উন্নয়ন ইতিহাস বিষয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার

জাতীয় উন্নয়নে জাতিসত্ত্বার শেকড় সন্ধানের গুরুত্ব

প্রকাশ : ২২ মে ২০২২, ১৪:০৯

সাহস ডেস্ক

একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নে তার ইতিহাসের ব্যবচ্ছেদ জরুরী। একটি জাতির সমৃদ্ধ ইতিহাস তার টেকসই উন্নয়নের পটভূমি তৈরি করে দেয়। জাতির আত্ত্বিক, তাত্ত্বিক, বাহ্যিক সকল উন্নয়ন আবর্তিত হয় তার পেছনে ফেলে আসা ইতিহাস ঘিরে। তাই যে কোন জাতির জন্যই তার উন্নয়ন ইতিহাস তার সমৃদ্ধির ধারক।

আর সেই প্রয়োজন থেকেই গত ২০ মে বিকাল ৪ টায় রাজধানী ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৫ম তলায় প্রথমবারের মতো হয়ে গেল উন্নয়ন ইতিহাস বিষয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার ফর ইনোভেশন এন্ড লার্নিং(জিসিএফআইএল) এবং উন্মুক্ত গবেষণা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ওপেন একসেস বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে উক্ত সেমিনারের বিষয় ছিলো 'Development History and Bangladesh: Why History Matters for Development Practice?'

সেমিনারের প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেমস ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক ড. মাইকেল গুবশের (Dr. Michael Gubser)। ড. গুবশের তাঁর আলোচনায় ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব এবং বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো কিভাবে ইতিহাস দায় ধরে রেখেই নিজেদের উন্নয়ন ঘটাতে পারে সেদিকে আলোকপাত করেন। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের আরও সঠিকভাবে কাজ করার জন্য এদেশের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে মানুষের চিন্তার পদ্ধতিকে বোঝার ওপর জোর দেন।

সেমিনারে প্যানেল স্পিকার হিসেবে আলোচনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. মনজুর আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. মামুন আল মাহতাব এবং যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি, সাংবাদিক মোঃ মাহফুজুর রহমান মিশু। তারা ড. গুবশেরের বক্তব্যের সূত্র ধরেই সুপ্রাচীন কাল হতে বর্তমান পর্যন্ত বাংলা অঞ্চল, জনগোষ্ঠী ও জাতি সত্ত্বার পরিচয় বিশ্লেষণ করেন, এই জাতির সমস্যাগুলো তুলে ধরেন এবং সমাধানের উপর আলোকপাত করেন। একই সাথে ইতিহাস চর্চা একটি দেশ ও সমাজের উন্নয়নের পথে কতোটা মূল্যবান সে বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন বক্তারা।

বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, যে উপাদানগুলো একটা জাতির উত্তরণের সাথে জড়িয়ে থাকে – গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এর কোনটাই পৃথিবীর কোনদেশেই শতভাগ মেনে চলা হয় না। এমনকি যে দেশকে আধুনিক বিশ্বের মোড়ল বিবেচনা করা হয়, সেই খোদ আমেরিকার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় তারাও এসবক্ষেত্রে শতভাগ অর্জন দাবী করতে পারে না। এ বাস্তবতা মেনে নিয়েই জাতিগত উন্নয়নের কাঠামো তৈরির উপর জোর দেন তাঁরা।

শিক্ষক, গবেষক, ইতিহাসবিদ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে আলোচনা শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেমিনারের শেষভাগে দেশের উন্নয়ন ইতিহাস চর্চায় অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য হাক্কানী পাবলিশার্সের স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফা এবং শিক্ষক, গবেষক ড. মঞ্জুরুল মান্নানকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত