দেশের ৭০% মানুষ Genocide Survivor

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:২১

আমার নিকট পরিবারে কেউ ১৯৭১ সালে শহীদ হননি (আমার দাদির এক ভাই শহীদ হন, দাদির ভাইকে তো নিকট পরিবার বলা যাচ্ছে না)। তবে আমার মায়ের দিকের পরিবার ১৯৭১ সালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। এদিকে আমার বাবার পরিবার ১৯৭১ সালে আমাদের ফেনীর গ্রামের বাড়ি থেকে ভারতে শরণার্থী হয়ে যান।

অর্থাৎ দুটো পরিবারই ১৯৭১ সালের প্রভাবে মাইগ্রেশন করতে বাধ্য হন। মায়ের পরিবার ইন্টারনালি মাইগ্রেটেড আর বাবার পরিবারের হয়েছিল এক্সটার্নাল মাইগ্রেশন।

আপনি যদি Holocaust Survivor এর সংজ্ঞা পড়েন তাহলে দেখবেন এটার মানে বলতে বোঝায় "Jews who survived the persecution and attempted annihilation of the Jewish people by Nazi Germany and its allies in Europe and North Africa during the Holocaust before and during World War II" অর্থাৎ যেই ইহুদিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে নাজি বাহিনী ও তার বন্ধুরাষ্ট্রদের হাতে সংগঠিত গণহত্যার সময় কোনভাবে প্রাণটা বাঁচাতে পেরেছিলেন।

Holocaust Survivors দের অনেক ধরণ আছে, তবে সবচেয়ে বড় সম্পর্কে গ্রুপ বলা হয় "The largest group of survivors were the Jews who managed to escape from German-occupied Europe before or during the war"। অর্থাৎ যারা জার্মানদের অকুপাইড এলাকা থেকে পালাতে পেরেছিল, অর্থাৎ এক্সটার্নাল ইন্টারনাল সবাই।

১৯৭১ সালে ১ কোটির বেশি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন আবার ৩-৪ কোটির বেশি মানুষকে সবগুলো শহর এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত কম বিপদজনক গ্রামে আশ্রয় নিতে হয়েছে।

এই মানুষগুলো কেন শরণার্থী জীবন বেছে নিয়েছিলেন? কারণ তারা আশঙ্কা করছিলেন তারা এখন যেখানে আছেন সেখানে থাকলে তাদের হত্যা করা হতে পারে। রিস্ক না থাকলে কোন পরিবারতো সাজানো জীবন, চাকরি-বাকরি রেখে মাথায় মাল-সামাল নিয়ে মাইগ্রেশন করবে না।

৭.৫ কোটি মানুষের দেশে ৪ থেকে ৫ কোটি মানুষ তাহলে বলতে হচ্ছে Genocide Survivor অর্থাৎ জেনসাইডে প্রাণটা বাঁচাতে পেরেছেন অর্থাৎ এই মানুষদের প্রাণহানীর আশঙ্কা ছিল।

উপরের এই তথ্যগুলো সত্য হয়ে থাকলে ১৯৭১ সালে এই জনগোষ্ঠীর ৭০% মানুষকে দেশের ভেতরে এবং বাইরে ছুটোছুটি করতে হয়েছে প্রাণ বাঁচাতে। জাতিসংঘ এই কারণটাকে ব্যাখ্যা বলছে ‘well-founded fear of persecution on account of race, religion, nationality, membership in a political social group, or political opinion’।

এই যে আমার বাবা, আমার মা, আপনার বাবা, আপনার মা আমাদের বৃহত্তর পরিবারের সবাই যারা ১৯৭১ দেখেছেন তাদের অধিকাংশই Genocide Survivor এই বিষয়টা আমাদের বাবা-মা অনেক ক্ষেত্রেই বোঝেন না।

Holocaust Survivors দের স্মৃতি সংরক্ষণে পৃথিবীর ব্যাপক আগ্রহ আছে। আমাদের দেশেও প্রজন্মের আগ্রহ দেখা যায় নিজের জন্মযুদ্ধের ইতিহাসকে জানার। সমস্যাটা হচ্ছে আমরা ইতিহাসটাকে কিছু কেন্দ্রীয় প্রশ্নের ভেতরে রেখে একই সার্কেলে পাক খাওয়াচ্ছি বারেবার। সার্ভাইভ যারা করেছে তাদের কাছে যদি আমরা যাইও তাদের অভিজ্ঞতা জানার চাইতে আমাদের বেশি জানার আগ্রহ কেন্দ্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর।

কাজ করার আগ্রহ থাকলে চলুন বাড়ির পাশের আরশিনগরে যাই। নিজের পরিবারের কাছে যাই। ৭০% সম্ভাবনা আছে আপনার নিকট পরিবারের সদস্য, আপনার মা-খালা-দাদি একেকজন Genocide Survivor! সারা দুনিয়ায় Genocide Survivor বলতে কি বোঝায় সেটা ওনারা জানেন-না দেখেই হয়তো বুঝতে পারেন না তাদের অভিজ্ঞতার মূল্য কি!

আমার নিকট পরিবারে কেউ ১৯৭১ সালে শহীদ হননি (আমার দাদির এক ভাই শহীদ হন, দাদির ভাইকে তো নিকট পরিবার বলা যাচ্ছে না)। তবে আমার মায়ের দিকের পরিবার ১৯৭১ সালে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। এদিকে আমার বাবার পরিবার ১৯৭১ সালে আমাদের ফেনীর গ্রামের বাড়ি থেকে ভারতে শরণার্থী হয়ে যান।

অর্থাৎ দুটো পরিবারই ১৯৭১ সালের প্রভাবে মাইগ্রেশন করতে বাধ্য হন। মায়ের পরিবার ইন্টারনালি মাইগ্রেটেড আর বাবার পরিবারের হয়েছিল এক্সটার্নাল মাইগ্রেশন।

আপনি যদি Holocaust Survivor এর সংজ্ঞা পড়েন তাহলে দেখবেন এটার মানে বলতে বোঝায় "Jews who survived the persecution and attempted annihilation of the Jewish people by Nazi Germany and its allies in Europe and North Africa during the Holocaust before and during World War II" অর্থাৎ যেই ইহুদিরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে নাজি বাহিনী ও তার বন্ধুরাষ্ট্রদের হাতে সংগঠিত গণহত্যার সময় কোনভাবে প্রাণটা বাঁচাতে পেরেছিলেন।

Holocaust Survivors দের অনেক ধরণ আছে, তবে সবচেয়ে বড় সম্পর্কে গ্রুপ বলা হয় "The largest group of survivors were the Jews who managed to escape from German-occupied Europe before or during the war"। অর্থাৎ যারা জার্মানদের অকুপাইড এলাকা থেকে পালাতে পেরেছিল, অর্থাৎ এক্সটার্নাল ইন্টারনাল সবাই।

১৯৭১ সালে ১ কোটির বেশি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন আবার ৩-৪ কোটির বেশি মানুষকে সবগুলো শহর এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত কম বিপদজনক গ্রামে আশ্রয় নিতে হয়েছে।

এই মানুষগুলো কেন শরণার্থী জীবন বেছে নিয়েছিলেন? কারণ তারা আশঙ্কা করছিলেন তারা এখন যেখানে আছেন সেখানে থাকলে তাদের হত্যা করা হতে পারে। রিস্ক না থাকলে কোন পরিবারতো সাজানো জীবন, চাকরি-বাকরি রেখে মাথায় মাল-সামাল নিয়ে মাইগ্রেশন করবে না।

৭.৫ কোটি মানুষের দেশে ৪ থেকে ৫ কোটি মানুষ তাহলে বলতে হচ্ছে Genocide Survivor অর্থাৎ জেনসাইডে প্রাণটা বাঁচাতে পেরেছেন অর্থাৎ এই মানুষদের প্রাণহানীর আশঙ্কা ছিল।

উপরের এই তথ্যগুলো সত্য হয়ে থাকলে ১৯৭১ সালে এই জনগোষ্ঠীর ৭০% মানুষকে দেশের ভেতরে এবং বাইরে ছুটোছুটি করতে হয়েছে প্রাণ বাঁচাতে। জাতিসংঘ এই কারণটাকে ব্যাখ্যা বলছে ‘well-founded fear of persecution on account of race, religion, nationality, membership in a political social group, or political opinion’।

এই যে আমার বাবা, আমার মা, আপনার বাবা, আপনার মা আমাদের বৃহত্তর পরিবারের সবাই যারা ১৯৭১ দেখেছেন তাদের অধিকাংশই Genocide Survivor এই বিষয়টা আমাদের বাবা-মা অনেক ক্ষেত্রেই বোঝেন না।

Holocaust Survivors দের স্মৃতি সংরক্ষণে পৃথিবীর ব্যাপক আগ্রহ আছে। আমাদের দেশেও প্রজন্মের আগ্রহ দেখা যায় নিজের জন্মযুদ্ধের ইতিহাসকে জানার। সমস্যাটা হচ্ছে আমরা ইতিহাসটাকে কিছু কেন্দ্রীয় প্রশ্নের ভেতরে রেখে একই সার্কেলে পাক খাওয়াচ্ছি বারেবার। সার্ভাইভ যারা করেছে তাদের কাছে যদি আমরা যাইও তাদের অভিজ্ঞতা জানার চাইতে আমাদের বেশি জানার আগ্রহ কেন্দ্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর।

কাজ করার আগ্রহ থাকলে চলুন বাড়ির পাশের আরশিনগরে যাই। নিজের পরিবারের কাছে যাই। ৭০% সম্ভাবনা আছে আপনার নিকট পরিবারের সদস্য, আপনার মা-খালা-দাদি একেকজন Genocide Survivor! সারা দুনিয়ায় Genocide Survivor বলতে কি বোঝায় সেটা ওনারা জানেন-না দেখেই হয়তো বুঝতে পারেন না তাদের অভিজ্ঞতার মূল্য কি!

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

লেখকদের নামঃ