শিক্ষার্থীর স্ট্যাম্পের আঘাতে চিকিৎসাধীন শিক্ষকের মৃত্যু

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২২, ১৫:০১

সাহস ডেস্ক

সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষার্থীর স্ট্যাম্পের আঘাতে আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৭ জুন) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে তিনি মারা যান। এর আগে রবিবার (২৬ জুন) দুপুরে উপজেলার ইয়ারপুর ইউনিয়নের হাজী ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের মাঠে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এক বখাটে শিক্ষার্থী।

নিহত শিক্ষক উৎপল সরকার সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামের মৃত অজিত সরকারের ছেলে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জিতু (১৬) চিত্রশালাই এলাকার উজ্জ্বল হাজীর ছেলে এবং একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে ওই স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট খেলা চলছিলো। এ সময় ওই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা পূর্ব শক্রতার জের ধরে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মানবিক বিভাগের শিক্ষক উৎপল কুমারকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সোমবার সকালে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ওটি ইনচার্জ নাসির উদ্দিন।

হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর ছেলেদের ফুটবল ও মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করি। এবারও এই আয়োজন করা হয়েছিল। শনিবার মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। এ সময় প্রতিষ্ঠানের দুই তলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছেলেরা খেলা দেখছিল। ওই শিক্ষার্থীও দুই তলায় খেলা দেখছিল। সকাল থেকেই তার হাতে স্ট্যাম্পটি ছিল বলে জানতে পেরেছি। হঠাৎ সে দুই তলা থেকে নেমে মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে মারা যান ওই শিক্ষক।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি শিক্ষকের প্রতি ওই শিক্ষার্থীর কোনো ক্ষোভ ছিল।’

নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উশৃঙ্খলার কারণে শাসন করায় ওই ছাত্র আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক বলেন, ‘নিহত শিক্ষক  প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থাকায়  নিয়ম কানুন মানাতে সব শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন। তিনি জিতুকেও শাসন করেছিলেন। তাই সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত জিতুসহ নাম না জানা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

সাহস২৪.কম/এআর/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত