বশেমুরবিপ্রবি

ভিসির পদত্যাগ দাবিতে চলছে আমরণ অনশন

অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক শিক্ষার্থী

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:২৩

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে চলছে আমরণ অনশন কর্মসূচী। 

বুধবার রাত থেকে চলা এই আন্দোলনে গতকাল থেকে এই অনশন কর্মসূচী চলছে। এ সময় ভিসির কুশপুত্তলিকা তৈরি করে তা প্রদর্শন করছে শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে চলছে স্লোগান।

এর আগে ১৪ টি বিষয় সংশোধন করে নোটিস প্রকাশ করলেও শিক্ষার্থীরা এটিকে আন্দোলন দমানোর কৌশল হিসেবেই দেখছে। শিক্ষার্থীদের একটাই দাবি, 'ভিসি পদত্যাগ'। 

অনশনে অংশগ্রহণরত এক শিক্ষার্থী জানান, 'জাতির পিতার জন্মভূমিতে তার নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কোনো দুর্নীতিবাজকে উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই না। নিয়োগ দুর্নীতি,ভর্তি দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারি সহ মোট ২০ টি কারণে আমরা তার পদত্যাগ চাই।' উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানান অনশনরত শিক্ষার্থীরা। এদিকে টানা অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে, আন্দোলন থামিয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে বাড়ি চলে যায় সেই জন্য গোপালগঞ্জের বাইরে সকল রুটের বাস সার্ভিস ফ্রি করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাতেও দমানো যায়নি আন্দোলন। এদিকে সকাল থেকে গোপালগঞ্জ পৌর এলাকায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুতের সংযোগ।

জানা যায়, ভিসিপন্থি কিছু শিক্ষক আন্দোলন থামিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করছে শিক্ষার্থীদের। তাছাড়া, ভিসিপন্থি শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে বলেও দাবি করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি ন্যায্য বলে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক সমাজ ১৬টি দাবি উত্থাপন করেছে। দাবিগুলোতে উঠে এসেছে স্বচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া, বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের দাম কমানো, বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে মেধা যাচাই করা ইত্যাদি।

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দাবি, সরকারবিরোধী একটি চক্র ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতেই এই আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি বর্তমান ভিসি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নানা রকমের দূর্নীতির সাথে জড়িত। তাদের দাবি এই ভিসি বিএনপি-জামাত মদদ পুষ্ট। এর আগেও বিএনপি-জামাতের সাথে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণও পাওয়া যায়। এছাড়া, বিগত কয়েক বছরে যাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারাও একই রাজনীতির সাথে জড়িত বলে দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কারের প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলন শুরু করেন। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত