আফিফ-মিরাজে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:৫৪

উইকেটের পতন দেখে বোঝাই যায়নি বাংলাদেশ জিতবে! দলীয় প্রথম ৪৫ রানের মাথায় ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আফগান পেসার ফারুকি একাই নিয়েছেন ৪টি উইকেট। সেখান থেকে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন আফিফ ও মিরাজ। তাদের জুটিতে ভর করেই ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রইল তামিম ইকবালের দল।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ফর্মেটের সামনে ২১৬ রানের লক্ষটা বেশি একটা কঠিন ছিল না। এর থেকেও বড় লক্ষ হেসেখেলে জেতার রেকর্ড তামিমদের আছে। কিন্তু ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বেশ কঠিন করে ফেলেছিল প্রথম অডারের ব্যাটাররা। স্কোর বোর্ড দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে জয় নিয়ে ভাবার কিছুই নাই। কিন্তু ভাবতে বাধ্য করলেন আফিফ-মিরাজ।

সর্বশেষ মাহমুদউল্লাহর উইকেট হারানোর পর দেখেশুনে খেলতে থাকেন আফিফ-মিরাজ। রানরেটটাও ধরে রাখলেন তারা। সিঙ্গেল, ডাবল, বাউন্ডারি নিয়ে গড়ে ফেললেন দুজনের রেকর্ড জুটি। তাদের জুটিতে আসল ১৭৪ রান। ৪৮তম ওভারের ৪র্থ বলে শেষ বাউন্ডারিটি মারলেন আফিফ। এরই সাথে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় তুলে নিলো বাংলাদেশ।

আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে মিরাজ খেলেছেন তার সেরা ইনিংস। অপরাজিত থেকে করেছেন ৮১ রান। খেলেছন ১২০ বল। ৯টি বাউন্ডারি খেলেছেন তিনি। অপর দিকে ১১৫ বল খেলে ৯৩ রান করেছেন আফিফ সোহেন। একটি ছক্কা ও ১১টি বাউন্ডারি খেলেছেন তিনি।

এর আগে ওপেনার তামিম ইকবাল ৮ রান, লিটন দাস ১ রান, সাকিব আল হাসান ১০ রান, মুশফিকুর রহিম ৩ রান, ইয়াসির আলী শূন্য এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৮ রান করেন।

আফগানদের হয়ে ৪টি উইকেট নিয়েছেন ফজলহক ফারুকি, মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

ফজলহক ফারুকি

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.১ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।

শুরুতেই আফগানদের ধ্বস নামান মোস্তাফিজ। তৃতীয় ওভারে মোস্তাফিজের তৃতীয় বলেন তামিমের হাতে ক্যাচ দেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। ১১ রানে ভাঙল আফগানদের উদ্বোধনী জুটি। ক্রিজে ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গী নতুন ব্যাটসম্যান রহমত শাহ।  দুজনে করেন ৪৫ রানের জুটি। সে জুটিতে আঘাত হানে শরিফুল ইসলাম। ইব্রাহিম জাদরানকে ১৯ রানে থামিয়ে দেন বাঁহাতি পেসার।

এরপর আসেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি। দলীয় ৭৯ রানের মাথায় রহমত শাহকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ২২তম ওভারে শেষ বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রহমত। ফেরার আগে ৬৯ বলে ৩ চারে ৩৪ রান করেন তিনি। এরপর শহিদির সঙ্গী হতে নামেন নজিবুল্লাহ জাদরান। তাকে সাথে নিয়ে ২১ রানের জুটি গড়েন শহিদি। পরে শহিদিকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৮তম ওভারের শেষ বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শহিদি। ৪৩ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ২৮ রান করেন তিনি।

এরপর নজিবুল্লাহকে সঙ্গ দিতে নামেন মোহাম্মদ নবি। ৬৩ রানের একটি জুটি গড়েন দুজনে। এরপরই নবিকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। ৩৯তম ওভারে তাসকিনের তৃতীয় বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নবি। ফেরার আগে ২৪ বলে ২ চারে ২০ রান করেন তিনি। এরপর নামেন গুলবাদিন।

নজিবুল্লাহকে নিয়ে ৩৯ রানের একটি জুটি বাঁধেন গুলবাদিন। সে জুটিতে আঘাত হানে সাকিব আল হাসান। ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে গুলবাদিনকে এলবিডব্লিউ করেন সাকিব। ২১ বলে ১ ছক্কায় ১৭ রান করে ফেরেন গুলবাদিন। এরপর আর জুটি বাঁধতে দেননি টাইগার বোলাররা।

নজিবুল্লাহ জরদান

রশিদ খানকে শূন্য রানে ফেরান সাকিব। তারপরেই মুজিবুর রহমানকে শূন্য রানে ফেরান মোস্তাফিজ। এরমধ্যে ফিফটি করেন জনিবুল্লাহ। মুজিবের পরে নজিবুল্লাহকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ফেরার আগে ৮৪ বলে ৮ চার ২ ছক্কায় ৬৭ রান করেন নজিবুল্লাহ জরদান। শেষ উইকেটে পতন ঘটান মোস্তাফিজ। আহমদজায়ীকে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরান কাটারমাস্টার।

বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ৩টি, তাসকিন আহমেদ, সাকিব আল হাসান ও শরিফুল ইসলাম ২টি করে এবং মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ ১টি উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত