ভারতকে নিষিদ্ধ করল ফিফা

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০২২, ১৪:৩০ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২২, ১৪:৩৭

অনলাইন ডেস্ক

সর্বভারত ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। ‘তৃতীয় পক্ষের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে’ ভারত ফুটবল ফেডারেশনকে নিষিদ্ধ করল ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সোমবার (১৫ আগস্ট) ওয়েবসাইটে এক বিবৃতির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় ফিফা। যদিও সতর্কবার্তা আগেই দিয়েছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’। গত জুনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছিল, ফুটবল ফেডারেশনে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ভারতকে নিষিদ্ধ করতে পারে ফিফা। সেটাই সত্যি হলো।

অক্টোবরে ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। আগামী ১১ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) নিষিদ্ধ হওয়ার মধ্যে টুর্নামেন্টটি ভারতে হবে কি না, তা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল।

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ভারত ফেডারেশনের সভাপতি পদ আঁকড়ে ছিলেন প্রফুল্ল প্যাটেল। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হলে চলতি বছরের মে মাসে কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। এরপর ফেডারেশনের দায়িত্ব পায় তিন সদস্যের কমিটি (সিওএ)। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের কথাও বলা হয়। কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত ক্রীড়া সংস্থায় তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ফিফার আইন বিরুদ্ধ। তাই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যতদিন না সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে, ততদিন এই নিষেদ্ধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

বিবৃতিতে ফিফা জানিয়েছে, এ ধরনের হস্তক্ষেপ ‘ফিফার আইন মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে’। এআইএফএফ নিজেদের প্রাত্যহিক কাজে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি প্রফুল প্যাটেলের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়া এবং এর পরের নির্বাচন নিয়েই যত ঝামেলা। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও নতুন নির্বাচন না দিয়ে তিনি অফিস চালিয়ে যাচ্ছেন, যা আইনের পরিপন্থী হিসেবে রায় দিয়েছেন আদালত।

ফিফার বিবৃতিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে ‘যখন প্রশাসক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হবে এবং এআইএফএফের নির্বাহী কমিটির ক্ষমতা নিয়ে নেয়া হবে এবং এআইএফএফের প্রশাসকেরা বোর্ডের প্রাত্যহিক কাজে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাবেন’। গত মে মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এআইএফএফে প্রশাসকদের একটি কমিটি (সিওএ) ঠিক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের মাসে এ কমিটি পরামর্শক হিসেবে আরেকটি কমিটি বাছাই করে। কিন্তু ফিফার শক্ত আপত্তিতে সেই কমিটি ভেঙে যায়।

এ নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন ভারতের কোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্টকে স্বীকৃতি দেবে না এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) ও ফিফা। জাতীয় দল কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলার সুযোগ পাবে না। অর্থাৎ এএফসি নারী ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার জন্য উজবেকিস্তানে যাওয়া গোকুলাম কেরালা নারী দল এখন আর এ টুর্নামেন্টে খেলতে পারবে না। আগামী ১১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু নিষিদ্ধ হওয়ায় ভারতে এখন আর এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে না এবং এই টুর্নামেন্টে ভারতের দলও অংশ নিতে পারবে না।

ফিফার বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং এখনো ইতিবাচক ফল পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী’। ফুটবল ফেডারেশনে সরকারের হস্তক্ষেপ ফিফা কখনোই মেনে নেয় না, সাম্প্রতিক সময়ে কুয়েত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো এশিয়ান দেশগুলোকে ফেডারেশনে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেতে হয়েছে। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, ফেডারেশনের সদস্যদের নিজ নিজ দেশে অবশ্যই আইনিভাবে পরিচ্ছন্ন এবং কোনো রাজনৈতিক সংযোগ থাকা চলবে না।