১৬৩ রানে সাজঘরে শান্ত

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২১, ১৬:৫১

ক্রীড়া ডেস্ক

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম দেড়শতক করে সাজ ঘরে ফিরেছে নাজমুল হাসান শান্ত। পাল্লেকেলেতে ১৬৩ রানের ইনিংসে মোকাবেলা করতে হয়েছে ৩৭৭তম বল। হাকিয়েছে ১৭টি বাউন্ডারি ও একটি ওভারবাউন্ডারি। ৩৭৮তম বলে লাহিরু কুমারার হাতে শিকার হয় শান্ত।

আজ বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে লাহুরি কুমারার শিকার হয়ে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

বুধবার প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দীলয় ৮ রানের মাথায় বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে সাইফ হাসানের উইকেটটি যখন হারায় তখন ভরসা হয়ে নামেন শান্ত। এক প্রান্ত থেকে ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকা তামিমকে ধীর গতিতে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন শান্ত। করেন দুজনে ১৪৪ রানের জুটি। দলীয় ১৫২ রানের মাথায় বিশ্ব ফার্নান্দোর শিকার হন তামিম। তখন শান্তকে সঙ্গ দিতে নামেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।

তবে আউট হওয়ার আগে তামিম ওয়ানডে মেজাজে খেলে ৫৩ বলেই তুলে নেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম ফিফটি। এর মধ্যে ৪০ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। তবে মাত্র ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরিটি করতে না পারাটা তার জন্য দঃখজনক। দ্বিতীয় সেশনে লঙ্কানদের গুড লেন্থের সামনে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ১০১ বলে ১৫টি চারের মাধ্যমে ৯০ রান করে বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন দেশসেরা বাঁহাতি এই ওপেনার।

তবে তামিম আউট হওয়ার আগেই নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরিটি করে ফেলেছিলেন শান্ত। ১২০ বলে ৭ চারে হাফসেঞ্চুরিটি করেন তিনি। এরপর মুমিনুলকে নিয়ে ধীর গতিতে এগোতে থাকা শান্ত গতকালই টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। শুধু টেস্ট ক্যারিয়ারই নয়, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেই এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি।

ইনিংসের ৭৪তম ওভারে সেঞ্চুরিট দেখা পান তিনি। ২৩৫ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় সেঞ্চুরিটি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চার বছর চলছে শান্তর টেস্ট ক্যারিয়ার। এর মধ্যে অবশ্য বেশি টেস্ট খেলতে পারেননি। মাত্র ৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে এর আগে একবারই ফিফটি পেয়েছিলেন। গত বছর ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, করেছিলেন ৭১ রান। পরে ২৮৮ বলে ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১২৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন তিনি। তবে শান্তর সেঞ্চুরির মধ্যে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরিটি তুলে নেন মুমিনুল। পরে ১৫০ বলে ৬ চারে ৬৪ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন এই অধিনায়ক।

মুমিনুল আর নাজমুল গতকাল প্রথম দিন শেষ করেছিলেন ১৫০ রানের জুটি গড়ে। আজ দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে এই জুটি থেমেছে ২৪২ রানে। নাজমুলের চোয়ালবদ্ধ ইনিংসের সমাপ্তিটা ঘটেছে যেভাবে, সেটিকে কিছুটা ‘অ্যান্টি ক্লাইমেক্স’ই বলা চলে। দুদিন ধরে ইনিংসটাকে যেভাবে গুছিয়েছিলেন, তার শেষটা ঠিক তেমনভাবে হয়নি। লাহিরু কুমারার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়েছেন নাজমুল। শটটা একটু আগেভাগেই খেলে ফেলেছিলেন তিনি। তারপরেও নাজমুল দারুণ একটা ইনিংস খেলেই আউট হয়েছেন ৩৭৮ বলে ১৭টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কায় সাজান ১৬৩ রানের ইনিংস। নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটি বড় করে সেটির উদ্‌যাপনটা ভালোই হলো নাজমুলের। দলীয় ৩৯৪ রানের মাথায় সাজ ঘরে ফেরেন নাজমুল।

মুমিনুল অবশ্য শ্রীলঙ্কান বোলারদের সামনে তখনো ‘দেয়াল’ হয়ে ছিলেন। নাজমুলের বিদায়ের পর তার সঙ্গী হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। কাল ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে প্রথম দিন শেষ করেছিলেন। কিন্তু নিজের ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে একটা পরিসংখ্যানগত সুনাম মুমিনুলের বরাবরই ছিল। সেটা আজ করে ফেললেন। ২২৪ বল খেলে ১০টি বাউন্ডারিতে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তম সেঞ্চুরিটা করে ফেললেন মুমিনুল।

মুমিনুক হকের সেঞ্চুরি

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরিটি যেকোনো বিচারেই মুমিনুলের জন্য বিশেষ কিছুই। অধিনায়কত্বের ভার কাঁধে ওঠার পর থেকে টেস্টে ভরাডুবিই বেশির ভাগ সময় সঙ্গী হয়েছে তার। এ ছাড়া দেশের মাঠ ছাড়া সেঞ্চুরি করতে পারেন না—এমন একটা ‘দুর্নাম’ও নামের পাশে এঁটে গিয়েছিল। পাল্লেকেলেতে সেঞ্চুরি করে সেই দুর্নাম দূর করলেন। নিজের অধিনায়কত্বে টেস্টে একটা ভালো মুহূর্তও পেলেন। ক্রিকেটের বড় সংস্করণে নিজেদের প্রমাণ করারও একটা ব্যাপার ছিল।

এই প্রতিবেদন খেলা পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৭৪ রান করেছে বাংলাদেশ। মাঠে অপরাজিত আছে মুশফিকুর রহিম (৪৩*) ও লিটন কুমার দাস (২৫*)। ১৫৫ ওভার শেষে বৃষ্টির কারণে আপাতত খেলা বন্ধ আছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত