লিভারপুলের বিদায়, সেমিতে রিয়াল মাদ্রিদ

সমিকরণটা এমনই ছিল যে, চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে যেতে হলে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে কোনো ভাবেই গোল হজম করা যাবেনা রিয়াল মাদ্রিদের। এদিকে জিততে হলে নিজেদের মাঠে দুটি গোল করতেই হবে লিভারপুলের। দুই দলের এই সমিকরণ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছে স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল। নিজেদের রক্ষণভাগ ঠিকঠাক ভাবে সামলে রেখে গোলশূন্য ড্র করেছে স্প্যানিশরা। আর এতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে আনফিল্ডে ইয়ুগেন ক্লপের শিষ্যদের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। এর আগে প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ওই ৩-১ গোলের জয় নিয়ে সেমিতে পৌঁছে গেলো স্প্যানিশ ক্লাবটি।

এতে ইংলিশ ক্লাবটিকে বিদায় করে ১৪তম শিরোপা জয়ের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটা ধাপ অতিক্রম করল রিয়াল। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মাদ্রিদের ক্লাবটির প্রতিপক্ষ চেলসি।

এদিন প্রথমার্ধেই ন্যূনতম দুটি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে লিভারপুল। পরের অর্ধে আরও কয়েকটি সুযোগ নষ্টের ব্যর্থতায় পুড়েছে।

এদিকে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান ধন্যবাদ দিতে পারেন তার ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড থেকে রক্ষণভাগের সব সেনানীকে। একেতো রক্ষণভাগের নেতা সের্হিও রামোস নেই, রাফায়েল ভারান, লুকাস ভাসকেজ, দানি কারবাহালদের মতো অভিজ্ঞদেরও পাননি জিদান। রাইটব্যাক পজিশনে ‘মেক শিফট’ হিসেবে খেলেছেন ফেদে ভালভার্দে। মাঝের রক্ষণ সামলেছেন নাচো ও এদের মিলিতাও। তাও যেনতেনভাবে সামলানো হয়।

রিয়ালের বক্সে উড়ে আসা বেশির ভাগ ক্রস ‘ক্লিয়ার’ করার পাশাপাশি ম্যান মার্কিংয়েও দারুণ ছিলেন নাচো ও মিলিতাও। জটলার ভেতর থেকে মোহাম্মদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনোদের নেওয়া শটগুলোও পথভ্রষ্ট করেছেন তারা। ঠিক তাদের সামনে আসল কাজটা সারাক্ষণ করে গেছেন কাসেমিরো। মাঝমাঠের অর্ধ থেকে রিয়ালের বক্সের সামনে লিভারপুল খেলা তাদের ইচ্ছেমতো গোছাতে পারেনি এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের জন্য। প্রতিপক্ষের আক্রমণ নস্যাৎ করতে কাল তার কোনো জুড়ি ছিল না। শেষ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষণকে টিকে রেখেছে জিদান বাহিনী। লিভারপুলকে কোনো ভাবেই গোলের সুযোগ দেয়নি রিয়াল জায়ান্ট।

গোটা ম্যাচে রিয়ালের গোলপোস্ট তাক করে মোট ১৫টি শট নিয়েছে লিভারপুল। সে তুলনায় রিয়াল নিতে পেরেছে মাত্র ৬টি শট। সেট পিসও কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকেরা। ১১টি কর্নার পেয়েও বাতাসে নিজেদের কার্যকারিতা প্রমাণ করতে পারেনি লিভারপুলের ত্রিফলা আক্রমণভাগ। অবশেষে গোলশূন্যতে মাঠ ছাড়ল দুই দল। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলের জয় নিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।

এদিকে ম্যাচ শুরুর আগে লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে যাওয়ার সময় ‘অলরেড’ সমর্থকদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আতিথ্য-ই পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালের বাসে ছুঁড়ে মেড়েছে কাচের বোতল! লিভারপুলের সমর্থকদের ছুঁড়ে মারা বোতলের আঘাতে গুঁড়িয়ে যায় রিয়াল খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসের জানালার একটি কাচ। এ ঘটনার জন্য লড়াই শুরুর আগে রিয়ালের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিল লিভারপুল। ভয়াবহ হিলসবরো দুর্ঘটনার ১০৯ বছর পূর্তি হিসেবে মাঠে নীরবতাও পালন করেছে দুই দল।