‘শালা’ নয় ‘ছেলে’ বলেছেন হেনস্তার শিকার হওয়া সেই কুবি শিক্ষক

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৫৭

সাহস ডেস্ক

সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত এবং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে তর্ক বির্তকের সময় শিক্ষক অমিত দত্ত শিক্ষার্থীকে ‘শালা’ বলেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা উঠেছে। তবে ভিডিওতে তিনি ‘ছেলে’ বলে শিক্ষার্থীদের সম্বোধন করেছেন বলেই শোনা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে যেসব কর্মকাণ্ড হচ্ছে তা অবিশ্বাস্য। অমিতকে আমি খুব ভালো করে চিনি। ‘এই ছেলে’ এটা সে হরহামেশাই বলে থাকে।

এ ঘটনার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, আমি অমিতকে ‘ছেলে’ বলতে শুনেছি। নিউজে যেই শব্দ চয়ন করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে সেটা যদি না বোঝার কারণে হয়ে থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি উদ্দেশ্যমূলক হয়ে থাকে তাহলে এটা দুঃখজনক।

ঘটনাস্থলে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্বপন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, আমি শুনেছি অমিত ‘এই ছেলে’ বলেছে। যারা তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে তারা একটি অপরাধকে আড়াল করার চেষ্টা করছে মাত্র।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমি সচেতনভাবে ছেলেই বলেছি, অন্য কোনো শব্দ বলিনি। আমাকে জড়িয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব শব্দ চয়ন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ গুজব। ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলো খেয়াল করে দেখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতারা হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করে শিক্ষক অমিত দত্তকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের টাইমলাইনে দেওয়ার ক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ তোলেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে স্যারকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিতে। না হলে হল থেকে বের করে দেবে বলে হুমকিও প্রদান করেছে। এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাজী নজরুল ইসলাম হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, এসব পোস্ট না দিলে হলে থাকতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছেন বড় ভাইরা। তাই বাধ্য হয়ে স্যারকে নিয়ে পোস্ট দিতে হয়েছে। এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, আমি এই বিষয় সম্পর্কে অবগত নই। কেউ যদি সম্পর্কের জায়গা থেকে বলে থাকে সেটা সম্পর্কে আমি জানি না। তবে এরকম কোন সাংগঠিনক আদেশ দেয় হয়নি।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে রেজা গ্রুপ ও ইলিয়াস গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনায় বসে প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রশাসন। আলোচনার এক পর্যায়ে ইলিয়াস গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতারা উত্তেজিত হয়ে রেজা গ্রুপের নেতাকর্মীদের রুম থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে ঘটনা সামাল দিতে এগিয়ে যান নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর অমিত দত্ত। এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘এই ছেলে আমি কে?’ এরপর শিক্ষার্থীদের মধ্যে এনায়েত উল্লাহ প্রত্ত্যুতরে বলে উঠেন ‘শিক্ষক’।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত