গোল করে ম্যারাডোনাকে উৎসর্গ করলেন মেসি

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২০, ০৩:৪৬

সাহস ডেস্ক

নিজের সেরা সময়টা ফেলে আসা ম্যারাডোনা ইউরোপ পর্ব শেষ করে আর্জেন্টিনায় ফিরেছিলেন ১৯৯৩ সালে। ফিরে যোগ দিয়েছিলেন নিওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবে। ১৯৯৪ পর্যন্ত খেলেছেন এই ক্লাবের হয়েই। আর সাত বছরের মেসিও নিওয়েলসে যোগ দিয়ে ছিলেন ১৯৯৪ সালে! সে ক্লাবে সাত বছর কাটিয়ে তবেই বার্সেলোনায় এসেছেন। কিংবদন্তির বিদায়ে তাঁকে স্মরণ করতে আজ সেই নিওয়েলসের স্মৃতিকেই টেনে এনেছেন। ৮৬’র মহানায়ককে স্মরণের জন্য ওই ক্লাবের জার্সি পরে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। যদিও বার্সেলোনার জার্সি পরেই খেলেছেন, কিন্তু ওসাসুনার বিপক্ষে অসাধারণ এক গোল করে মূল জার্সি খুলে নিওয়েলসের জার্সি পরে হাত তুলে প্রয়াত ম্যারাডোনাকে উৎসর্গ করলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।

রবিবার (২৯ নভেম্বর) ক্যাম্প ন্যুয়ে ওসাসুনাকে ৪-০ গোলে হারিয়ে জয়ে ফিরল কাতালান ক্লাব বার্সেলোনা।

আজ ম্যারাডোনাকে গোল উৎসর্গ করবেন, সেটা আগে থেকে ঠিক করেই মাঠে নেমেছিলেন মেসি। খেলেছেনও দারুণ। কিন্তু কোনোভাবেই গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। তবে ম্যাচের শুরু থেকেই ওসাসুনাকে চেপে ধরে বার্সেলোনা। ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল স্বাগতিকরা। পেনাল্টি ডি-বক্সের ডান দিক দিয়ে এগিয়ে যাওয়া গ্রিজমানকে আটকাতে সামনে এগিয়ে আসেন ওসাসুনার গোলরক্ষক। তাকে ফাঁকি দিয়ে বল ব্যাকপাসে বাড়িয়ে দেন কুতিনিয়োকে। ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডারের শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ডিফেন্ডার উনাই গার্সিয়া।

বার্সেলোনার প্রথম গোল আসে গোলের ম্যাচের ২৯ মিনিটে। পেনাল্টি বক্সের বাম দিক দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া জর্দি আলবা গোলমুখে কুতিনিয়োর দিকে বাড়িয়ে দেন। কুতিনিয়োর শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি। ফিরতি বল ব্রাথওয়েট শট করলে সেটিও ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক হেরেরা। এবারও বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি। পরে ব্রাথওয়েটের দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বল গোললাইন অতিক্রম করে। এতে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রোনাল্ড কোম্যানের দল।

পরে বিরতিতে যাওয়ার ব্যাবধান দ্বিগুন করে কাতালানরা। ম্যাচের ৪২ মিনিটে বাম দিক দিয়ে আলবার বাড়ানো ক্রস ওসাসুনার মিডফিল্ডার মনকায়োলা হেড দিয়ে প্রতিহত করলে বল ডি-বক্সের বাইরে থাকা ফরাসি ফরোয়ার্ড গ্রিজম্যান জোরালো এক ভলিতে জালে পাঠান। এতে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।

বিরতি থেকে ফিরে এসে ম্যাচের ৫৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় বার্সা। পেনাল্টি বক্সের ভেতরে গ্রিজমানের বাড়ানো বল পেয়ে যান কুতিনিয়ো। ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল জালে পাঠান এই ব্রাজিলয়ান।

কিন্তু মেসিই শুধু গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। কয়েকটি ফ্রি কিক থেকেও চেষ্টা করছিলেন, হচ্ছিল না। ৭০ মিনিটে তো বদলি নামা ডেমবেলেও গোল পেয়ে যান। যদিও ভিএআর সে গোল বাতিল করে দেয়। তবে ম্যাচের ৭৩ মিনিটেই এসে যায় মেসির সেই মুহূর্ত। ত্রিনকাওর কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের ওপর ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে যে শট নিয়েছেন, তা ঠেকানো সম্ভব ছিল না ওসাসুনার গোলকিপারের। এরপরই বার্সেলোনার জার্সিটা খুলেছেন। দেখিয়েছেন ‘১০ নম্বর’ জার্সিসংবলিত নিওয়েলসের জার্সি।

ম্যারাডোনাকে সম্মান জানিয়ে এভাবে উদ্‌যাপনে সবার মন ভরে উঠলেও নিয়ম থেকে সরে আসতে পারেননি রেফারি। জার্সি খুলে উদ্‌যাপন করায় হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে তাকে। অবশ্য এ নিয়ে কেউ ভাবতে যায়নি।

ম্যাচ শেষে কুতিনিও বলেছেন, ‘বিশ্বের এক নায়ককে হারিয়েছি আমরা। পুরো ফুটবল বিশ্ব তাকে সম্মান করত এবং তার অভাব টের পাবে। দারুণ শ্রদ্ধা প্রকাশ ছিল এটা।’

এই জয়ে ৯ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৭ম স্থানে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। ১১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ। ৯ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়তে আছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। ১১ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয়তে আছে ভিয়ারিয়াল। ১০ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৪র্থ স্থানে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত