ইন্টারনেট সেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট কুবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫৮

অনলাইন ডেস্ক

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে  ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) সংযোগের আওতায় আনার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও দুর্বল গতির কারণে ইন্টারনেট নিয়ে ব্যবহার করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে স্থাপন করা দ্রুত গতির ইন্টারনেট (ওয়াইফাই) এর মান নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর অর্থায়নে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) কর্তৃক ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ডরমিটরি, আবাসিক হলগুলোসহ কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওয়াইফাইয়ের গতি খুবই ধীরগতির হওয়ায় তা ব্যবহার অনুপযোগী। আবার ব্যবহার করতে গেলে বারবার ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ধীরগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন কিছু করা যায় না। অনেক সময় নিয়ে লোডিং হওয়ায় ভোগান্তিতে আছেন শিক্ষার্থীরা।

ইন্টারনেটের ধীরগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাইয়ের অবস্থা খুবই বাজে। ওয়াইফাই নামে আছে, কোনো কাজে নেই। আমাদের অনেক সময় ইন্টারনেট থেকে বই পড়তে হয়। কিন্তু ইন্টারনেট দিয়ে কানেকশন পাই না।

তবে সবচেয়ে ভোগান্তিতে আছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত শেখ হাসিনা হল (মেয়ে) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের (ছেলে) বর্ধিতাংশে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা হল উদ্বোধন হওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও ওয়াইফাই স্থাপন করা হয়নি হল গুলোতে। ফলে মোবাইল ডাটা কিনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের।

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাজী সাদিয়া মোন্নাফ অভিযোগ করে বলেন, হলে মোবাইল নেটওয়ার্ক এর অনেক সমস্যা, যেই কারণে ডাটা কেনা থাকলেও সেটা ঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় না। ওয়াইফাই থাকলে ক্লাসসহ যাবতীয় কাজ ইজিলি করা যেত। ওয়াইফাই নাই এই কারণে মাসে অনেক টাকা শুধু ডাটা কিনতেই চলে যায়, বাসা থেকে থাকা-খাওয়ার যে টাকা দেয় সেই টাকা থেকে অনেকটা শুধু মাত্র এই কারণেই চলে যায় অন্যদিকে কাজ শেষ হওয়ার অনেকদিন পার হয়ে গেলেও এখনও উদ্বোধন করা হয়নি বঙ্গবন্ধু হলের বর্ধিতাংশের।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের বর্ধিত অংশের আবাসিক শিক্ষার্থী পারভেজ মোশাররফ বলেন, নির্মিত হওয়ার একবছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের হলের বর্ধিত অংশের এখনও উদ্বোধন করা হয় নাই। আবাসন সংকট হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এখানে থাকতে বাধ্য হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের হলের বর্ধিতাংশের উদ্বোধন যেন অতিদ্রুত করা হয়। তাছাড়া আমাদের হলে ওয়াইফাই সংযোগ নেই তারজন্য শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে দিন পার করছে। আমাদের হলের ওয়াইফাইয়ের কাজ যেন অতিদ্রুত শেষ করা হয় এই দাবি জানাচ্ছি।

এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের সহকারী নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা দ্রুত দুই হলকে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসবো। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওয়াইফাইয়ের গতি নিয়ে যে অভিযোগ তা অতিদ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি। এসব কাজের জন্য যে পণ্যগুলো প্রয়োজন তা বাহির থেকে আমদানি করতে হয়। তাই একটু সময় লাগছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ধীর গতির ইন্টারিনেট নিয়ে যে অভিযোগ তা আমরা অতিদ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের উন্নত মানের ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে চাই। এলসিগুলো সিঙ্গাপুর থেকে আসবে, তাই একটু দেরি হচ্ছে। তবে আশা করি মার্চ-এপ্রিল মাস থেকে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট সেবা ভোগ করতে পারবে। একটু দেরি হলেও ভালো মানের সেবা পাবার আশায় আমরা অপেক্ষা করছি।

সাহস২৪.কম/এএম.