বেরোবি উপাচার্য কলিমউল্লাহকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২১, ০৩:৩৭

সাহস ডেস্ক

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম, দুর্নীতি, ঢাকায় বসে মিথ্যাচার এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে রংপুরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।

এছাড়াও বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে ক্যাম্পাসে। এ সময় তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

শিক্ষকদের পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঢাকায় বসে মিথ্যাচার, শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

ঢাকায় উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করা হয়েছে দাবি করে তার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক এই সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষকরা।

বেরোবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ভিসি হয়েও অনুপস্থিতি থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছে মতো পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক পদ দখল, ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন, উপাচার্যের অননুমোদিত ও অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেনিং, ঢাকাস্থ লিয়াজো অফিসে অতিরিক্ত খরচ, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, চরম শিক্ষক সংকটসহ নানান অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িত।

তিনি আরও বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির অভিযোগে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে তাকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ায় আজ তিনি ঢাকায় বসে মিথ্যাচার করেছেন। আমরা তার দায়িত্ব নেওয়ার দুই বছর পর অভিযোগ করেছি। কিন্তু তিনি সংবাদ সম্মেলনে আগের উপাচার্যের দোষ দিচ্ছেন। তাহলে দুই বছরে তিনি কী করলেন? তার সময়েই তো নকশা পরিবর্তনসহ যত দুর্নীতি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয়দের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভরিয়ে ফেলেছেন। নিজের কাছের লোক দিয়ে যতসব অনিয়ম করেই চলেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, উপাচার্য সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন৷ স্পিকারসহ সরকারের কর্তাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এমনকি ইউজিসি বিষয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। সরকারের উন্নয়নসহ সবকিছুর বিষয়েই তিনি বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। অতিসত্বর এসব মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো আমরা।

‘উপাচার্যের মদদে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছে এবং উপাচার্য নিজেও আইন অমান্য করে চলছেন, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ পড়াশুনার পরিবেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। আমরা চাই দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের শাস্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হোক।’

এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি এইচ এম তরিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড আব্দুল লতিফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম, দুর্নীতি, ঢাকায় বসে মিথ্যাচার এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে মশাল মিছিল ও তার কুশপুতুল দাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, তার দুর্নীতির তদন্ত করায় শিক্ষামন্ত্রীসহ ইউজিসির বিরুদ্ধে ঢাকায় বসে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পে তিনি অনিয়ম করে উল্টো তিনি সরকারের বিভিন্ন মহলের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করছেন। আমরা চাই অতিসত্তর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, বর্তমান উপাচার্য দিনের পর দিন ঢাকায় থেকে লিয়াজোঁ অফিসের নামে অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করলেই হামলা-মামলা দিয়ে যাচ্ছেন। আজ তিনি সরকার মহলের দিকে আঙুল তুলেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তাকে জাতির উদ্দেশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে নইলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত