‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষ

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২১, ১৪:৩৩

সাহস ডেস্ক

২০২১ খ্রিস্টাব্দে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। এই একই বছরে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতাকামী, জাতীয় কবি, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সর্বশ্রেষ্ট কাব্য ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনারও শতবর্ষ।  ‘বিদ্রোহী’ বাংলা ভাষায় রচিত সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় কবিতা। এই কবিতার দুকূলপ্লাবি জনপ্রিয়তার তোড়ে কবির নামের সাথেই চিরকালের জন্য লেপ্টে গেছে তাঁর কবিতার নামও। বিশ্বসাহিত্যে এর কোন তুলনা নেই। আর কোনও কবির নামের সাথে কবিতার নাম জুড়ে দেওয়া হয়নি। বৃটিশ ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে অগ্রগণ্য কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুলের যে কবিতাটি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে চরম উন্মাদনা সৃষ্টি করেছিল, শৃঙ্খল ভাঙ্গার মন্ত্র্রে তাঁদেরকে উদ্বেলিত করেছিল, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছিল তার নাম ‘বিদ্রোহী’। এখনো সে কবিতার প্রতিটি চরণ সকলের রক্তে যেন আগুন ধরিয়ে দেয়—

বল বীর
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি আমারি, নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর—
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া,
খোদার আসন ’আরশ’ ছেদিয়া
উঠিয়াফি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাত্রীর !
এম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর—
আমি চির-উন্নত শির!

‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি কখন রচিত হয়েছে সেটা নিয়ে কবি মুজাফফর আহমদ লিখেছেন, ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে কলকাতার ৩/৪সি তালতলা লেনের একটি দোতলা বাড়ির নিচ তলার একটি কক্ষে কবিতাটি রচনা করেন নজরুল। সে রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। মুজাফফর আহমদ সাহেব রাত দশটায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নজরুল তাঁকে কবিতাটি পড়ে শোনান। মুজাফফর সাহেবই এই কবিতার প্রথম শ্রোতা। মুজাফফর সাহেব অনুমান করেন রাত জেগে নজরুল কবিতাটি লিখেছিলেন। লেখাটি ছিল পেনসিল দিয়ে।

‘বিদ্রোহী’ কোথায় প্রকাশিত হয়েছিলো সেটা নিয়ে মতভেদ আছে। নজরুল গবেষক কবি আবদুল কাদির লিখেছেন, ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায় কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। মুজাফফর আহমদ লিখেছেন, এটা ‘বিজলি’ পত্রিকায় প্রথম ছাপা হয়েছে। মুজাফফর সাহেব কবিতাটি শোনার পর একটু বেলা করে সেখানে আসেন ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকার সম্পাদক আফজালুল হক সাহেব। নজরুল তাঁকেও কবিতাটি শোনান। কবিতা শুনে আফজালুল হক সাহেব হৈচৈ শুরু করেন। কবিতার একটি কপি চেয়ে নেন তাঁর পত্রিকায় ছাপার জন্য। নজরুল কবিতাটি কপি করে দেন। এরপরে সেখানে আসেন অবিনাশ চন্দ্র ভট্টাচার্য। নজরুল তাঁকেও কবিতাটি শোনান। তিনিও কবিতার কপি চান। তাঁকে নজরুল জানান এর কপি আফজালুল হককে দেওয়া হয়েছে। তখন অবিনাশ বাবু বলেন, “তুমি পাগল হয়েছ নজরুল, আফজালের পত্রিকা কবে বের হবে তার স্থিরতা নেই। কপি করে দাও, ‘বিজলি’তেই ছেপে দেই আগে।” 

১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি শুক্রবার ‘বিদ্রোহী’ কবিতা ‘বিজলি’তে ছাপা হয়। কবিতাটি এত জনপ্রিয় হয় যে পাঠকের চাহিদার কারণে ‘বিজলি’ সেই সপ্তাহে দুই বার ছাপতে হয়। দুই বারে ‘বিজলি’ ঊনত্রিশ হাজার কপি ছাপা হয়েছিল। পরে কবিতাটি ‘মোসলেম ভারত’ পত্রিকায়ও ছাপা হয়। পাঠক চাহিদার কারণে তা পুনর্মুদ্রিত হয় বসুমতী, সাধনা, সওগাত, ধূমকেতুসহ অনেক পত্র-পত্রিকায়। তবে ১৩২৮ বঙ্গাব্দের মাঘ সংখ্যা প্রবাসীতে বিদ্রোহী কবিতাটি ছাপা হবার পর আরো ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে কবিতাটি। ‘বিদ্রোহী’ দিয়ে নজরুল প্রায় রাতারাতি কবিখ্যাতি পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথের স্বর্ণযুগে। তাঁকে নিয়ে যাঁরাই স্মৃতিকথা লিখেছেন সবার এক রা, নজরুল যেখানে গেছেন সেখানেই মানুষের ভীড় জমে যেতো, লোকজন ঘিরে থাকতো তাঁকে। অন্ত্যপুর পর্যন্ত বিস্তৃত হতো সেই ভীড়। এর অন্যতম প্রধান কারণ, নজরুলের রচনায় তাঁদের বলতে না পারা মনের কথার প্রতিধ্বনি তাঁরা শুনতে পেতেন। সেই ভীড়ে ছিলেন সব বয়সের পাঠক।

নজরুলের বিদ্রোহী প্রকাশের আগে থেকেই নজরুল বাংলা সাহিত্যে নতুন যুগ প্রবর্তনের সূচনা করেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের কোনো এক রাতে এক বৈঠকে নজরুল যখন বাংলা সাহিত্যের বিপুল প্রভাববিস্তারী এই কবিতা লিখলেন নজরুল তখন মাত্র ২২ বছরের যুবক। সেনাবাহিনীর চাকুরি শেষে কলকাতায় ফিরেছেন দুই বছরও হয়নি। ১৯২০ সালের মার্চে কলকাতায় ফেরার পর বিপুল উদ্যমে তারুণ্যের তুমুল আবেগ-উচ্ছ্বাস নিয়ে তখন তিনি সাহিত্য সৃষ্টিতে নিমগ্ন। সমানে লিখে চলেছেন গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো: ‘ব্যথার দান’, ‘রিক্তের বেদন’, ‘রাক্ষসী’ (গল্প); বাঁধনহারা (উপন্যাস); ‘শাত-ইল-আরব’, ‘খেয়াপারের তরণী’, ‘কোরবানী’, ‘মোহররম’, ‘আগমনী’, ‘রণভেরী’, ‘আনোয়ার’, ‘কামাল পাশা’ প্রভৃতি অনন্যসাধারণ কবিতা। সেগুলো নিয়ে সুধিসমাজে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। 

‘বিদ্রোহী’ কবিতা প্রকাশের আগেই নজরুল বাংলা কাব্যে ভাব, ভাষা, ছন্দ, আঙ্গিক ও রূপরীতিতে নতুনত্ব বয়ে আনেন। ভাষা, ছন্দ ও বিষয়বস্তুর স্বাতন্ত্র্যের দরুণ এবং নজরুলের অনন্যসাধারণ প্রকাশক্ষমতার কারণে এসব কবিতা পাঠক ও সমালোচক মহলের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মোসলেম ভারতে ১৩২৭ সালের শ্রাবণ সংখ্যায় প্রকাশিত ʻখেয়া-পারের তরণী’ কবিতা পাঠ করে ʻমোসলেম ভারত’ পত্রিকার সম্পাদককে লেখা পত্রে বাংলা ভাষার বিশিষ্ট কবি ও প্রাজ্ঞ সমালোচক মোহিতলাল মজুমদার লেখেন, “যাহা আমাকে সর্বাপেক্ষা বিস্মিত ও আশান্বিত করিয়াছে তাহা আপনার পত্রিকার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি লেখক হাবিলদার কাজী নজরুল ইসলাম সাহেবের কবিতা। বহুদিন কবিতা পড়িয়া এত আনন্দ পাই নাই। এমন প্রশংসার আবেগ অনুভব করি নাই। বাংলা ভাষা যে এই কবির প্রাণের ভাষা হইতে পারিয়াছে, তাঁহার প্রতিভা যে সুন্দরী ও শক্তিশালিনী এক কথায় সাহিত্য সৃষ্টির প্রেরণা যে তাঁহার মনোগৃহে জন্মলাভ করিয়াছে তাহার নিঃসংশয় প্রমাণ, তাঁহার ভাব, ভাষা ও ছন্দ। আমি এই অবসরে, তাঁহাকে বাংলার সারস্বত মণ্ডপে স্বাগত সম্ভাষণ জানাইতেছি এবং আমার বিশ্বাস প্রকৃত সাহিত্যামোদী বাঙালী পাঠক ও লেখক-সাধারণের পক্ষ হইতেই আমি এই সুখের কর্তব্য সম্পাদনে অগ্রসর হইয়াছি।… ‘খেয়াপারের তরণী’ শীর্ষক কবিতার ছন্দ সর্বত্র মূলতঃ এক হইলেও মাত্রা বিন্যাস ও নতির বৈচিত্র্য প্রত্যেক শ্লোকে ভাবানুযায়ী সুর সৃষ্টি করিয়াছে। ছন্দকে রক্ষা করিয়া তাহার মধ্যে এই যে একটি অবলীলা, স্বাধীন স্ফুর্তি, অবাধ আবেগ, কবি কোথাও তাহাকে হারাইয়া বসেন নাই। ছন্দ যেন ভাবের দাসত্ব করিতেছে, কোনোখানে আপন অধিকারের সীমা লঙ্ঘন করে নাই। এই কবিত্বশক্তিই পাঠককে মুগ্ধ করে। কবিতাটি আবৃত্তি করিলেই বোঝা যায় যে শব্দে ও অর্থগত ভাবের সুর কোনোখানে ছন্দের বাঁধনে ব্যাহত হয় নাই। বিস্ময়, ভয়, ভক্তি, সাহস, অটল বিশ্বাস এবং সর্বোপরি প্রথম হইতে শেষ পর্যন্ত একটা ভীষণ গম্ভীর অতিপ্রাকৃত কল্পনার সুর শব্দবিন্যাস ও ছন্দ ঝংকারে মূর্তি ধরিয়া ফুটিয়া উঠিয়াছে। আমি কেবল একটিমাত্র শ্লোক উদ্ধৃত করিব; ‘আবু বকর উসমান উমর আলী হায়দর/ দাঁড়ি যে এ তরণীর নাই ওরে নাই ডর/ কাণ্ডারী এ তরীর পাকা মাঝিমাল্লা/ দাঁড়ি-মুখে সারি গান লা-শারীক আল্লা।’ এই শ্লোকে মিল, ভাবানুযায়ী শব্দবিন্যাস এবং গম্ভীর ধ্বনি, আকাশে ঘনায়মান মেঘপুঞ্জের প্রলয়-ডম্বরুধ্বনিকে পরাভূত করিয়াছে, বিশেষ করে শেষ ছত্রের শেষ বাক্য ‘লা-শারীক আল্লা’ যেমন মিল তেমনি আশ্চর্য প্রয়োগ। ছন্দের অধীন হইয়া এবং চমৎকার মিলের সৃষ্টি করিয়া এই আরবী বাক্য যোজনা বাংলা কবিতায় কি অভিনব ধ্বনি-গাম্ভীর্য লাভ করিয়াছে!”

মোহিতলাল মজুমদারের উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে, ভাব, ভাষা, ছন্দ, বিষয়বস্তু ও অন্যান্য দিক থেকে কাজী নজরুল ইসলাম ‘বিদ্রোহী’ রচনার আগেই অন্যান্য কবিতার মাধ্যমে রবীন্দ্র পরিমণ্ডলের বাইরে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। এদিক থেকে দেখতে গেলে তিনি বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকের শুরুতেই রবীন্দকাব্যবৃত্তের বাইরে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এটাও উল্লেখযোগ্য যে, নজরুল তাঁর কবিতার ভাষায় এবং বিষয়বস্তুতে হিন্দু-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতানুসারী শব্দ ও প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করেছেন নিজস্ব স্বাতন্ত্র্য অক্ষুন্ন রেখেই।

তবে এ সবকিছুকে ছাড়িয়ে ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় ঘটেছিল তাঁর কবিত্বশক্তির সর্বোত্তম প্রকাশ। বিভিন্ন পুরাণের নির্যাসকে এ কবিতায় যে অসীম দক্ষতায় সৃষ্টিশীলভাবে প্রয়োগ করেছে কবি, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। ʻবিদ্রোহী’ কবিতাটি শুধু ব্যাপক জনপ্রিয়তাই অর্জন করেনি, অনেক কবিকে ‘বিদ্রোহী’র অনুসরণে কিংবা ‘বিদ্রোহী’র বিরুদ্ধে কবিতা লেখায় অনুপ্রাণিতও করেছে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ছন্দও সম্পূর্ণ নতুন। এটি সমিল মুক্তক মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। ছান্দসিকদের মতে, বাংলা ভাষায় নজরুল এ ছন্দের প্রবর্তক। কবিতাটি প্রধানত ছয় মাত্রার মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত; কিন্তু যেহেতু এটি সমিল মুক্তক মাত্রাবৃত্তে রচিত, সে কারণে এতে সর্বত্রই প্রতি পর্বে সমানুপাতিকভাবে ছয় মাত্রা সমভাবে স্থান পায়নি। পূর্ণ ও অপূর্ণ পর্বে এবং অতিপর্বে নানা ভাবে, সাঙ্গীতিক উচ্চারণে মাত্রার ইতরবিশেষ ঘটিয়ে কবিতাটি বিচিত্ররূপে প্রণীত। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ছন্দ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন বাংলা সাহিত্যের দুই প্রখ্যাত ছন্দ-বিজ্ঞানী প্রবোধচন্দ্র সেন ও কবি আবদুল কাদির।

ʻবিদ্রোহী’ কবিতা রচনার প্রেরণা কি তা নিয়েও নানা মত আছে। যুদ্ধফেরত যুবক নজরুলের মনে তখন প্রবলভাবে বহমান উপনিবেশবাদের শোষণ ও সাম্প্রদায়িক বিভেদনাশী এক সুগভীর প্রতিবাদী চেতনা। নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ চেতনার উৎস সম্পর্কে কবি আবদুল কাদির লিখেছেন, নজরুলের পত্রোপন্যাস ‘বাঁধনহার’র মূলে ছিল প্রেমের ব্যর্থতা, সেই ব্যর্থতা শেষে রূপান্তরিত হয়েছিল বিদ্রোহে… এই পত্রোপন্যাসে ‘সাহসিকা’র এক সুদীর্ঘপত্রে যে বিদ্রোহের বর্ণনা আছে তারই পূর্ণপ্রকাশ পরবর্তীকালে তাঁর সুবিখ্যাত ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় দেখা যায়। (কবির জীবন কথা/নজরুল প্রতিভার স্বরূপ)

‘সাহসিকার পত্র’তে আছে ‘নুরুকে স্রষ্টার বিদ্রোহী বলে তোর ভয় হয়েছে, বা দুঃখ হয়েছে দেখে আমি তো আর হেসে বাঁচিনে লো। নুরুটাও স্রষ্টার বিদ্রোহী হল, আর অমনি স্রষ্টার সৃষ্টিটাও তার হাতে এসে পড়লো আর কি… এটা ভুলিসনে যেন রেবা যে, এ ছেলে বাংলাতে জন্ম নিলেও বেদুইনদের দুরন্ত মুক্তি-পাগলামি, আরবীদের মস্ত গোদা, তুর্কীদের রক্ত-তৃষা ভীম স্রোতাবেগের মত ছুটছে এর ধমনিতে ধমনিতে।’ আমরা জানি, নুরু কবির ডাক নাম। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার এক জায়গায় নজরুল লিখেছেন, ‘আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস/ আমি আপনারে ছাড়া করিনা কাহাওে কুর্নিশ।’ বস্তু উপরিউক্ত পত্রোপন্যাসেই এমন বিদ্রোহী চেতনার জন্ম। আবদুল আজীজ আল আমান মনে করেন, নজরুলের বিদ্রোহী চেতনার বিকাশে কুমিল্লায় অবস্থান, সেখানকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্তি এবং নার্গিস ও প্রমীলার সঙ্গে প্রেম-পরিণয়েরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আহমদ রফিক মনে করেন, ʻনজরুল মানসে বিদ্রোহের রূপ নানামুখী পথে প্রবাহিত, তবে তার প্রধান বিস্ফোরক লক্ষ্য ছিল স্বদেশে বিদেশি শাসন ও আধিপত্যবাদের অবসান। তা সে লক্ষ্য যে পথেই অর্জিত হোক না কেন। ’ড. সুশীল কুমার গুপ্ত মনে করেন, মানবতাবোধ ও মানবপ্রেম এবং সামাজিক বৈষম্যও বিদ্রোহের কারণ হতে পারে। ড. আনিসুজ্জামান মনে করেন, ʻসকলকে জাগাতে চেয়েছেন তিনি মঙ্গলের জন্য, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এবং মিথ্যার বিরুদ্ধে প্রাণপন বিদ্রোহ ঘোষণার জন্য।’

 

সাহস২৪.কম/জিজি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত