লকডাউনের মধ্যে শতাধিক লোক নিয়ে ইউএনও’র ইফতার পার্টি

প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১৭:৫৯

তাজুল ইসলাম তছলিম

সরকারি সিদ্বান্ত অমান্য করে লকডাউনের মধ্যে প্রথম রমজানে ইফতার ও নৈশ ভোজের আয়োজন করেন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলা অফিসার্স ক্লাবে এই পার্টির আয়োজন করেন তিনি।

এসময় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকসহ প্রায় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ কয়েকজন স্বপরিবারে উপস্থিত ছিলেন এই পার্টিতে।

লকাডাউনের মধ্যে যেখানে সাধারণ মানুষের বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ। রাস্তায় বের হলে সাধারণ মানুষকে দিতে হয় ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা। সেখানে সকল নিয়ম উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের ভিতরে শতাধিক লোকের খাওয়ার এই আয়োজন করেন স্বয়ং উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে হাতিয়ার উপজেলা সদরে পাড়ায় মহল্লায় ব্যাপাক সমালোচনা করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে।

পার্টিতে ছিল কয়েক আইটেমের উন্নত মানের ইফতারের আয়োজন। সাথে ছিল বিরিয়ানি দিয়ে নৈশ ভোজের ব্যবস্থা। এই আয়োজনের রান্নার দায়িত্ব দেওয়া হাতিয়ার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে খ্যাতি সম্পন্ন বাবুর্চি বাবুলকে। আলাপকালে বাবুল জানান, সকাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে এই রান্না শুরু করি। ইফতারের পূর্বেই সকল রান্না অফিসার্স ক্লাবে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যে পরিমান রান্না করা হয়েছে তাতে শাতাধিক লোক খুব ভালো ভাবে খেতে পারবে।

অফিসার্স ক্লাবের এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন। করোনার এই সময়ে এ ধরনের পার্টি করে মানুষের সমাগম করা একজন দায়িত্বশীল ব্যাক্তির সমিচিন হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন জানান, আমি প্রথমে মনে করেছি মানুষের উপস্থিতি কম হবে, পরে গিয়ে দেখি অনেক লোকের উপস্থিতি। পরিবেশ দেখে চলে আসার ইচ্চা থাকলেও সামাজিকতার কারণে চলে আসতে পারিনি।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসাবে এই ধরনের পার্টি করা সঠিক হয়নি বলে আয়োজককে সতর্ক করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার নাজিম বলেন, তিনি আমার চেয়েও বড় অফিসার তাই সতর্ক করতে পারিনি।

উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা কর্মকর্তা ভবরঞ্জন দাস বলেন, এটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একান্ত নিজস্ব পার্টি। প্রথমে এই আয়োজনটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে করার কথা ছিল। কিন্ত বাসায় জায়গা সংকুলন না হওয়ায় অফিসার্স ক্লাবে করা হয়েছে। করোনা মহামারিতে লকডাউন চলাকালীন এই ধরনের আয়োজন করা সঠিক হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি কোন উত্তর দিতে রাজি হননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরান হোসেন বলেন, এটি কোন বড় প্রোগ্রাম ছিল না। শুধু আমাদের অফিসারদের নিয়ে একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত