সোমেশ্বরীতে ভেসে এলো সংকটাপন্ন প্রাণী মেছো বিড়াল

প্রকাশ : ২২ মে ২০২১, ১৩:১৫

সাহস ডেস্ক

নেত্রকোনার দুর্গাপুর সোমেশ্বরী নদীতে ভেসে আসা একটি মেছো বিড়ালের ছানা উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। 

২১ মে (শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের রানীখং গ্রামের নদীর পাড় থেকে প্রাণীটি উদ্ধার করেন স্থানীয় কয়লা শ্রমিক আব্দুল লতিফ।

স্থানীয়দের ধারণা, ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের জঙ্গল থেকে পরিবারের সাথে পানি খেতে নেমে স্রোতের টানে প্রাণীটি ভেসে এসেছে। উদ্ধারের পর প্রাণীটিকে বিড়াল ছানা মনে করলেও শরীরের কালো দাগ দেখে অনেকেই সেটিকে বাঘের ছানা ভাবতে শুরু করের। মুর্হুতেই এলাকায় বাঘের ছানা উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে দূরদূরান্ত থেকে প্রাণীটিকে একনজর দেখতে ভিড় করেন অনেকে। 

বন্যপ্রাণী উদ্ধারের খবর ‘সেভ দা এনিমেল অফ সুসং’সংগঠনের কাছে পৌঁছালে তারা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানান। পরে প্রাণীটি অসুস্থ থাকায় প্রাথমিক পরিচর্যার জন্য উপজেলা নিবার্হী অফিসারের সহযোগিতায় রাতেই বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন সংগঠনটির সদস্যরা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব উল আহসান বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রাণীটিকে উদ্ধারের সংবাদ পাওয়ার পর পরই বন বিভাগকে খবর দিয়েছি যাতে সুস্থভাবেই আবারও প্রাণীটিকে বনে অবমুক্ত করা যায়। 

 

বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা প্রাণীটিকে মেছো বিড়াল বলে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, মেছো বিড়ালকে (Fishing Cat) অনেক এলাকায় মেছোবাঘ নামেও ডাকে। এর প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল। বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না, বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে।


 আরও পড়ুন - আজ বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস


তিনি আরও বলেন,জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে আইইউসিএন। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা বা এর কোনো ক্ষতিকরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত