খ্যাতিতে ঐতিহ্যবাহী রামগতির মিষ্টি

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২১, ১৬:২৯

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামগতি বাজারের মিষ্টি, জিভে স্বাদ লেগে থাকা এ মজাদার মিষ্টির পুরোনো ইতিহাস রয়েছে। রয়েছে দারুণ খ্যাতি! খুশির খবরে ও কাউকে খুশি করতে রয়েছে এ মিষ্টির ব্যাপক চাহিদা। উৎসব আর পাবনে প্রচুর চাহিদার কারণে হিমশিম খেতে হয় এ পেশার কারিগরদের। যেকোনো উৎসব, অনুষ্ঠান, অতিথি আপ্যায়নে পরিতৃপ্তির জন্য বাঙালীর খাদ্য তালিকায় মিষ্টি ছাড়া যেন অসম্ভব।

প্রতিদিন গ্রাম থেকে দুধ সংগ্রহ করে মিষ্টি তৈরি হয় দুধের ছানা দিয়ে। সকালে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গোয়ালাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি দুধ। গৃহপালিত গরুর দুধই এখানে বেশি ব্যবহার করা হয়। সেই দুধ দিয়ে দুপুর ১ টার মধ্যে মিষ্টি প্রস্তুত করেন কারিগরেরা। এই কারিগরদের অনেকের মিষ্টি বানানোর ৩৫ থেকে ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

প্রতিদিন ছানার মিষ্টির জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে রামগতি বাজারের প্রসিদ্ধ কিছু দোকানের জন্য ৩০০ লিটারের অধিক দুধ আসে এসব মিষ্টি ভান্ডারের রান্নাঘরে। ছানা তৈরি করার জন্য আগে দুধ চুলায় ফোটানো হয়। ফোটানোর পর তাতে সিরকা বা ভিনেগার দেওয়া হয়। তবে পুরোনো রীতি অনুযায়ী তারা ব্যবহার করেন ছানার পানি। ঠান্ডা হয়ে গেলে এই দুধের পানি আর ছানা আলাদা হয়ে যায়। একটু পর সেগুলো পরিষ্কার সুতি কাপড়ে বেঁধে পানি ঝরাতে দেওয়া হয়। পুরো পানি ঝরে গেলে তৈরি হয়ে যায় ছানা।

কনক মিষ্টান্ন ভান্ডারের কারিগর ও সত্বধিকারী রুপেশ দাশ জানান, রামগতিতে মধ্যে প্রথম নামকরা মিষ্টির দোকান ছিলো কালা সাহার। এখনো সুনামের সাথে কার্যক্রম রয়েছে তাদের। এরপর প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান হয়েছিল বঙ্কিম চন্দ্র দে পরিচালিত রামগতির মিষ্টি মুখ। যা ৪০ বছরেরও অধিক সময় ধরে সুনামের মিষ্টি তৈরি করে আসছেন। আমি নিজেও তাদের কারিগর ছিলাম ১০ বছর এরপর আমি নিজে প্রতিষ্ঠান চালু করি। আমার প্রতিষ্ঠানের বয়সও ৩০ বছরের অধিক।

রামগতির মিষ্টি মুখের মালিক বঙ্কিম চন্দ্র দে বলেন, ছানাকে হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গোলাকৃতির অবয়ব তৈরি করে তা জ্বলন্ত চুলার মধ্যে ফুটন্ত শিরায় ছেড়ে দিই। ব্যস! তৈরি হয় রসালো স্বাদের মিষ্টি। প্রতি ৫ লিটার দুধে বড় সাইজের ৭৫ পিস এবং ছোট সাইজের ১৫০ পিস মিষ্টি তৈরি করা যায়।

প্রতি পিস বড় সাইজের মিষ্টির ১০ টাকা ও ছোট সাইজের মিষ্টি ৬ টাকা। এখানে কেজিতে মিষ্টি বিক্রি হয় না তাই, প্রতি পিস হিসেবে বিক্রি হয় প্রচলিত নিয়মে।

অতুলনীয় স্বাদের কথা বললেই মিষ্টি প্রেমী মানুষ লক্ষ্মীপুরের দক্ষিণাঞ্চল তথা উপকূলীয় উপজেলা রামগতির বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির নাম স্মরন করে থাকেন। এর প্রধান কারণ, এ মিষ্টির স্বাদের বিশেষত্ব, শতভাগ ছানা এবং বৈচিত্র্য। যা এখনও এ মিষ্টির খ্যাতি দেশ বিদেশে বহন করে চলেছে।

সাহস২৪.কম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত