কৃষকের গোয়ালঘর থেকে মেছো বিড়াল আটক

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০২২, ২০:০৩ | আপডেট: ০৮ জুন ২০২২, ২০:২৪

অনলাইন ডেস্ক

বরগুনার পাথরঘাটায় এক কৃষকের গোয়ালঘর থেকে একটি মেছো বিড়াল আটক করেছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার (৭ জুন) বিকেলে পাথরঘাটার কালমেঘা এলাকার কৃষক চান মিয়ার গোয়ালঘরে এটিকে আটক করে। বুধবার (৮ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা জানান, “মঙ্গলবার মধ্যরাতে গোয়ালঘরে গরুর ছোটাছুটি টের পেয়ে গোয়ালঘরে যান চান মিয়া। তিনি দৌড়ে সেখানে গিয়ে দেখতে পান বাঘটি গরুর ওপর হামলে পড়েছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঘটিকে বন্দী করা হয়।”

মেছো বিড়াল ধরতে গিয়ে আহত হওয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘দুই মাস ধরে এ বাঘটির তাড়নায় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। বাঘটি এলাকার মানুষের হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল, কবুতরসহ গৃহপালিত নানা প্রাণি মেরে ফেলেছে। এর ভয়ে সবাই আতঙ্কিত ছিল। আজ মশারি দিয়ে অনেক কষ্টে ৭ ফুট লম্বা বাঘটিকে আটক করি। এ সময় আমিসহ চারজন বাঘটির আক্রমণে আহত হই ”

ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক সাবিত হাসান প্রাণিটিকে মোছ বিড়াল নিশ্চিত করে তিনি দৈনিক সাহসকে বলেন, মেছো বিড়ালকে (Fishing Cat) অনেক এলাকায় মেছোবাঘ নামেও ডাকে। এর প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল। কিন্তু বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না। বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও  ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণি মেছো বিড়াল। আইইউসিএন ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করে। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
 
রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, চান মিয়া নামের একজনের গোয়ালঘর থেকে মেছো বিড়ালটি উদ্ধার করা হয় বুধবার (৮ জুন) বেলা ১১টার দিকে। এরপর এটি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চিকিৎসা দেওয়া হয়। খাবার ও চিকিৎসা শেষে বুধবার (৮ জুন)পাথরঘাটা হরিণঘাটা বনে অবমুক্ত করা হবে।

সাহস২৪.কম/এবি