অতঃপর চলেই গেলেন বাদল রায়

প্রকাশ : ২২ নভেম্বর ২০২০, ১৮:২৬

সাহস ডেস্ক

অতঃপর চলেই গেলেন দেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা বাদল রায়। কিছুদিন আগে চতুর্থ পর্যায়ে লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে তার। ক্যানসার ধরা পড়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন মোহামেডানের সাবেক এই অধিনায়ক।

আজ রবিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মারা গেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তিন বারের সাবেক সহ সভাপতি বাদল রায়।

গত ১৫ নভেম্বর লিভার ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বাদল রায়। হাসপাতাল থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

বাদল রায়ের দীর্ঘ দিনের সতীর্থ, সাবেক ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বলেন, ‘বাদলকে স্কয়ার হাসপাতাল ছেড়ে দিয়েছিল। তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেছিল। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও পরে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ মেডিকেলেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

২০১৭ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে আক্রান্ত হন মোহামেডানের সাবেক এই অধিনায়ক। তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সেরে উঠলেও সেই অসুস্থতা ছাপ ফেলে যায় তার শরীরে। গত আগস্টে আক্রান্ত হন কোভিডে। অসুস্থ অবস্থাতেও ফুটবলের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। বাফুফের বিভিন্ন ব্যাপারে সোচ্চার হতে দেখা গেছে তাকে।ক্যাসিনো-কাণ্ডের পর মোহামেডানের পুনর্গঠনে রাখেন বড় ভূমিকা।

জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ শংকর হাজরাদের প্রজন্মের পর বাদল রায়ই ছিলেন সেরাদের কাতারে। কুমিল্লার সুতাকল ক্লাব দিয়ে ফুটবলে হাতেখড়ি তার। এরপর ১৯৭৭ সালে মোহামেডানের হয়ে তার ঢাকার মাঠে যাত্রা শুরু।

১৯৮১ ও ১৯৮৬ সালে মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালে টানা তিন বছর পর মোহামেডানের লিগ জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বাদল রায়। খেলা ছাড়ার পর মোহামেডানের ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার।

ঢাকার মাঠে সাদা-কালোর প্রতীক মোহামেডানের অনেক শিরোপা জয়ের পেছনে বিশাল অবদান রয়েছে বাদল রায়ের। খেলা ছাড়ার পর সংগঠক হিসেবে দেশের ফুটবল উন্নয়নে অবদান রেখে পেয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।

শুধু মোহামেডান নয়, জাতীয় দলেও বাদল রায় ছিলেন অপরিহার্য ফুটবলার। ১৯৮২ দিল্লি এশিয়াডে তার জয়সূচক গোল রয়েছে ভারতের বিপক্ষে। ইনজুরির জন্য বাদল রায়ের ক্যারিয়ার খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি।

খেলা ছাড়ার পর সংগঠক হিসেবে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান বাদল রায়। নিজের ক্লাব মোহামেডানের ম্যানেজার ও পরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হন। যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন দুই মেয়াদে। পরবর্তীতে ২০০৮-২০ সাল পর্যন্ত সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সহ-সভাপতি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনেও গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বাদল রায়। সর্বশেষ বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচনও করেছেন কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত