বিদ্যালয়ের মেঝেতে পানি উঠে পাঠদান ব্যাহত

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৫০

সাহস ডেস্ক
ছবি: সাহস

বর্ষাকালে বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা ও মেঝেতে পানি উঠলেই টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাহত হয় পাঠদান কার্যক্রম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি মেঝে থেকে নেমে গেলেও বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে পারছেন না শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা ও মেঝেতে পানি উঠলেই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বর্ষাকালে নৌকায় করেই বিদ্যালয়ে আসতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। 

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপজেলায় ২৬ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১ টি মাদরাসা এবং ৩টি কলেজ রয়েছে।

চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার তন্নি বলেন, বর্ষা হলে স্কুলের চারপাশে পানি উঠে আমরা পড়াশোনা করতে পারি না। কয়েকদিন আগেও পানি উঠেছিল তখন স্কুলেও যেতে পারি নাই। টাগই (কচুরি) পানায় ভরে গেছে চারপাশ নৌকা নিয়ে আসতেও কষ্ট হয়। অন্যান্য স্কুল খোলা আছে কিন্তু আমাদের স্কুল বন্ধ। আমরা পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। আমরা সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই। 

আরেক শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, কষ্ট করে আমাদের ক্লাসে আসতে হয়। চারপাশে পানি আর পানা দিয়ে ভরে গেছে। আমরা সুন্দর পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই। 
 
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া জানান, দুই বছর ধরে শুনতেছি বিদ্যালয়টির নতুন ভবন করা হবে। এখনো কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এই এলাকাটি নিম্ন অঞ্চল হওয়াতে বর্ষাকাল আসলে মাঠে ও মেঝেতে পানি উঠে। তখন শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বিদ্যালয়ের মেঝে থেকে পানি নেমে গেছে। বিদ্যালয়ের চারপাশেই কচুরিপানা রয়েছে। দ্রুতই বিদ্যালয়ের নতুন ভবণ করা উচিত।

রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা আক্তার পপি বলেন, আমি ২০১৮ সালে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর থেকেই আমি চেষ্টা করতেছি নতুন ভবন ও বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র আনার জন্য। নিচে খোলা থাকবে আর উপরে পাঠদান চলবে। গতবছরও আবেদন করছি। ২০২১ সালে যখন বড় বন্যা হয় তখনো ছবিসহ আবেদন করছি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এবছরও আমি অফিসারদের ম্যাসেঞ্জারে বিদ্যালয়ের ছবি পাঠিয়েছি। ওনারা যদি ব্যবস্থা না নেই আমার তো করার কিছু নাই।

তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা রয়েছে। বিদ্যালয়ের  মেঝেতে এক ফুট পানি ছিল। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার তিনটি পরীক্ষা বিদ্যালয়ে নিতে পারলেও আর তিনটি পরীক্ষা রাশড়া করিম বাজার গ্লোবাল কিন্ডার গার্ডেনে নিতে হয়েছে। তিনটি পরীক্ষা নেওয়ার পর বিদ্যালয়ের মেঝেতে পানি চলে আসে। পানি মেঝে থেকে নেমে গেলেও বিদ্যালয়ের চারপাশে কচুরিপানা রয়েছে। আশা করছি সামনে সপ্তাহে থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালু করতে পারবো। জানতে পেরেছি এই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন আসবে ২৭ নম্বর লিস্টে আছে। যে বিদ্যালয়টি প্রথম থাকার কথা। 

বাসাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনজুম আরা বেগম বীথি জানান, আমি এই উপজেলাতে নতুন এসেছি। শুনতে পেরেছি এই বিদ্যালয়টিতে প্রতি বছর পানি উঠে। আমি নতুন আসলেও রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। শুধু রাশড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না আরও কিছু বিদ্যালয়ে পানি উঠে। এই বিদ্যালয় গুলো বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র করা দরকার ছিল।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত