ক্যানসারের মত রোগ তৈরির জন্য দায়ী এসব হেভি মেটাল

ক্ষতিকারক মাত্রায় আর্সেনিক ও সীসার মতো ভারী ধাতু পাওয়া গেল চালে!

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৪, ১৯:১৪

Desk Report

সবজির পর এবার গবেষণায় প্রধান খাদ্যশস্য চালেও পাওয়া গেল হেভি মেটাল বা ভারী ধাতুর উপস্থিতি। মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সচরাচর খাওয়া হয়, এমন সব চালের নমুনায় আর্সেনিক, সীসার মতো ভারী ধাতু ক্ষতিকারক মাত্রায় পাওয়া গেছে।

সংগ্রহ করা চালের মধ্যে সিসা ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে কেজিতে সর্বনিম্ন ০.০১ মিলিগ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ১.০৮ মিলিগ্রাম। ইউএসইপিএ-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, সীসার স্বাভাবিক মাত্রা কেজিতে ০.০০০০০১ মিলিগ্রাম। একইভাবে, আর্সেনিকের মাত্রা ছিল প্রতিকেজিতে ০.০৪ থেকে ০.৩৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. নাজমা শাহীনের নেতৃত্বে গবেষকরা ঢাকা শহরের চারটি পাইকারি বাজার থেকে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় এমন নাজিরশাইল, মিনিকেট, পাজাম, কাটারী, বাসমতি, কালীজিরা চিনিগুড়া, ব্রি-৩২, বাশফুল, লালবিরুই, এই ১০ ধরনের চালের নমুনা সংগ্রহ করেন।

এসব চালের নমুনা পরীক্ষা করে আর্সেনিক, সীসা, ক্রোমিয়াম, কপার, ক্যাডমিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, মার্কারি, নিকেলের মতো ভারী ধাতু এবং বিষাক্ত উপাদান ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে। 

গবেষণায় মানুষের শরীরে এসব ভারী ধাতুর কার্সিনোজেনিক এবং নন-কার্সিনোজেনিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথাও তুলে ধরা হয়েছে।

এই দুটি ভারী ধাতুই মানুষের শরীরে ক্যানসার তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া, বাকিগুলো নন-কার্সিওজেনিক নানান রোগের জন্য দায়ী হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবারের মাধ্যমে নিয়মতিভাবে এসব হেভি মেটাল শরীরে প্রবেশ করলে ক্যানসারের মত প্রাণঘাতী রোগের পাশাপাশি উচ্চরক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, ডায়াবেটিস, হিমোগ্লোবিন সংশ্লেষণে বাধা, প্রস্রাবে সমস্যা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি, মূত্রনালীর সংক্রমণসহ গুরুতর রোগ বাসা বাঁধতে পারে মানুষের শরীরে।

হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, "লেডের মত হেভি মেটাল ক্যানসারের মত রোগ তৈরির জন্য দায়ী। এ ধরনের হেভি মেটাল একজন মানুষ  কী পরিমাণে গ্রহণ করছেন, তার ওপর এর প্রভাব নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে লম্বা সময় ধরে গ্রহণের ফলে কারও ক্যানসারও হতে পারে, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে কম সময়েও এটি হতে পারে।" 

তিনি বলেন, "শিশু এবং গর্ভবতী মায়েদের জন্য ভারী ধাতু খুব খারাপ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এজন্য আমাদের উচিত খাবারে যাতে ভারী ধাতুর প্রবেশ বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।