সিপিডি’র তথ্য আন্দাজনির্ভর: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২০, ২২:৩৩

সাহস ডেস্ক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সিপিডি গত ১০ বছরে আমাদের তথ্য-উপাত্ত কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা বাজেট দিলেই তাদের একটা অনুষ্ঠান করার সময় এসে যায়। তাদের তথ্য আন্দাজনির্ভর।’

সোমবার (১৭ আগস্ট) দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সমালোচনা করে চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায় পরিকল্পনা ও বিবিধ সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভাশেষে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, সিপিডি কিসের ভিত্তিতে কথা বলে? আন্দাজের ভিত্তিতে কথা বলে। তারা (সিপিডি) এ দেশের রাস্তাঘাট দেখে না।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হিসাব যারা করেন তাদের দুটি ভিত্তির ওপর নির্ভর করতে হয়। এর একটি হচ্ছে তথ্য, অন্যটি অনুমাননির্ভর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হিসাব করে। সিপিডি যদি আন্দাজনির্ভর জিডিপি নিয়ে কথা বলে তাহলে সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিজেরাই বুঝতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাব বের করার দরকার নেই। এ দেশের খাল-বিল, নদী-নালা, গ্রামীণ অবস্থা—এসব দেখলেই বোঝা যায় বাংলাদেশের কী অবস্থা।’

তিনি বলেন, ‘সিপিডি বলে বেড়ায়। আর আমরা যা বলি, তা প্রমাণ করার চেষ্টা করি। যখন যা বলেছি, সব সঠিক হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১০ বছরই দেখেছি তারা (সিপিডি) আমাদের তথ্য-উপাত্ত কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা বাজেট দিলেই তাদের একটা অনুষ্ঠান করার সময় এসে যায়। সারা বছর কোনো অনুষ্ঠান নেই... কয়টা অনুষ্ঠান করে? কাঁচামাল এখান থেকে নিয়ে বিদেশে এগুলো এক্সপোর্ট করে। এই হলো তাদের ব্যবসা।’

তিনি বলেন, ‘সিডিপির ব্যবসা সহজ। তবে আমি তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলবো না। তারা আছে বলেই আমরা আরও অনুপ্রাণিত হই। আরও বেশি শক্তিশালী হওয়ার জন্য আত্মপ্রত্যয়ী হই এবং আমরা কাজ দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করি। আমরা যখন যা বলেছি তখন তা-ই সঠিক হয়েছে। সুতরাং এরা কী বললো, সেটা দেখে লাভ নেই।’

মুস্তফা কামাল বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে যে পরিমাণ আমরা রাজস্ব আহরণ করেছি গত ২০১৯-২০ অর্থবছরেও তার কাছাকাছি রাজস্ব আহরণ হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুই লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। আর এ করোনাকালেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ হয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। মাত্র পাঁচ হাজার কোটি টাকা কম। সুতরাং এ থেকেই তো বোঝা যায় জিডিপির প্রবৃদ্ধি কেমন হওয়ার কথা।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি যদি আগের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৮ দশমিক ২ শতাংশ বলতাম, তাহলেও তারা বলতে পারতো এটা কীভাবে হলো? আমি তো ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বলিনি। আমি ৫ দশমিক ২ শতাংশ বলেছি। সুতরাং ৫ দশমিক ২ শতাংশের পরে তারা প্রশ্ন করবে... যাইহোক এ বিষয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না।’

বিবিএস তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কাজ করে, আর সিপিডি করে আন্দাজে, কথাটি কি যথার্থ হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যথার্থই। তবে সিপিডি সিপিডির কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি। আমাদের হিসাব যে সঠিক, সারা বিশ্বই তা বিশ্বাস করছে।’

সদ্যসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) যে তথ্য দিয়েছে তার সমালোচনা করে গতকাল রবিবার (১৬ আগস্ট) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ধরনের পরিসংখ্যান দেয়ার কারণে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে এবং জিপিডির প্রবৃদ্ধি এখন একটা রাজনৈতিক সংখ্যায় পরিণত হয়েছে। এজন্য পরিসংখ্যানের সঠিক চিত্র তুলে ধরতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবিও তোলে প্রতিষ্ঠানটি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত