অতিরিক্ত অর্থ তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬:৫৬

সাহস ডেস্ক

করোনাকালীন অর্থ ব্যাবস্থাপনা সংকটে অস্থিতিশীল হয়ে পরেছে মুদ্রাবাজার। মূল্যস্ফীতি ওপর চাপ কমাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে থাকা অতিরিক্ত অর্থ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে অনুযায়ী একদিনে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিল’ নিলামের মাধ্যমে বাজার থেকে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়।

৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি এ বিলের বার্ষিক সুদ দিচ্ছে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশ নিবাসী সব ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বিড দাখিল করতে পারলেও এ নিলামে বেশি অংশ নিয়েছে ব্যাংকগুলোই।

তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম নিলামে ৭ দিন মেয়াদি বিলে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ সুদে ৩ হাজার ৬১৯ কোটি এবং ১৪ দিন মেয়াদি বিলে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ সুদে ৩ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে।

দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আগস্ট মাসে বিলের নিলাম ডেকে ১৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ৭, ১৪ ও ৩০ দিন মেয়াদি বিলে পাঁচ দিনের নিলামে অংশ নিয়ে এ পরিমাণ টাকা রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে গত ১১ আগস্ট একদিনে ৩০ দিন মেয়াদি বিলে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা তোলা হয়। গত আগস্টের আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম হয়।

এর আগে বাজারে অতিরিক্ত তারল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও নিলামের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ১ সেপ্টেম্বর সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর ছাড়াও আগামী ৯ ও ২১ সেপ্টেম্বর ৭ ও ১৪ দিন মেয়াদি বিলের নিলাম হওয়ার কথা রয়েছে। আর ৩০ দিন মেয়াদি বিলের নিলাম অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭, ১৯ ও ২৩ সেপ্টেম্বর।

এর আগে ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন একটি ব্যাংক মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ তথা ২ পয়সা সুদে সাত দিনের জন্য ১৫০ কোটি টাকা রেখেছিল। এরপর থেকে নিলাম বন্ধ ছিল। বাজারে উদ্বৃত্ত তারল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দিয়ে নিলামের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণায় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, অতিরিক্ত তারল্য আর্থিক খাতে অস্থিরতা তৈরি করলে তা তুলে নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। অতিরিক্ত তারল্যের কারণে মূল্যস্ফীতি বা সম্পদের দাম বেড়ে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নীতি গ্রহণে দ্বিধা করবে না।

ঋণ চাহিদা না থাকায় গত জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকখাতে উদ্বৃত্ত তারল্য দাঁড়ায় ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। বিধিবদ্ধ নগদ তারল্য (সিআরআর) সংরক্ষণের পর গত জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে একেবারেই অলস ছিল ৬২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অলস এ টাকা থেকে কোনো সুদ পায়না ব্যাংক। এই অর্থ যেন অনুৎপাদনশীল খাতে গিয়ে মূল্যস্ফীতি ওপর চাপ তৈরি করতে না পারে সেজন্য এভাবে টাকা তোলা হচ্ছে।

সাহস২৪.কম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত