করোনাভাইরাস: যুক্তরাষ্ট্রে সেচ্ছায় বন্দী সাকিব, দিলেন বার্তা

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২০, ১৩:৫৫

সাহস ডেস্ক

বাঁহাতি সেরা অলরাউন্ডা সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাসকে মহামারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আপনারা জানেন যে বাংলাদেশেও বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। আমাদের এখনই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমাদের সতর্কতাই পারে আমাদের দেশ এবং আমাদেরকে সুস্থ রাখতে।’

আজ ২২ মার্চ (রবিবার) যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজের ফেসবুক পাতায় সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতে করোনাভাইরাস নিয়ে একথা বললেন সাকিব।

সাকিব বলেন, ‘আমি নিজের একটা অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করছি। আমি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছেছি। যদিও বিমানে সব সময়ই একটু হলেও ভয় কাজ করেছে, তবু চেষ্টা করেছি নিজেকে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত রাখার। এরপর যখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে এসে নামলাম, আমি সোজা একটি হোটেলে উঠেছি। ওদের জানিয়ে দিয়েছি, আমি কিছুদিন এখানে থাকব। আর আমি যেহেতু বিমানে চড়ে এসেছি, তাই আমার একটু হলেও ঝুঁকি আছে। এ জন্য আমি নিজেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে রেখেছি। যে কারণে নিজের বাচ্চার সঙ্গেও দেখা করিনি। এখানে এসেও নিজের বাচ্চার সঙ্গে দেখা করছি না, অবশ্যই আমার জন্য এটা কষ্টদায়ক। তারপরও আমার মনে হয়, এই সামান্য আত্মত্যাগটুকু করতে পারলে আমরা অনেকটুকু এগোতে পারব।’

এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘যদি কেউ বিদেশফেরত থাকেন, তাহলে অবশ্যই নিজেকে ঘরে রাখা এবং ঘর থেকে যাতে বাইরে না যাওয়া হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। একই সঙ্গে আরেকটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে, যেন আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী এসে আপনার সঙ্গে দেখা করতে না পারেন। ১৪ দিন আপনাকে ঘরে থাকতে হবে, যেটা খুবই জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশেও যাঁরা বিদেশ থেকে এসেছেন-অনেকেই এসেছেন, খবরে পড়েছি। আমাদের দেশেরই মানুষ তাঁরা। যেহেতু তাঁদের ছুটির সময় কম থাকে, অনেক সময়ই তাঁরা চান আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে, ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া করতে, আড্ডা দিতে, কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে। যেহেতু আমাদের সময়টা অনুকূলে না, আমি সবাইকে অনুরোধ করব সবাই যেন এ ক্ষেত্রে নিয়মগুলো মেনে চলেন। কারণ আমাদের এই সামান্য আত্মত্যাগটুকুই পারে আমাদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে, সুস্থ রাখতে, আমাদের নিজেদেরও সুস্থ রাখতে। আশা করি আপনারা আমার এই কথাগুলো শুনবেন এবং কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো সংগঠন যেসব দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন, সেগুলোর ব্যাপারে অবগত হবেন, এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন।’

তিনি বলেন, ‘একটা কথা বলতে চাই, কেউ প্যানিক হবেন না। প্যানিক হওয়া আমার মতে ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে না। আমরা সংবাদমাধ্যমগুলোতে দেখি যে অনেকে তিন, চার কিংবা ছয় মাসের জন্যও খাবার সংগ্রহ করছে। আমার ধারণা খাবারের ঘাটতি কখনোই হবে না, ইনশাল্লাহ।’

সাকিব আরো বলেন, ‘আমরা কেউ না খেয়ে মারা যাব না। তাই আমরা প্যানিক হবো না। কিছু সঠিক সিদ্ধান্তই আমাদের এই বিপদ থেকে মুক্ত করতে আর সেটা সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব। আরেকটা কথা বলতে ভুলে গেছি, খুব প্রয়োজন ছাড়া এই সময় ভ্রমণ কিংবা ঘরের বাইরে বের হবেন না। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, নিজের যত্ন নেবেন এবং পরিবারের খেয়াল রাখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।’

বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে গেছেন সাকিব। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেই হোটেল রুমে নিজেকে আইসোলেশনে রেখেছেন তিনি।

চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে সারা বিশ্বে। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছে দুই জন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত