জাবি শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৫৩

অনলাইন ডেস্ক

আবাসিক হলগুলো পুনরায় খুলে দেয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই সরকারি আদেশের অমান্য করে জোর করে ছাত্রাবাসে প্রবেশকারী শিক্ষার্থীদের আজ সকালের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ জারি করে এ নির্দেশ দিয়েছে।

ওই নোটিশে বলা হয়, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য সরকারি নির্দেশে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও গত বছরের ১৯ মার্চ হতে আজ পর্যন্ত ক্লাস এবং হল বন্ধ রয়েছে (তবে অনলাইন ক্লাস চালু রয়েছে)।

এতে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কোনো কোনো আবাসিক হলে জোরপূর্বক প্রবেশ করে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় জাবি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে নিজ উদ্যোগে হল ত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাধ্য হবে।

এর আগে, রবিবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করাসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো- হলের তালা ভেঙে ভেতরে অবস্থানরত ছাত্রদের বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান, গেরুয়ায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে গেরুয়ার স্থানীয়দের সংঘর্ষের জেরে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট কয়েক দফা দাবি জানিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার, আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন এবং গেরুয়ায় সীমানা প্রাচীরসহ গেট নির্মাণের দাবি মেনে নিলেও রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ থাকায় শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার দাবির সাথে একমত জানায়নি।

এতে হলের তালা ভেঙে ছাত্ররা হলে অবস্থান নিলেও ছাত্রীদের হলে পুনরায় তালা লাগিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে, গেরুয়ায় স্থানীয়রা খাবারের দোকানে খাবার সরবরাহ এবং খাবারের পার্সেল সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে বলে গেরুয়ায় অবস্থান নেয়া কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।

এর আগে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি গ্রামের বাসিন্দাদের আক্রমণে আহত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, একটি ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষ শুরু হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গেরুয়া বাজারে শিক্ষার্থীদের চারটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা। এরপর ওই এলাকাবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং এরপর দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

গত বছরের ১৬ মার্চ, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল। পরে এ বন্ধ বেশ কয়েকবার বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ার পর্যন্ত করা হয়েছে।