সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে

লজ্জায় বাংলাদেশ, ১ ম্যাচ থাকতেই সিরিজ জিম্বাবুয়ের

প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২২, ২২:০৩

সাহস ডেস্ক

শেষ ষোল বলে দরকার মাত্র ৪ রান। আফিফ হোসেনের তৃতীয় বলটি স্লগ সুইপে সে চারটি মারেন টনি মুনিয়োঙ্গা। সঙ্গে সঙ্গে মেতে ওঠে হারারে মাঠ। অভিষেক ম্যাচে নেমে চার মেরে দলকে জেতালেন তিনি। মূলত, দলের জয়ে অবদান সিকান্দার রাজা ও অধিনায়ক রেজিস চাকাভার জোড়া সেঞ্চুরি। তাদের সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশকে লজ্জায় ফেলে সিরিজ জিতে গেল জিম্বাবুয়ে। সময়টা একেবারেই ভাল যাচ্ছে না বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফরম্যাট বদলালেও ভাগ্যের বদল ঘটাতে পারল না লাল-সবুজের দল। রবিবার (৭ আগস্ট) হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়ে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল জিম্বাবুয়ে। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।

টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক রেজিস চাকাভা। এ নিয়ে সফরে টানা ৫ ম্যাচেই টস জিতল স্বগতিকরা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে ২৯১ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তাদের বিপক্ষে প্রথমেই আঘাত করেন হাসান মাহমুদ। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই উইকেটের দেখা পান এক বছরেরও বেশি সময় পর ওয়ানডেতে ফেরা হাসান মাহমুদ। ওভার দ্য উইকেট থেকে তার করা বলটা লাইন ধরে রেখেছিল, তাতে ক্রিজে আটকে ছিলেন তাকুদজোয়ানাশে কাইতানো। আউটসাইড-এজড হয়েছেন তিনি, উইকেটের পেছনে ডানদিকে ঝুঁকে ক্যাচ নিতে ভুল করেননি মুশফিকুর রহিম। জিম্বাবুয়ে প্রথম উইকেট হারিয়েছে ১ রানে।

দলের তৃতীয় ওভারে এসে আবারও উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। ওভারের পঞ্চম বলটা সামান্য নিচু হয়েছিল, তবে সে বলে খোঁচা দিয়েছেন ইননোসেন্ট কাইয়া। মুশফিক আবারও ডানদিকে ঝুঁকে ক্যাচ নেন। ঠিক ১ বল আগে স্কয়ার লেগ দিয়ে একটি চার মেরেছিলেন কাইয়া। তবে হাসান প্রতিশোধ নিতে দেরি করলেন না। ফেরার আগে মাত্র ৭ রান করেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ইননোসেন্ট কাইয়া।

এরপর মিরাজের আঘাত। তবে এলবিডব্লুর আবেদনে সফল বাংলাদেশ। দলিয় ৮ ওভারের শেষ বলে মিরাজকে সুইপ করতে গিয়ে মিস করেন মাধেভেরে। ইনিংসে তৃতীয়বারের মতো জোরাল আবেদনে আউট দিলেন আম্পায়ার। এর আগের বলেও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে মিস করেছিলেন মাধেভেরে। আবেদন করলেও কোনো সাড়া দেননি আম্পায়ার। এবার জোরাল আবেদনে সফল বাংলাদেশ। ২৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে আরও একবার পিছিয়ে পড়ল জিম্বাবুয়ে। পরে পাওয়ারপ্লের ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৩০ রান। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছিল ৬২ রান।

এরপর তাইজুলের আঘাত। ১৫তম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এলেন তাইজুল। এসেই পেলেন উইকেটের দেখা। তাকে ব্যাকফুটে গিয়ে লেগসাইডে খেলার চেষ্টা করেছিলেন মারুমানি, তবে হয়েছেন লিডিং এজড। কাভারে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন মিরাজ। ফেরার আগে ৪২ বলে ৩ চারে ২৫ রান করেন মারুমানি। সিকান্দার রাজা ও ইননোসেন্ট কাইয়া-দুই ডানহাতির রেকর্ড ১৯২ রানের জুটিতে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ছিটকে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। সে ম্যাচে বাংলাদেশ ইনিংসে বোলিং করেছিলেন তিন জন স্পিনার, সবাই ছিলেন অফ স্পিনার। একজন বাঁহাতি স্পিনারের অভাব বাংলাদেশ টের পেয়েছিল ভালোভাবেই। তবে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাঁহাতি তাইজুল এসেই দেখালেন তার ভেলকি। নিজের খেলা সর্বশেষ ম্যাচে তাইজুল নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

নাটকের পর বাঁচলেন রাজা! উঠেছিল ক্যাচ। সেটির নাগাল পাননি শরীফুল। তবে এর মাঝেই ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেল রাজা ও চাকাভার। ফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন রাজা, ততক্ষণে নন-স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে ক্রিজের অনেকটাই পেরিয়ে গেছেন চাকাভা! শেষ পর্যন্ত সিঙ্গেলের জন্য দৌড় দিলেন রাজা, শরীফুলের থ্রো-টা খুব ভালো না হলেও ধরে স্টাম্প ভাঙলেন মিরাজ। কিন্তু রিপ্লেতে প্রথমে ঠিক কোন মুহুর্তে বেলস স্টাম্পের গর্ত থেকে উঠেছে, সেটা দেখা হয়েছে-সে সময় ক্রিজের বাইরেই ছিলেন রাজা। ‘অগণিত’ রিপ্লে দেখার পর টিভি আম্পায়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যে হাত দিয়ে মিরাজ স্টাম্প ভেঙেছেন, বল ছিল তার বিপরীত হাতে। শেষ পর্যন্ত রাজাকে দেওয়া হয়েছে নটআউট। প্রথম ম্যাচে ৪৩ রানে ক্যাচ তুলে বেঁচে গিয়েছিলেন রাজা। এবার ৪২ রানে দাঁড়িয়ে বাঁচলেন রানআউটের হাত থেকে। এরপরই মিরাজকে ইনসাইড আউটে ছয় মেরে ফিফটি পূর্ণ করলেন রাজা। ফিফটি করতে ৬৭ বল খেলেন তিনি। পরে তাসকিনের করা ৩০তম ওভারে ১৮ রান নিয়েছেন চাকাভা। প্রথম চার বলে চাকাভার স্কোরিং শট। চার, চার, চার, চার। এর মধ্যে তৃতীয় চারটি দিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন চাকাভা। চাকাভার সঙ্গে রাজার জুটি দাঁড়ায় ১০০ রানে।

এরপর রাজার সঙ্গে ১২৫ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন চাকাভা। বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেট জুটিতে জিম্বাবুয়ের এটি সর্বোচ্চ এখন। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল স্টুয়ার্ট কার্লাইল ও গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের। ২০০১ সালে বুলাওয়েতে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠেছিল ১২১ রান, সেবার আগে ব্যাটিং করেছিল জিম্বাবুয়ে। পরে রাজা-চাকাভা আরেকটি রেকর্ড গড়েন। ৩৯তম ওভার শেষে রাজা ও চাকাভার জুটি অবিচ্ছিন্ন ১৬৫ রানে। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোনো দলেরই পঞ্চম উইকেট এটি সর্বোচ্চ এখন। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেলের। গত বছর ওয়েলিংটনে তারা যোগ করেছিলেন ১৫৯ রান।

পরে সিকান্দার রাজার শতক। হাসান মাহমুদের ফুললেংথের বলে ফ্লিক করে ডাবলস নিয়ে ওয়ানডেতে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে ফেললেন রাজা। সঙ্গে সঙ্গে হারারে গর্জন করে উঠল আরেকবার। দর্শকদের অভিবাদনের জবাব জানাতেই বেশ খানিকটা সময় লাগল রাজার। এরপর দিলেন সেজদা। সব মিলিয়ে এটা রাজার পঞ্চম শতক। তার পরে চাকাভার শতক। হাসানকে ছয় মেরে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পূর্ণ করলেন জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রেজিস চাকাভা, সেটিও মাত্র ৭২ বলে। এরপরই ফিরলেন তিনি। মিরাজকে তুলে মারতে গিয়ে টপ-এজড হলেন চাকাভা। ফেরার আগে ৭৫ বলে ১০ চার ২ ছক্কায় ১০২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন চাকাভা। চাকাভার আউটে ভাঙল ২০১ রানের রেকর্ড জুটি। ওয়ানডেতে যে কোনো উইকেটেই জিম্বাবুয়ের এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। এরপর নামেন অভিষিক্ত টনি মুনিয়োঙ্গা। তাকে নিয়ে জয়ের দিকে এগিয়ে যান রাজা। পরে ৪৮তম ওভারে আফিফ হোসেনের তৃতীয় বলটি স্লগ সুইপে চার মারেন মুনিয়োঙ্গা। সঙ্গে সঙ্গে মেতে ওঠে হারারের মাঠ। অভিষেকে দাঁড়িয়ে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন টনি মুনিয়োঙ্গা। শেষ পর্যন্ত দুজনেই থাকেন অপরাজিত। ১৬ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ৩০ রান করেন মুনিয়োঙ্গা আর ১২৭ বলে ৮ চার ৪ ছক্কয় ১১৭ রান করে অপরাজিত থাকেন সিকান্দার রাজা। বাংলাদেশের বিপক্ষে রাজার সর্বশেষ ৬ ইনিংস এখন এমন-১১৭*, ১৩৫*, ০, ৬২, ৬৫*!

বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ ২টি করে এবং তাইজুল ইসলাম ১টি উইকেট নেন।

এদিন টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করে বাংলাদেশ। এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ওপেনে নামেন তামিম ইকবাল। প্রথম ২ ওভারের ১২টি বলই খেলেছেন তামিম। এ ম্যাচে অভিষেক হওয়া ব্র্যাডলি এভান্সের করা প্রথম ওভারে দুটি চার ও দ্বিতীয় ওভারে ভিক্টর নিয়াউচির বলে একটি চার মেরেছেন বাঁহাতি ওপেনার। ইতিবাচকই শুরু করলেন তামিম। ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ যখন তুলেছে ৪০ রান, তখন তামিম ২৮ বলে ৩৩ রান নিয়ে ব্যাট করছিল। এরপর ১১তম ওভারে এসে ফিফটি করলেন তামিম। ওই ওভারে তানাকা চিভাঙ্গার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে দারুণ এক ড্রাইভে চার মেরে অর্ধশতক তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অর্ধশতক করেছেন তামিম ৪৩ বলে। আগের ম্যাচে ৪৮ রানে দাঁড়িয়ে তামিম খেলেছিলেন ৯টি ডট বল। এবার ৪৬ রান থেকে চার মেরে পৌঁছে গেলেন অর্ধশতকে। ক্যারিয়ারে এটি তার ৫৫তম ফিফটি। সর্বশেষ ৬ ইনিংসে চতুর্থ। এর দুই বল পরই তামিম আউট। ওই ওভারের শেষ বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে থাকা তাকুদজোয়ানাশে কাইতানোর হাতে ক্যাচ উঠিয়ে দেন। ফেরার আগে ৪৫ বলে ১০ চার ১ ছক্কায় ৫০ রান করেন তামিম ইকবাল। বাংলাদশ প্রথম উইকেট হারায় ৭১ রানে।

দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের! দুর্ভাগ্য এনামুল হক বিজয়ের! ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে জিম্বাবুয়ের পেসার তানাকা চিভাঙ্গাকে স্ট্রেট ড্রাইভ খেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বল চিভাঙ্গার হাত ছুয়ে নন স্ট্রাইকের স্টাম্প ভেঙে দেয়। ওই প্রান্তের ব্যাটসম্যান এনামুল ততক্ষণে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান। রান আউট! ফেরার আগে ২৫ বলে ২০ রান করেন এনামুল। বাংলাদেশ ১২.২ ওভারে ৭৭ রানে ২ উইকেট হারায়। পরে উইকেটে দুই নতুন ব্যাটসম্যান। ৬ বলে ৫ রান করা নাজমুল ও মুশফিকুর রহিম। এরপর ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের ২ উইকেটে ৮৭ রান। ওভারপ্রতি গড়ে ৫.৮ করে রান তোলে বাংলাদেশ। পরে ১৮তম ওভারে সিকান্দার রাজাকে স্কয়ার লেগে ঠেলে ১ রান নিয়ে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ১০০ পূর্ণ করেন মুশফিকুর রহিম। ১৮তম ওভার শেষে ২ উইকেটে ১০৪ রান বাংলাদেশের।

এরপর মুশফিক ও শান্তর ফিফটি জুটি। ৬ রানের ব্যবধানে ফিরেছিলেন তামিম ও এনামুল। এরপর বাংলাদেশ এগোচ্ছে মুশফিক ও নাজমুলের জুটিতে। ৬৩ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ের দুজনে। ২৩ ওভার শেষে ২ উইকেটে ১২৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারেই আউট মুশফিক। ২৪তম ওভারের প্রথম বলটি ঝুলিয়ে দেন মাধেভেরে। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে থাকা মুনিয়োঙ্গার হাতে ধরা পড়েন মুশফিক। ফেরার আগে ৩১ বলে মাত্র ১টি চারে ২৫ রান করেন তিনি। আগের ম্যাচে ফিফটি করেছিলেন তবে এবার থামলেন আগেভাগেই। ৫০ রানেই থেমেছে নাজমুলের সঙ্গে মুশফিকের জুটি।

পরে ফিরলেন নাজমুলও। বেশ খানিকটা সময় ধরেই নড়বড়ে মনে হচ্ছিল নাজমুলকে। মাধেভেরের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ধরা খেলেন তিনি। ৩০তম ওভারের তৃতীয় বলটি শরীরের বেশ কাছে ছিল, সেটিতেই কাটের মতো শট খেলতে গিয়ে কিপারের হাতে ধরা পড়েন নাজমুল। ফেরার আগে ৫৫ বলে ৫ চারে ৩৮ রান করেন তিনি। গত ১২ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে এটিই তার সর্বোচ্চ স্কোর। নাজমুল ফেরার পর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন আফিফ হোসেন। ৩০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের রান ১৫১।

এরপর দেখেশুনে এগোতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ-আফিফ। বাংলাদেশ পেয়ে গেল তৃতীয় ফিফটি জুটির দেখা। তামিম-এনামুল। মুশফিক-নাজমুল। এরপর মাহমুদউল্লাহ-আফিফ। সর্বশেষ অর্ধশতরানের জুটিটি আসে ৫৬ বলে। পরে ফেরেন আফিফ। ৪৪তম ওভারে সিকান্দার রাজার প্রথম বলে রিভার্স সুইপের মতো করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানের হাতে তুলে দেন আফিফ। ফেরার আগে ৪১ বলে ৪১ রান করেন তিনি। ১০০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ৪টি চার মেরেছেন আফিফ, তাও টানা ২ ওভারের মধ্যে। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে আফিফের জুটিতে আসে ৮২ বলে ৮১ রান।

এরপর এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন মিরাজ। ৪৬তম ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লু হন তিনি। যদিও সিকান্দার রাজা বলটি লেংথে দেননি, কিন্তু লেংথ ভুল করে এলবিডব্লু হন মিরাজ। ফেরার আগে ১২ বলে ২ চারে ১৫ রান করেন। ৪ ওভার বাকি থাকতে ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের ২৪৯ রান। এরপরেই মাহমুদউল্লাহর ফিফটি। চিভাঙ্গার হাই ফুলটসে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ, তবে সেটি ছিল পরিষ্কার নো। ওই সময় ডাবল রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। ফিফটিটি করেছেন ৬৯ বলে। এরপর চোটের কারণে মাঠে আবারও ঢুকল স্ট্রেচার। নিজের নবম ওভার করার সময় চোটে পড়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন তানাকা চিভাঙ্গা। প্রথম ম্যাচে এ দৃশ্য দেখা গেছে দুবার। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছেড়েছিলেন লিটন দাস ও শরীফুল ইসলাম।

এরপর তাসকিন আহমেদকে ফিরিয়ে তৃতীয় উইকেটের দেখা পান সিকান্দার রাজা। ম্যাচের ৪৮তম ওভারেও বলে আসেন রাজা। তাসকিনকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন রাজা। এরপর শেষ ওভারের চতুর্থ বলে এসে স্ট্রাইক পান মাহমুদউল্লাহ। নিয়াউচির স্লোয়ার চতুর্থ বলটিতে ছক্কা মারেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ পঞ্চম বলটি মিস করার পর, শেষ বলে রানআউট হন শরীফুল। এই ওভারের প্রথম তিন বলে তাইজুল ইসলাম ফেরার পর শরীফুল ২ বলে নিতে পারেন একটি সিঙ্গেল। ফলে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রানে থামে বাংলাদেশ। ৮৪ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ৮০ রানে অপরাজিত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

জিম্বাবুয়ের হয়ে সিকান্দার রাজা ৩টি, মাধেভেরে ২টি এবং নিয়াউচি ও তানাকা চিভাঙ্গা ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন সিকান্দার রাজা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত