দ. আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের ৩১৪ রান

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২২, ২১:৩৭

ছবি: সংগৃহীত

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ৩১৪ রান করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৮ মার্চ) দক্ষিণ আফ্রিকার সুপার স্পোর্টস পার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিং পায় বাংলাদেশ।

ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে তামিম ইকবালের দল।

এদিন ওপেনিং জুটিতে আসে ৯৫ রানের বড় একটা স্কোর। প্রথম পাওয়ারপ্লে-তে করেন ৩৩ রান। প্রথম ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ৪ উইকেট হারিয়ে সর্বনিম্ন ২৯ রান উঠেছিল। এরপর ৯৫ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ফিকোয়ার বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু হন তামিম। রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি, তবে তার রিভিউ টেকেনি। অবশেষে ৬৭ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৪১ রান করেন ফেরেন অধিনায়ক।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আজ একটি রেকর্ড উদ্বোধনী জুটি গড়েছে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। এর আগে ২০০৮ সালে বেনোনিতে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের জুটি ছিল বাংলাদেশের। সেদিন তামিমমের সঙ্গে ছিলেন ইমরুল কায়েস। আজ লিটনকে সঙ্গে নিয়ে সে রেকর্ড ভাঙলেন তামিম। যদিও ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৫৪ রানের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি ছিল। সেদিন তামিমের সঙ্গে ছিলেন সৌম্য সরকার।

এরপর নামেন সাকিব আল হাসান
পরিসংখ্যান বলছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বশেষ ২৫ ইনিংসে মাত্র একটি অর্ধশতক করেছেন সাকিব। সর্বশেষ গত বছরের জুলাইয়ে ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অর্ধশতক করেছিলেন তিনি। এরপর তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই বেশ কিছু ইনিংসে ভালো শুরু পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। শতক তো নয়ই, অর্ধশতকও পাননি।

এদিকে অর্ধশতক করে আউট লিটন দাস
মহারাজের বেশ নিচু বল জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে নাগাল পাননি লিটন, হারালেন স্টাম্প। ঠিক আগের বলেই অর্ধশত পূর্ণ করে রেকর্ড গড়রেন লিটন। এ নিয়ে টানা তিনবার ৫০ বা এর বেশি রান করলেন লিটন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে করেছিলেন ১৩৬ ও ৮৬ রান। আজ অবশ্য ইনিংসটা বড় করতে পারলেন না অর্ধশত পূর্ণ করার পর। আজ ফেরার আগে ৬৭ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৫০ রান করেন লিটন দাস। তার উইকেট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম উইকেট পেলেন কেশব মহারাজ।

এরপর নামেন মুশফিকুর রহিম
ক্রিজে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারলেন না তিনি। মহারাজকে স্লগ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ডেভিড মিলারের হাতে তুলে দেন মুশফিক। ফেরার আগে মাত্র ৯ রান করেন এই ইউকেটরক্ষক-ব্যাটার।

নামলেন ইয়াসির আলী
তাকে নিয়ে ছুটেন সাকিব। করেন অর্ধশতক। দুইবার ডাইভ দিয়েছেন রান-আউটের হাত থেকে বাঁচতে। চোটের কারণে আছেন অস্বস্তিতেও। তবে ব্যাটিংয়ে সাকিব জ্বলে উঠলেন ঠিকই। ফিকোয়াকে লং-অফ দিয়ে মারা ছয়ে অর্ধশতক হয়ে গেল তার। ৫০ বলেই করলেন ৫০ রান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সাকিবের এটি ৫০তম ফিফটি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয়। আদতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা তিন ওয়ানডেতেই অর্ধশতক করলেন সাকিব, যদিও সেটি প্রায় ৫ বছরের ব্যবধানে।

সাকিবের মাইলফলকের পরের ওভারে ২০০ পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। ইয়াসির আলীর সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটি আগায় ১০০ রানের পথে। চতুর্থ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি, আগেরটি ছিল ৬৯ রানের (মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক)।

এরপই ইসাসিরের ফিফটি
নিজের চতুর্থ ম্যাচে এসে আস্থার প্রতিদান দিলেন ইয়াসির আলী। ৪৩ বলে পূর্ণ করে ফেললেন অর্ধশতক।

ইয়াসির ফিফটি করার পরই ফিরলেন সাকিব
এনগিডির ইয়র্কার বল স্কুপ করতে গিয়ে হলেন এলবিডব্লিউ। ইয়াসিরের সঙ্গে তার জুটিতে উঠেছে ৮২ বলে ১১৫ রান। ফেরার আগে ৬৪ বলে ৭ চার ৩ ছক্কায় ৭৭ রান করেন সাকিব আল হাসান।

তার পরের ওভারেই ফেরেন ইয়াসির
রাবাদার শর্ট বলে শট খেলে ফেলেছিলেন আগেভাগেই। বল লেগেছে একেবারে ব্যাটের নিচের প্রান্তে, ফিরতি ক্যাচ ধরে ইয়াসিরকে ফেরার রাবাদার। ফেরার আগে ৪৪ বলে ৪ চার ২ ছক্কায় ৫০ রান করে ফেরেন ইয়াসির আলী। ৩ বলের ব্যবধানে থিতু হওয়া দুইজন ব্যাটসম্যানকে হারাল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তখন ৪২.১ ওভারে ২৪৩/৫।

এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৭ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ২৫ রান, আফিফ হোসেন ১৩ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ১৭ রান করে আউট হলেও মেহেদী হাসান মিরাজ ১৩ বলে ২ ছক্কায় ১৯ রান এবং তাসকিন আহমেদ ৫ বলে ১ চারে ৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। অবশেষে নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে বাংলাদেশ।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মারর্কো জনসেন ও কেশব মহারাজ ২টি করে এবং লুঙ্গি এনগিডি, কাগিজো রাবাডা ও ফেলুকাওয়ে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

বাংলাদেশের দেওয়া ৩১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত