছির মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। যথাযথ চিকিৎসা না পেলে আক্রান্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাপ্তবয়স্ক একজনকে মেরে ফেলতে পারে বিউবোনিক প্লেগ।

গত ১ জুলাই চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছিল, দেশটির পশ্চিম মঙ্গোলিয়ার খোভদ প্রদেশে দুজন বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়। তাদের একজনের বয়স ২৭ আরেকজনের ১৭। তারা দুই দুজনেই মারমোটের মাংস খেয়েছিলেন।

প্লেগ প্রতিরোধে তৃতীয় মাত্রার সতর্কতা জারি করেছে মঙ্গোলিয়া কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ইঁদুরজাতীয় প্রাণীসহ বিউবোনিক প্লেগ বহনকারী প্রাণী শিকার ও এগুলোর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ চায়না ডেইলিকে বলে, বর্তমানে শহরে বিউবোনিক প্লেগ মহামারি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জনগণকে তাদের নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে।

মঙ্গোলিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বিউবোনিক প্লেগের বিস্তার চীনের আলতাই অঞ্চল ও রাশিয়ার জন্য উদ্বেগের বিষয়। তবে তারা এর সংক্রমণ রোধে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।

গত বছরের এপ্রিলে মঙ্গোলিয়ায় বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। তারা মারমোটের কাঁচা মাংস খাওয়ার মাধ্যমে এতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

চতুর্দশ শতাব্দীতে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারি হিসেবে পরিচিত এ রোগে আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ মারা যায়। ১৬৬৫ সালে লন্ডনে ‘গ্রেট প্লেগ’-এর প্রকোপ এতই ভয়াবহ ছিল যে, সেই সময় শহরটির প্রায় পঞ্চমাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। উনিশ শতকে চীন ও ভারতে প্লেগের প্রাদুর্ভাবে প্রায় এক কোটি ২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

সূত্র: শিনহুয়া

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত