বেতন নিয়ে বার্সাকে মেসিদের ব্যুরোফ্যাক্স

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২০, ১৪:০৮

সাহস ডেস্ক

ব্যুরোফ্যাক্স শব্দটায় অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছেন বার্সেলোনার সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। গত দু’মাস আগে এই ব্যুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে বার্সেলোনা ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি। পরে হাজারো কাণ্ডের পর মেসি দলে থেকে গেলেও, ক্লাব সভাপতির সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকেছে।

মেসি-কান্ডের পর আবারও সভাপতির কাছে আসল ব্যুরোফ্যাক্স। তবে সেটা মেসি বা অন্য কোন খেলোয়ড়ের ক্লাব ছাড়ার বিষয় নয়, সব খেলোয়াড় মিলেই বুরোফ্যাক্স পাঠিয়ে জানিয়েছেন বেতন কমানোর জন্য খেলোয়াড়দের উদ্দেশে বার্তোমেউর করা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কথা।

করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই ক্লাবগুলো আর্থিকভাবে সমস্যায় আছে। বার্সেলোনার অবস্থাও ব্যতিক্রম নয়। ক্লাবকে সাহায্য করার জন্য বার্তোমেউ আবারও খেলোয়াড়দের বেতন কমানোর কথা বলেছিলেন। মেসিরা রাজি হননি সেই প্রস্তাবে।

এই মহামারির কারণে মেসিরা যে একেবারেই বেতন কমাননি, তা কিন্তু নয়। মহামারির কারণে ক্লাবের অন্য কর্মীদের বেতন যেন আটকে না যায়, সবাই যেন এই বিপদে অর্থকষ্টে না ভোগেন সেটা নিশ্চিত করতে মার্চেও ৭০ ভাগ বেতন কম নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মেসিরা।

পাশাপাশি নিজেদের পকেট থেকেও আরও কিছু অর্থ সেবার দিয়েছিলেন ক্লাবের তহবিলে। মূল একাদশের সব খেলোয়াড় এভাবে ৭০ ভাগ বেতন কম নেওয়ায় বার্সেলোনা প্রায় ১০ কোটি ইউরো ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল সেবার।

সে সিদ্ধান্তের কথা মেসি নিজেই জানিয়েছিলেন ইনস্টাগ্রামে। বলেছিলেন, ‘একটি ঘোষণা দেওয়ার সময় হয়েছে মনে হয়। সংকটকালে আমরা আমাদের বেতনের ৭০ ভাগ কেটে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছি। সঙ্গে আরও অর্থ যোগ করে নিশ্চিত করতে চাই, ক্লাবের স্টাফরা যেন সংকট শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি বেতন পান।’

এবার অবশ্য ৭০ শতাংশ নয়, স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম 'আরএসি ওয়ান' এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, খেলোয়াড় ও ক্লাবের কর্মী-কর্মকর্তাদের কাছে বেতনের ৩০ শতাংশ কম নেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন বার্তোমেউ। ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এভাবেই চলার পরিকল্পনা ছিল বার্সার। এমনকি আগামী ৫ নভেম্বরের মধ্যে বেতন কমানোর ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিল বার্সার বোর্ড। কিন্তু খেলোয়াড়রা তাতে রাজি হয়নি।

বার্তোমেউ সঙ্গে আরেকটা শর্তও জুড়ে দিয়েছিলেন। বেতন কমানোর জন্য অন্য কোনো ব্যবস্থার শরণাপন্ন হতে চাইলে সে ব্যাপারেও খেলোয়াড়েরাও নভেম্বরের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত সময় পাবেন, জানিয়ে দিয়েছিলেন বার্সা সভাপতি। প্রস্তাব ছিল, বেতন কমিয়ে চাইলে খেলোয়াড়েরা চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে পারবেন।

কিন্তু কোনো প্রস্তাবেই আগ্রহ নেই বার্সার খেলোয়াড়দের। তবে মেসিরা শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবে রাজি না হলে একতরফাভাবে বেতন কমাতে বার্সেলোনা পিছপা হবে না।

তবে সভাপতির প্রস্তাবে খেলোয়াড়রা কেন রাজি হচ্ছেন না, তার উত্তর সম্ভবত ওই বুরোফ্যাক্সেই আছে। বুরোফ্যাক্সে কি লিখেছেন মেসিরা, তা জানা গেলেই বোঝা যাবে দ্বন্দ্বটা আসলে কতদূর গড়িয়েছে। বার্তোমেউর সময়ও সম্ভবত ঘনিয়ে এসেছে। ক্লাবের সব খেলোয়াড় একজোট হয়ে তার প্রস্তাব এভাবে নাকচ করে দেওয়া শেষের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই জানিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলো।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত