জেনে নেই ঘূর্ণিঝড়ের সংকেতগুলোর অর্থ

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ১১:৫২

সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টি হলে আবহাওয়া অফিস থেকে উপকূল সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন সংকেত পাঠিয়ে সর্তক করা হয়। ১ থেকে ১১ পর্যন্ত নম্বর আর সংকেত দিয়ে বোঝানো হয় বিপদ, মহাবিপদ বা ঝড়ের ভয়াবহতার কথা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল প্রায় পৌঁছে গেছে বাংলাদেশে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৯ নং বিপদসংকেত ও মংলা-পায়রা বন্দরে ১০ নং বিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই ঝড়ের উৎপত্তি আন্দামান সাগরে, এটি বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে আজ আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়টি সুন্দরবন ও পটুয়াখালী উপকূলে আঘাত হানতে পারে। গতকাল শুক্রবার রাতে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ঝড়ের সময় আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া সমুদ্রের ক্ষেত্রে ১১টি সংকেত নির্ধারিত আছে। সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১টি সংকেত:

১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: এর অর্থ হলো জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুযোগপূর্ণ আবহাওয়া সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার। সে ঝড়ো হাওয়া সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত: গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঝড়ে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। তবে সমুদ্রবন্দর ও উপকুলীয় অঞ্চল এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত: বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং একটানা ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঘূর্ণি বাতাস বইতে পারে। সে কারণে বন্দর ও বন্দরে নোঙ্গর ফেলা জাহাজগুলো দুর্যোগে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত: বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিলোমিটার। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো বিপদজনক পরিস্থিতি এখনও হয়নি।

৫ নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি ধরণের এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬ নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭ নং বিপদ সংকেত: বন্দর মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার। ঝড়টি বন্দরকে ওপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে। এ বেলায় প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার চেয়েও বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের ওপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত: আবহাওয়া বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দুযোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত