উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ

নেইমার-এমবাপ্পেদের হারিয়ে ফাইনালের পথে ম্যানচেস্টার সিটি

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০৬:১৫

ক্রীড়া ডেস্ক

কোয়ার্টার ফাইনালে ভালোই কৌশল খাটিয়ে ছিল পিএসজির আর্জেন্টাইন কোচ মাওরিসিও পচেত্তিনো। শক্তিশালি দল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ গোলে ড্র করে অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে সেমিফাইনালে উঠেছিল পিএসজি। তখন মনে হয়েছিল একরাশ তারকা নিয়ে নতুন কৌশলে দলকে ফাইনালে নিবে পচেত্তিনো। কিন্তু সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ালো ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। স্প্যানিশ এই কোচের আক্রমণাত্মক কৌশলের সামনে দাঁড়াতে পারেনি একঝাক তারকা ভরা পিএসজির আর্জেন্টাইন কোচ।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বুধবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে প্যারিসের মাঠ পার্ক দেস প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে পিএসজিকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখল ম্যানচেস্টার সিটি।

এদিন পিছিয়ে থেকেও জয় নিয়ে ফিরেছে সিটিজেনরা। নিজেদের মাঠে প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলেছে পিএসজি। পেপ শিষ্যদের ভালোই চাপে রেখেছিল নেইমার-এমবাপ্পেরা। এতে প্রথমেই এগিয়ে যায় প্যারিসের দলটি। ম্যাচের ১৫ মিনিটে ডি মারিয়ার করা কর্নার কিক থেকে হেডে গোল করে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োস। এতে শুরুতেই ১-০ গোলে এগিয়ে পিএসজি।

এর আগে ম্যাচের ১২ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত পিএসজি। কিন্তু নেইমারের করা শটে জালের উপর থেকে উড়িয়ে দেন সিটি গোলরক্ষক। পরে ম্যাচের ২০ মিনিটে আবারো এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। নেইমারের করা কর্নার কিক থেকে হেড দিয়েছিল ভেরাত্তি, কিন্তু বলটি গোলবারের পাশ থেকে চলে যায়।

পরে ম্যাচের ৪১ মিনিটে নিজেদের ডি বক্সের কাছ থেকে প্যারেদেস এমাব্বের উদ্দেশ্যে বল দিলে পিছন থেকে সিটির ডিফেন্ডার ওয়াকার বলটি টোকা দিলে সিটির আরেক ডিফেন্ডার জোয়াও চেঞ্চেলো বলটি বাড়িয়ে দেন ফিল ফোডেনের দিকে। কিছুটা ফাঁকা পেয়ে গোলে শট নেন তিনি। কিন্তু সহজেই বলটি ধরে ফেলে পিএসজির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক কাইলর নাভাস। এরপর বিরতির আগে আর কোনো গোল না হলে এই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)।

মাওরিসিও পচেত্তিনো ও পেপ গার্দিওলা

বিরতি থেকে ফিরে এসে যেন জ্বলে উঠল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। গোল শোধে মরিয়া সিটিজেনরা। দ্বিতীয়ার্ধে পিএসজিকে ভালো কোন সুযোগ তৈরি করতে দেয়নি সিটিজেনরা। বরং দ্বিতীয়র্ধের বেশিরাভাগ সময়ে বল দখলে রাখেছে সফরকারীরাই। ম্যাচের ৬০ মিনিটে দারুন একটি বাইসাইকেল শট নিয়েছিলেন ডি ব্রুইনে। কিন্তু বলটি উপরের জাল ঘেষে বেড়িয়ে যায়।

তার তিন মিনিট পরেই আচমকা গোলটি শোধ দিয়ে দেয় কেভিন ডি ব্রুইনে। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে কর্নার কিক থেকে বিল পান ফিল ফোডেন। সেখান থেকে রদ্রিগোকে বল দেন তিনি। রদ্রিগোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে ক্রস করেন ব্রুইনে। কিন্তু পিএসজির ডি বক্সে থাকা সিটির ডিফেন্ডার স্টোনেস বলটি ছোঁয়ার আগেই ধীর গতিতে জালে ঢুকে যায়। পিএসজির গোলরক্ষ নাভাস বলটি ধরার বৃথা চেষ্টা করেছিল। তিনিও বুঝতে পারেননি বলটি জালে ঢুকবে। আফসোস কারা ছাড়া আর কিছুই করার নেই ব্রাজিলিয়ান এই গোলরক্ষকের। এতে ১-১ গোলে সমতায় ফেরে সিটিজেনরা।

ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ডি বক্সের সামনে ফিল ফোডেনকে ফাউল করেন পিএসজির মিডফিল্ডার ঘানা। কিন্তু উগ্রতার কারণে হলুদ কার্ড দেখে প্যারেদেস। ৭১ মিনিটে বুদ্ধিমত্তার ফ্রি কিকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেয় ম্যানসিটির আলজেরিয়ান ফরোয়ার্ড রিয়াদ মাহরেজ। এতে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি।

শুরুতে এগিয়ে থেকেও এবার গোল পরিশোধে মরিয়া পিএসজি। ম্যাচের ৭৩ হলুদ কার্ড দেখে নেইমার আর ৭৬ মিনিটে সিটি ফরোয়ার্ড গুন্দোগানকে বাজে ট্যাকেল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে পিএসজির মিডফিল্ডার গানা। এতে ১০ জনের দলে পরিণত হয় প্যারিসের দলটি।

তবে ১০ জনের দল পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি গার্দিওলার শিষ্যরা। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে রিয়াদ মাহরেজ একটি শট নিয়েছিল তা বাইরে থেকে চলে যায়। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোন গোল না হলে প্রথম লেগে প্রতিপক্ষে মাঠ থেকে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিদায় নেয় ম্যানচেস্টার সিটি।

তবে পিএসজিকে ফাইনালে উঠতে হলে আগামী ৫ মে (বুধবার) সেমিফাইানলের দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে অন্তত ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরতে হবে মাওরিসিও পচেত্তিনর পিএসজিকে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত