৯৬ রানে অপরাজিত সাকিব

মুজারাবানির বলেই সিরিজ জয়ী বাংলাদেশ

প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২১, ২৩:২২

শেষ ৬ বলে দরকার ৩ রান। ব্যাটে ছিলেন সাকিব। আজ জিম্বাবুয়ের লাইন-আপের তর্কসাপেক্ষে সেরা বোলার মুজারাবানি আসেন শেষ ওভারটি করতে। তার প্রথম বলেই চার মেরে ৫ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

রবিবার (১৮ জুলাই) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক জিম্বাবুয়েকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে তামিম-সাকিবরা। সর্বশেষ ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে ৪-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা।

সিরিজ জেতার ম্যাচে রোমাঞ্চকর এক লড়াই হলো। ব্যাটে-বলে সাকিব যে নায়ক তার প্রমাণ আজও দিয়েছেন। প্রথমে বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৪২ রানে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। পরে ব্যাট হাতে দলের চরম বিপদে খেললেন ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। তবে সাকিবের পাশে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও প্রশংসার দাবিদার। অষ্টম উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ৬৯ রানের একটি জুটিতে গড়েন। খেলেন ৩৪ বলে ১ চারে ২৮ রান।

এই ম্যাচ জুড়ে সাকিবের একটা আক্ষেপ থাকতেই পারে। সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় দিয়ে পৌঁছতে পারলেন না তিন অঙ্কের ঘরে। কিন্তু এমনই সময়ে তিনি সেঞ্চুরির পথে ছিলেন, হাতে তখন খুবই কম সময় ছিল। শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য দরকার ১২ রান, সাকিবের সেঞ্চুরি করতে দরকার ১০ রান। তেন্দাই চাতারার ওই ওভারের শেষ বলে চার মারেন সাইফউদ্দিন। এতে বাংলাদেশের দকর হয়ে পরে ৬ বলে ৩ রান।

তখন স্ট্রাইকে ছিলেন সাকিব। শেষ ওভারে মুজারাবানিনের প্রথম বলে থার্ডম্যান এরিয়া দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দারুণ ম্যাচে জয়টাও নিজের ব্যাটের স্পর্শে রাখেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। সেঞ্চুরি পাননি সাকিব, তবে দলের কঠিন বিপদের সময়ে ১০৯ বলে ৮ চারে ৯৬ রান করে দলকে জয় এনে দেন তিনি।

তার আগে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরু করেছিলেন তামিম-লিটন। কিন্তু বেশি দূর এগোতে পারেনি দুই ওপেনার। ৩৪ বরে ৪ চারে ২০ রান করে লুক জঙ্গি বলে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তার সাথেই পথ চলেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। ৩৩ বলে ৪ চারে ২১ রান করে নাগাভারার বলে টেইলরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন।

এর পরে সাকিব হাল ধরার পর আর কেউই বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি। তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬ নম্বরে নেমে ২৫ বলে ৩ চারে ২৬ রান করেন। মুজারাবানির শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।

স্বাগতিকদের হয়ে লুক জঙ্গি ২টি এবং মুজারাবানি, নাগারাভা, মাধেভেরে ও সিকান্দার রাজা ১টি করে উইকেট নেন।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে শুরুটা ভালো করতে পারেনি স্বাগতিকরা। দলিয় ৩ রানের মাথায় উইকেট হারায় তারা। তাসকিনের বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জিম্বাবুইয়ান ওপেনার কামুনুকামওয়ে, করেছিলেন ১ রান। তার কিছুক্ষণ পরেই ১৩ রান করে বিদায় নেন আরেক ওপেনার মারুমানি। তাকে বোল্ড করে বিদায় দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

এরপরে ৪৭ রানের ছোটো একটি জুটি বাঁধে উইকেটরক্ষক চাকাবভা ও অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর। ৩২ বলে ২ চারে ২৬ রান করে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন চাকাবভা আর ৫৭ বলে ৫ চার ১ ছক্কায় ৪৬ রান করে শরিফুলের হাতে ধরা পরেন টেইলর।

এরপর ডিয়ন মায়ার ৩৪ রান করে ফিরলেও হাফসেঞ্চুরি করেন মাধিভেরে। তিনি করেন ৬৩ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ রান।মায়ারকে শিকার করেন সাকিব ও শরিফুলের শিকার হন মাধিভেরে। এরপর সিকান্দার রাজা কিছুক্ষণ টিকে ছিল কিন্তু বাকিরা দাঁড়াতেই পারেনি। সিকান্দার রাজা ৪৪ বলে ২ চারে ৩০ রান করে শরিফুলের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।

টাইগারদের হয়ে শরিফুল ইসলাম ৪টি, সাকিব আল হাসান ২টি এবং তাসকিন আহমেদ, সাইফুদ্দিন ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

ম্যাচ সেরা হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত