জেলে যাওয়া কোচের কৌশলেই শূন্য হাতে ফিরেছে মরিনিওর টটেনহাম

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২১, ১৫:১২

উয়েফা ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড মিসলাভ অরসিচের হ্যাটট্রিকে ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম হটস্পারকে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে গেলো ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব দিনামো জাগরেব। অথচ প্রথম লেগে এই দিনামোকেই হারিয়েছিল টটেনহাম।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দিবাগত রাতে স্টাডিওন মাকসিমির স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগে টটেনহামকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে দিনামো। এর আগে প্রথম লেগে এই দিনামোকেই ২-০ গোলে হারিয়েছিল হোসে মরিনিওর দল। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে জোরান মামিচের দল।

যদিও ইউরোপা লিগের রাউন্ড অফ সিক্সটিনে খেলতে নামার আগেই জোসে মরিনিওর টটেনহাম জানতে পারে, প্রতিপক্ষ দিনামো জাগরেবের কোচ জোরান মামিচ জেলে যাচ্ছেন! দিনামোর দলবদল তহবিলের টাকা তছরুপের অভিযোগ মামিচের বিরুদ্ধে। চূড়ান্ত রায় না আসার কারণেই প্রথম লেগে ডাগ আউটে দাঁড়াতে পেরেছিলেন মামিচ। দেখেছিলেন দলের হার। টটেনহামের অধিনায়ক হ্যারি কেনের জোড়া গোলে হেরেছিল তার দল। তবে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ডগআউটে আর থাকতে পারলেন না মামিচ। তার আগেই জেলে চলে যেতে হয়েছে তাকে। তবে জেলে যাওয়ার আগে এই কোচের কাছ থেকে দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সহকারী কোচ দামির ক্রজনার। সেই ক্রজনারই মামিচের দেখিয়ে যাওয়া কৌশলে গত রাতে পেয়ে গেছেন ঐতিহাসিক জয়। এই জয় নিয়ে কোয়ার্টারে পৌঁছাল দিনামো জাগরেব। আর শূন্য হাতে ফিরেছেন মরিনিওরা।

এদিন জেলে যাওয়া কোচ জোরান মামিচের কৌশল বদললাননি সহকারী কোচ হিসেবে আট বছর কাজ করা ক্রজনার। এদিকে দলের কৌশল বাস্তবায়ন করার জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ২৮ বছর বয়সী ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড মিসলাভ অরসিচ। করেছেন হ্যাটট্রিক। গোল পেতে ম্যাচের ৬০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়ান ক্লাবটির। এরপরই শুরু হয় হ্যাটট্রিকের গোল উৎসব।

ম্যাচের ৬২ মিনিটে আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে কাটইন করে ঢুকে ডিবক্সের বাইরে থেকেই দুই স্পার্স ডিফেন্ডার সার্জ অরিয়ের ও ডেভিনসন সানচেজের মাথার ওপর দিয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে নিজের প্রথম গোলটা করেন অরসিচ।

এরপর ৮২ মিনিটে দলের অধিনায়ক মিডফিল্ডার আরিয়েন আদেমি ও উইঙ্গার ইয়াই আতিয়েমওয়েনের গড়ে তোলা দুর্দান্ত এক আক্রমণে তুলির শেষ আঁচড় টেনে দেন অরসিচ। বক্সের মধ্যে টটেনহামের পাঁচজন খেলোয়াড় থাকলেও অরসিচকে মার্ক করার কাজটা কেউই করেননি। সুযোগে গোলটি দিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে সমতায় চলে আসে দিনামো। আর এভাবেই শেষ হয় মূল ম্যাচ।

এরপর শুরু হয় অতিরিক্ত সময়। অতিরিক্ত সময়ের ১৬ মিনিটে আবারও অরসিচ-ঝলক। মাঝমাঠের বাঁ প্রান্ত থেকে একদম নিজের প্রচেষ্টায় দৌড়ে এসে কয়েকজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডান পায়ের জোরালো শটে গোলকিপার উগো লরিসকে পরাস্ত করে আবারো গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পুরোন করেন অরসিচ।

অরসিচের এই হ্যাটট্রিকেই নিশ্চিত হয়, ইউরোপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে মরিনিওর। অবশেষে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেলো ক্রোয়েশিয়ান ক্লাব দিনামো জাগরেব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত